ভিডিও EN
  1. Home/
  2. স্বাস্থ্য

বিরল রোগে আক্রান্ত খুলনার আবুল ঢামেক বার্ন ইউনিটে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৮:০৩ এএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চতুর্থ তলায় ডা. সামন্তলাল সেনের কক্ষের সামনে লজ্জায় মাথা নীচু করে বসেছিল খুলনা পাইকগাছার আবুল বাজনদার। ২৫ বছরের এই যুবক অত্যন্ত বিরল প্রজাতির ভাইরাসে আক্রান্ত। তার দুই হাত ও দুই পা সাধারণ যুবকদের মতো নয়। প্রথম দৃষ্টিতে কারো চোখ তার দুই হাত ও পায়ের দিকে পড়লে কোনো গাছ ও গাছের শেকড় ভেবে ভুল করলে অন্যায় হবে না। কারণ তার দুই হাতের তালুসহ দশটি আঙ্গুল অদ্ভুত ধরণের গাছের শিকড়ের মতো বড় বড় মাংসপিণ্ডের শ্বাসমূল।

তার চারপাশ ঘিরে নানান প্রশ্ন করছিলেন একাধিক চিকিৎসক, নার্স ও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মিডিয়াকর্মী। ডা. সামন্তলাল সেন আবুল বাজনদারকে স্বান্তনা দিয়ে বলছিলেন, তুমি মন খারাপ করবে না। ভগবানের ইচ্ছায় তুমি অনেক সুস্থ হয়ে উঠবে।

জাগো নিউজের এ প্রতিবেদককে ডা. সেন বলেন, ‘ইপিডারমোডি ইসপ্লাসিয়া ভেরোসিফারমিস’ নামক এক ধরণের বিরল পৃথিবীর আক্রান্ত। এ ধরনের অসুখ বাংলাদেশে এই প্রথম এবং গোটা বিশ্বে প্রবল। ইতিপূর্বে ২০০৭ ও ২০০৯ সাখে মাত্র দু’জন এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। এদের একজন ইন্দোনেশিয়া ও অপরজন রোমানিয়ান। এ ধরণের রোগীকে ‘গাছ মানব’ বলা হয়।

ডা. সেন জানান, আবুল বাজনদার গত দশ বছর ধরে বিরল এ রোগটিতে ভুগছেন। প্রথমে হাতে একটি ছোট আচিলের মতো গোটা হয়। ধীরে ধীরে গাছের শিকড়ের মতো দুই হাত ও পায়ে ছড়ায়।

Abul-Bazondar
দরিদ্র পরিবারের সন্তান আবুল বাজনদার সাধ্যমতো দেশে ছাড়াও ভারতে চিকিৎসা নিয়েছে। কিন্তু সুস্থ করতে পারেননি।

ডা. সেন আরো জানান, সরকারিভাবে তার মা ও তাকে ঢামেক বার্ন ইউনিটে রেখে সুচিকিৎসার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করবেন।আগামীকাল (রোববার) মেডিকেল বোর্ড গঠন করে কী ধরনের চিকিৎসা দেয়া যায় সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এটি মূলত চর্মজাতীয় রোগ বিধায় প্লাস্টিক সার্জনদের পাশাপাশি চর্ম বিশেষজ্ঞকে মেডিকেল বোর্ডে রাখা হবে। খুলনার গাজি মেডিকেল কলেজের একজন চিকিৎসক আবুল বাজনদার তার কাছে পাঠিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

ডা.সেন বলেন, এ রোগ সম্পর্কে বলতে গেলে কিছুই জানি না। রোগীর চিকিৎসা অনেকটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে প্রথমে সার্জারির মাধ্যমে তার বুড়ো আঙ্গুল ও তার পাশের আঙ্গুলটিকে সক্রিয় করার প্রচেষ্টা চালানো হবে। কাল (রোববার) বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুসারে চিকিৎসা শুরু হবে।

প্রয়োজনে ইন্দোনেশিয়া ও রুমানিয়ায় যে সকল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ওই দুই রোগীর অস্ত্রোপচার করেছিলেন তাদের সাহায্যও চেয়ে যোগাযোগ করা হবে বলেও জানান তিনি।

এমইউ/আরএস