ঢামেক হাসপাতালে চালু হচ্ছে ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল তাদের নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে রোগীদের কাছ থেকে টাকা পয়সা আদায় বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে খুব শিগগিরই পরীক্ষামূলকভাবে পূবালি ব্যাংকের মাধ্যমে সকল প্রকার আর্থিক লেনদেন শুরু হবে।
জানা গেছে হাসপাতালের বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ মোট পাঁচটি স্থানে -বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ, বেড ভাড়া আদায় কক্ষ, হাসপাতাল-২ ও রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগে এ বুথগুলো স্থাপিত হবে। এ নিয়ে কয়েক মাস আগে ঢামেক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পূবালী ব্যাংকের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আর্থিক অনিয়ম ঠেকাতে এ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে প্রশাসনিক ব্লকের দক্ষিণ পশ্চিম পাশে পূবালি ব্যাংকের দুটি কাউন্টার খোলা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, আর্থিক লেনদেন শুরুর জন্য তাদের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে আলাপ করে তারা শিগগিরই লেনদেন শুরু করবেন।
বর্তমানে সকল প্রকার টাকা পয়সার লেনদেন হাসপাতালের নিজস্ব কর্মকতা-কর্মচারীর মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে তা ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের অন্যতম বৃহৎ ২৬ শয্যার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাসিক আয় প্রায় ২ কোটি টাকা। হাসপাতালে আগত রোগীরা মোট ৩০টি খাতে অর্থ পরিশোধ করছে। খাতগুলো হলো সিটি স্ক্যান, এমআরআই, এক্সরে (বহিঃবিভাগ), এক্সরে (জরুরি বিভাগ), আলট্রাসনোগ্র্রাম, আলট্রাসনোগ্র্রাম (এফএনএসি), কার্ডিওলজি (ইসিজি), এনজিওগ্র্রাম, ইকোগ্রাম, ই.টি.টি, রেডিওথেরাপি বিভাগ, ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি বিভাগ, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগ, হিমোডায়ালাইসিস, এন্ডোসকপি, হেমাটোলজি (ল্যাব), কলোন্সোকপি, চক্ষু বিভাগ, এ.বি.জি (আইসিইউ), শিশু অনকোলজি, কেবিন চার্জ, পেয়িং বেড চার্জ, অপারেশন চার্জ, টিকেট ফি (বহিঃবিভাগ), ভর্তি ফি (বহিঃবিভাগ), টিকেট ফি (জরুরি বিভাগ) ভর্তি ফি (জরুরি বিভাগ), টিকেট ফি (বার্ন ইউনিট), টিকেট ফি (হাসপাতাল-২), অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া ও লিথট্রিপসি অপারেশন ইত্যাদি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এক শ্রেনীর অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে রোগীদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থ নানা অপকৌশলে নয়ছয় করা হচ্ছে। নকল টিকিট ছেপে বিক্রি করে টাকা পয়সা আত্মসাৎ, টাকা পয়সা বিলম্বে জমা দিয়ে শেয়ার ব্যবসায় খাটানোর মতো ঘটনার প্রমাণ পাওয়ায় আর্থিক অনিয়ম ঠেকাতে ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।
ঢামেক হাসপাতালের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, সরকারি অর্থ লেনদেনে অধিকতর স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যেই হাসপাতালের ভিতরেই ব্যাংকের একাধিক বুথ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. নাজিমুননেসা আজ জাগো নিউজকে জানান, প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলকভাবে পূবালি ব্যাংকের একটি বুথ শিগগিরই চালু হবে। এটি চালুর পর সফলতা ব্যর্থতার হিসাব-নিকাশ করে বাকি চারটি চালুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত উদ্বোধনের দিনক্ষণ নির্ধারণ হয়নি বলে তিনি জানান।
এমইউ/এআরএস/আরআইপি