ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও কমছে না আতঙ্ক!
রাজধানীসহ সারা দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে গত চারদিনে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত কমলেও জনমনে আতঙ্ক কাটছে না। মানুষ সাধারণ এখনও জ্বর হলেই ডেঙ্গু আতঙ্কে টেস্ট করতে ছুটছেন বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
সরকারি তথ্য অনুসারে ডেঙ্গু আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা ৪৭ বলা হলেও বেসরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা চার গুণেরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাধারণ জ্বরের কারণে পরিবারের কেউ মারা যাবে বিশেষ করে শিশুদের কেউ আক্রান্ত হলে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ঘরে কিংবা হাসপাতালে যেখানেই থাকুক না কেন রোগীর পাশে নির্ঘুম রাত কাটছে স্বজনদের। শুধু মৃত্যুই নয়, বিশেষ করে চলতি আগস্ট মাসের ২১ দিনে গত ১৮ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ হওয়ায় সাধারণ মানুষের মন থেকে আতঙ্ক কাটছে না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডক্টর মাহমুদুর রহমান বলেন, গত কয়েক দিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর হার বিবেচনায় বলা যায় এর ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আর না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ আরও কমাতে লার্ভা ধ্বংস ও মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত রাজধানীসহ সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ৯৯৫ জন। এর মধ্যে জানুয়ারি ৩৮, ফেব্রুয়ারি ১৮, মার্চ ১৭, এপ্রিল ৫৮, মে ১৯৩, জুন ১ হাজার ৮৮৪, জুলাই ১৬ হাজার ৫২৩ ও চলতি ২১ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩৯ হাজার ৫৩৪ জন। হাসপাতলে ভর্তি রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন ৪৭ রোগী। এর মধ্যে এপ্রিল ২, জুন ৫, জুলাই ২৮ ও চলতি আগস্ট মাসে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ ২০ আগস্ট সকাল ৮টা থেকে ২১ আগস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত রাজধানীর ৪১ সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৭১১ জন ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ৯১৫ জনসহ সর্বমোট ১ হাজার ৬২৬ জন আক্রান্ত হন।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ ১৯ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত রাজধানীতে ৭৫৭ ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ৮৫৮ জনসহ সর্বমোট ১ হাজার ৬১৫ জন আক্রান্ত হন।
বর্তমানে রাজধানীসহ সারা দেশে হাসপাতালে সর্বমোট ৬ হাজার ২৭৮ ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে রাজধানীতে তিন হাজার ৩৬০ ও ঢাকার বাইরের দুই হাজার ৯১৮ রোগী ভর্তি রয়েছেন।
এমইউ/এএইচ/পিআর