মুগদা হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে আসা ৪০ শতাংশেরই করোনা পজিটিভ
দেশে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় জ্বর ও সর্দি-কাশি নিয়ে রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছেন রোগীরা। যার মধ্যে ৪০ শতাংশই করোনা পজিটিভ।
বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) মুগদা হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, এদিন বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মোট ৩৮ জন রোগী বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালটিতে এসেছেন। যাদের মধ্যে ১৪ জন করোনা পজিটিভ। এদের বেশিরভাগকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় পাঠানো হয়েছে। তবে পাঁচজনের শারীরিক দুর্বলতা থাকায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
মুগদা হাসপাতাল সূত্র জানায়, এখানে প্রতিদিন গড়ে ১০০-১২০ জন রোগী আসেন করোনা পরীক্ষা করাতে। এসব রোগীর মধ্যে কিছু আসেন উপসর্গ ছাড়াই। সব মিলিয়ে এদের মধ্যে প্রায় ৪০-৪৫ জনের করোনা পজিটিভ থাকে।
হাসপাতালটির মোট তিনটি স্থানে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। অন্যদিকে দুটি বুথে দেওয়া হচ্ছে টিকা। এসব স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা করা হলেও রোগী কিংবা স্বজনরাই সচেতন হচ্ছেন না। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে যেন উদাসীন। বিশেষ করে শারীরিক দূরত্ব। যদিও হাসপাতালটির দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বার বার এ বিষয়ে সতর্ক করছেন রোগীর স্বজনদের।
স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়ে জামাল হোসেন নামে এক রোগীর সঙ্গে আসা স্বজন বলেন, আমি রোগী নিয়ে এসেছি। সব সময় রোগীর সঙ্গে থাকতে হবে। এখানে কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানবো। মাস্ক পরেছি, এর চেয়ে আর কি করতে পারি।
হাসপাতালটির ইনচার্জ মো. মারুফ হোসেন সিকদার বলেন, আমাদের এখানে সকাল ৮টা থেকে করোনা পরীক্ষা ও টিকাদান শুরু হয়। আজ এখন ৩৮ জন রোগী এসেছেন। যাদের মধ্যে ১৪ জনের করোনা পজিটিভ ছিল। আমরা পাঁচজনকে ভর্তি নিয়ে বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় পাঠিয়েছি।
এদিকে মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, এর আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ১৫৪ জন। শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ১৭ শতাংশ।
এছাড়া এখন পর্যন্ত দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক কোটি ২৫ লাখ ২৩ হাজার ৭৭৫ জনের। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯২৮টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ৪০ লাখ ২৩ হাজার ৮৪৭টি নমুনা। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওই বছরের শেষ দিকে সংক্রমণ কিছুটা কমলেও গত বছরের (২০২১) এপ্রিল থেকে জুন-জুলাই পর্যন্ত করোনার ডেল্টা ধরন ব্যাপক আকার ধারণ করে। বছরের শেষে কয়েক মাস পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল থাকলেও চলতি বছরের শুরু থেকে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টসহ করোনার বিস্তার আবারও বাড়তে শুরু করে।
ইএআর/জেডএইচ/এএসএম