ভিডিও EN
  1. Home/
  2. স্বাস্থ্য

খাদ্য নিরাপত্তা পরীক্ষায় নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান এনএফএসএল

প্রকাশিত: ১২:৪৯ এএম, ২৩ জানুয়ারি ২০১৬

রাজধানীর মহাখালীর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে স্থাপিত বিশ্বমানের ন্যাশনাল ফুড সেইফটি ল্যাবরেটরি (এনএফএসএল) দেশের খাদ্য নিরাপত্তা পরীক্ষায় নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে।

মাত্র বছর তিনেক আগে স্থাপিত এ ল্যাবরেটরিটি ইতিমধ্যেই দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্য ও পানীয়ের প্রায় সকল প্রকার কেমিকেল ও মাইক্রোবায়োলজিক্যাল দূষণ নিখুঁতভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) কারিগরি সহায়তায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও নেদারল্যান্ড সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় ২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর এ ল্যাবরেটরিটি চালু হয়।

এনএফএসএল বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তা পরীক্ষা সংক্রান্ত জাতীয় রেফারেন্স ল্যাবরেটরি হিসেবে কাজ করছে। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিভিন্ন কোম্পানি, ব্যক্তি, গবেষণার জন্য এফএও’র সংগ্রহ ও বাজার থেকে কেনা নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে নিয়মিত পাঠানো হচ্ছে।


জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মো. জাফরল্যাহ জাগো নিউজকে জানান, দ্রুততম সময়ে ল্যাবরেটরির কার্যক্রম দেশে-বিদেশে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সমর্থ হয়েছে।

তিনি জানান, ল্যাবরেটরিটিতে বিভিন্ন ধরনের পেস্টিসাইড, ফরমালডিহাইড, তেলে এসিডিটি (অলিক এসিড হিসেবে), আলফাটক্সিন, জুস ও ড্রিঙ্কসে প্রিজারভেটিভ, সুইটেনার, ক্যাফেইন, বিস্কুট, তেল ও শুকনো মাছে ভিটামিন ‘এ’ ও ভিটামিন ‘ই’ চাল ও মুড়িতে ইউরিয়া, যেকোনো নমুনায় প্রোটিন, আর্সেনিক, লেড, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, আয়রন, কপার, জিংক, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সিলিনিয়াম, ক্যালসিয়াম, মার্কারি, মাছ ও মাংসে ম্যালাকাইট গ্রিন, ক্রিস্টাল ভায়োলেট ও ক্লোরামফেনিকেল, মাছ-মাংস সিপ্রোপ্রক্সাসিলিন, ইনরোপ্রক্সাসিলিন, অক্সিটেট্রাসাইক্লিন, ক্লোরোট্রেট্রাসাইক্লিন, টেট্রাসাইক্লিন, যেকোনো ধরনের নমুনায় কৃক্রিম রং এর উপস্থিতি নির্ণয়ের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

সরেজমিন পরিদর্শন ও ল্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ল্যাবরেটরিতে বর্তমানে হাইপারফরমেন্স লিকুইড ক্রোমাটোগ্রাফি (এইচপিএলসি), হাইপারফরমেন্স থিন লেয়ার ক্রোমাটোগ্রাফি (এইচপিটিএলসি), গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি (জিসি), গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি মাস স্পেকট্রাম (জিসি এমএস), লিকুইড ক্রোমাটোগ্রাফি এমএস এমএস (এইচপিএলসি এমএস এমএস), প্রোটিন অ্যানালাইজার, ইউভি ফটোমিটার, মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোস্কোপ ও খাবারের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।


এনএফএসএলে আলোচিত কিছু নমুনা পরীক্ষার ফলাফল
শুটকি মাছ, বিভিন্ন ধরনের সবজি, ফলমূল ও প্যাকেটের দুধ, জুস, হলুদ ও মরিচের গুঁড়ার ৬৩ প্রকারের পেস্টিসাইডের উপস্থিতি নির্ণয়ে ২২০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তন্মধ্যে ৬৮টি নমুনায় পেস্টিসাইড পাওয়া যায়। শুটকি মাছের প্রায় সব নমুনায় নিষিদ্ধ পেস্টিসাইড পাওয়া গেছে। কাঁচা মরিচ ও হলুদের গুঁড়ায় পেস্টিসাইড পাওয়া যায়।

আম, লিচুসহ বিভিন্ন ধরনের ফলমূল, মাছ, শুটকি, প্যাকেট দুধ, চিংড়ি মাছ, সেমাই, দই ও জুস ও মাছের খাবারের ২৭৯টি নমুনায় ফরমালডিহাইডের উপস্থিতি পরীক্ষায় শুধুমাত্র ১টি কোম্পানি ছাড়া সব কোম্পানির নমুনাতেই কিছু না কিছু ফরমালডিহাইডের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন ধরনের তেল সরিষা, সয়াবিন, বাদাম তেল, ঘি, নারকেল তেল, তিলের তেল, অলিভ অয়েল, রাইস ব্রান্ড, সান ফ্লাওয়ার ও পাম ওয়েলের ৭৮টি নমুনার মধ্যে ৩৮টি নমুনায় তেলের এসিডিটি (অলিক এসিড হিসেবে) স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে (শতকরা ১ দশমিক ২৫ ভাগ) অনেক বেশি পাওয়া যায়।


দুধ, রসমলাই, দই ও ব্রান্ড আইসক্রিমের ২২টি নমুনার ১৫টিতেই মিল্ক ফ্যাট সঠিক পরিমাণে নেই। ৪১টি জুসের প্রিজারভেটিভ পরীক্ষায় ৩টি প্রিজারভেটিব পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের ব্রান্ডের  জুসের ২৯টি নমুনার ১৩টি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ২/৩ গুণ বেশি পরিমাণ ক্যাফেইন পাওয়া যায়।

চাল ও পানিসহ মোট ৫৬টি নমুনার ছয়টিতে আর্সেনিকের মাত্রা বেশি পাওয়া যায়। খাবারের ২৪টি নমুনার ১৮টিতে মাইক্রোবায়োলজিক্যাল ক্ষতিকর জীবাণু পাওয়া যায়। বাজারে বিক্রিত বিভিন্ন ব্রান্ডের ৮টি লবনের সবগুলোতে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি আয়োডিন পাওয়া যায়।

এমইউ/বিএ