ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর ৮০ শতাংশই সুচিকিৎসা পায় না
বিশ্বে প্রতিবছর দুই লাখ শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে মাত্র ৮০ শতাংশই উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পায় না। গণসচেতনতা, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও আগেভাগে রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে ক্যান্সার শনাক্ত এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া গেলে ৭০ শতাংশ রোগীই সেরে উঠতে পারে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ক্যাম্পাসে ইউকে এইডের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্প ওয়াল্র্ড চাইল্ড ক্যান্সার ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত প্রচারাভিযান অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় এ তথ্য উঠে আসে।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান শিশুক্যান্সার বিষয়ে সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সচেতনতা এবং আগেভাগে রোগনির্ণয় বাঁচাতে পারে বহু শিশুর জীবন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সচেতনার অভাব, দুর্বল ও নিম্নমানের রোগনির্ণয় ব্যবস্থা, চিকিৎসক সংকট এবং শিশু ক্যান্সার নিরাময় জটিল এমন ভুল ধারণার কারণে এ রোগে আক্রান্তদের বেঁচে থাকার হার কম।
তারা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে শিশু ক্যান্সারের চিকিৎসা দরিদ্র দেশগুলোতেও সম্ভব এবং সাধারণ ও স্বল্পমূল্যের ওষুধ এবং চিকিৎসকদের যুগ যুগ ধরে জানা পদ্ধতিতে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুর জীবন বাঁচানো যায়।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢামেক শিশু শল্যচিকিৎসা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক কাজল, শিশু ক্যান্সার বিভাগের প্রধান ডা. একেএম আমিরুল মোরশেদ খসরু এবং ওয়ার্ল্ড চাইল্ড ক্যান্সার, বাংলাদেশের প্রোগাম কো-অর্ডিনেটর রিজওয়ানা হোসেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ লাখ ক্যান্সার রোগী রয়েছে এবং প্রতিবছর ২ লাখ মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে। আগামী কয়েক দশকে ক্যান্সারে বাংলাদেশে মৃত্যু হার বাড়বে।
ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সারের (আইএআরিস) হিসাবমতে, ২০০৫ সাল বাংলাদেশে ক্যান্সারে মৃত্যুহার ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২০৩০ সাল নাগাদ এ হার বেড়ে ১৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।
বক্তারা বলেন, ক্যান্সার মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার জাতীয় ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা ২০০৯-১৫ প্রণয়ন করেছে। এ কর্মপরিকল্পনার উদ্দেশ্য হলো একটি সমন্বিত ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে ক্যান্সার নিরাময় কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
এমইউ/এসএইচএস/পিআর