অ্যান্টিবায়োটিকের মোড়ক হবে লাল, যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে হচ্ছে আইন
সহজে শনাক্তের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের মোড়ক হবে লাল রঙের। একই সঙ্গে এ অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে আইন হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহার রোধে করণীয় নিয়ে সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘দেখা গেছে যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে বিশ্বের প্রায় ১৫ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশেও অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহারের কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষের বিশেষ বিশেষ রোগের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর হয় না। তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাদের সুস্থ করতে হলে কঠিন একটা পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যেতে হয়। চিকিৎসার মাধ্যমেও অনেক সময় রোগ ভালো করা যাচ্ছে না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এর সমাধান খুঁজে বের করার জন্য বসেছিলাম। আমরা দেখেছি, কারণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ (যথেচ্ছ ব্যবহার) হচ্ছে, আমরা প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বেচাকেনা করছি। আবার আমরা কোর্স শেষ করি না। যখন দুটি ওষুধ খাই ভালো লাগে, আমরা আর খাই না।’
‘বিশ্বের কোথাও প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হয় না, বিক্রিও হয় না। কিন্তু আমাদের দেশে যে কেউ প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসি থেকে এন্টিবায়োটিক কিনতে পারেন একং সেবন করেন। এটা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের ওপর বিরাট নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আরও একটি বিষয় দেখেছি, অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন না থাকলেও অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হচ্ছে। যেখানে কম ক্ষমতা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে হয়, সেখানে উচ্চ ক্ষমতার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হয়। এটা একটা বড় বিষয়।’
মাছ-মাংসসহ বিভিন্ন খাদ্যে অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘প্রাণীর খাদ্যে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করায় এটা হচ্ছে। আমাদের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স তৈরি হচ্ছে।’
অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে আইনের দুর্বলতা রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটা আইনের অপেক্ষায় আছি। আইনটা নতুনভাবে তৈরি হচ্ছে। এখানে ব্যবহারের বিষয়ে অনেক নিয়ম-কানুন থাকবে।’
‘অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ন্ত্রণের জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিকের ওপর তদারকি বাড়াতে হবে। সেটা আমরা করবো। আমরা ঔষধ প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি। যে ফার্মেসির লাইসেন্স থাকবে না, তারা ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না। লাইসেন্স পেতে হলে বিধিবিধান ও প্রয়োজনীয়তা মানতে হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা এটাও চাইবো কোনো ফার্মেসি যাতে বিনা প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি না করে। জনগণকে সচেতন করার জন্য, চেনার জন্য, বোঝার জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের মোড়কের মধ্যে লাল রং দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।’
আরএমএম/এমএএইচ/এএসএম