চিকিৎসকদের দাবির বিষয়ে ৭ দিন সময় চাইলেন বিএসএমএমইউ ভিসি
‘আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলাপ করে বলেছি আর্থিক ভাতার বিষয়টি সরকারের ওপর নির্ভর করে। আগামী সাতদিনের মধ্যে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে অর্থ বরাদ্দ পেলে পোস্টগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হবে।’
মঙ্গলবার (১৩ জুন) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল, স্যার সলিমুল্লাহ ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের জন্য অর্থ বরাদ্দ পেলে তা অধ্যক্ষদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা মানতে নারাজ। তারা এ মুহূর্তে টাকার ব্যবস্থা করতে হবে প্রতিশ্রুতি চাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
আরও পড়ুন: বিএসএমএমইউতে পোস্টগ্র্যাজুয়েট চিকিৎসকদের আন্দোলন
বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় উচ্চশিক্ষা (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট) নিতে শিক্ষার্থী-চিকিৎসকদের টাকা পরিশোধ করে পড়াশোনা করতে হয়। অথচ আমরা শিক্ষাদানের পাশাপাশি তাদের ভাতা পরিশোধ করছি।
তিনি বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার আগে চিকিৎসক-শিক্ষার্থীদের মাসিক ভাতার পরিমাণ ছিল মাত্র ১০ হাজার টাকা। দায়িত্ব নেওয়ার পর সে টাকার অংক বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। অথচ আজ তারা মাসিক ৫০ হাজার টাকা ভাতার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে। আমার কার্যালয় ঘেরাও করেছে।
আরও পড়ুন: বিএসএমএমইউতে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের মুখোমুখি কর্মচারীরা
তিনি বলেন, কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছি আগামী নির্বাচন সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অশান্ত করে তুলতে একটি কুচক্রীমহল ষড়যন্ত্রে নেমেছে। বিএনপি ও জামাতপন্থি চিকিৎসকদের নেতৃত্ব নিতে ইস্যু সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সতর্ক দৃষ্টি রাখছে।
তিনি আরও বলেন, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি সরকারের ওপর নির্ভর করে। সরকার অর্থ বরাদ্দ দিলে তিনি অবশ্যই তা বণ্টন করে দেবেন। কিন্তু আলোচনার জন্য সময় প্রয়োজন বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
এর আগে ৫০ হাজার টাকা ভাতা দাবিসহ তিন দফা দাবিতে সকাল থেকে আন্দোলনে নামেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণার্থী পাঁচ শতাধিক চিকিৎসক। মাসিক ভাতা বৃদ্ধি, বকেয়া ভাতা পরিশোধ এবং ভাতা নিয়মিত করার দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেন তারা।
বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ব্লকের সামনে জড়ো হতে থাকেন চিকিৎসকরা। এরপর সাড়ে ১১টার দিকে বিএসএমএমইউ উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এসময় চিকিৎসকরা ৫০ হাজার টাকা ভাতা দাবিসহ তিন দফা দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তারা বলেন, বর্তমান বাজার মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাসিক ভাতা বৃদ্ধি করতে হবে।
আন্দোলনরত চিকিৎসকরা বলেন, ২০১৯-২০ সেশন থেকে নন-রেসিডেন্স কোর্সের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৯-২০ সেশনের স্টুডেন্টরা সেই ভাতা নিয়মিত পেলেও পরের বছর থেকেই তা অনিয়মিত হয়ে যায়। ২০২২-২৩ সেশনের নন-রেসিডেন্স চিকিৎসকরা ১২ মাসের মধ্যে মাত্র তিন মাসের ভাতা পেয়েছেন, বাকি ৯ মাসই বকেয়া। কোর্সে থাকাকালীন অন্য কোনো চাকরি, ডিউটি, চেম্বার ইত্যাদি করার অনুমতি না থাকায় এই কোর্সের চিকিৎসকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। একেবারেই শূন্য হাতে ধার-কর্য করে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে তাদের।
এমইউ/এমআরএম/বিএ/এমএস