ঈদ আনন্দ নেই ডেঙ্গু রোগীদের
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় একটি বেডে শুয়ে আছে জীর্ণশীর্ণ দেহের এক ছোট্ট শিশু। শিয়রে বসে তার মা শিশুটির মুখে বেদানার দানা তুলে দিচ্ছিলেন। শিশুটির কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করতেই বিষন্ন অভিব্যক্তি প্রকাশ করে ওই নারী জানালেন, তারা মা-মেয়ে দু’জনেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। বর্তমানে তিনি কিছুটা সুস্থ হলেও মেয়ের শরীর ভালো না।
রাজধানীর হাজারীবাগের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হারুনুর রশীদের স্ত্রী নুসরাত জাহান মীম এবং সাড়ে ৫ বছরের শিশু কন্যা মারিয়াম আক্তার সোনিয়া ডেঙ্গুতে আক্রান্ত।
ঈদের দিন সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মীম জানান, ১২ দিন আগে তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। পাঁচদিন পর মেয়ে সোনিয়ার ডেঙ্গু ধরা পড়ে।
মীম জানান, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে এবারের ঈদ গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে করার পরিকল্পনা করেন তারা স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু ডেঙ্গুতে সব ভেস্তে গেল।
তিনি আরও জানালেন, ঈদ হাসপাতালে করায় মেয়ের মন খুব খারাপ। ছেলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারে এ আশঙ্কায় চাচার সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
ঈদ হাসপাতালে করায় দুঃখ নেই মীমের। তার প্রচণ্ড জ্বর হওয়ায় ভেবেছিলেন বাঁচবেন না। তিনি সুস্থ হয়েছেন। এখন মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারলেই খুশি মীম।
তাদের পাশের বেডে আরও দুই শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। এদের একজন বার বার বমি করছে। শয্যাপাশে থাকা মা উদ্বিগ্ন হয়ে ওয়ার্ড ডাক্তারের খোঁজে ছুটে যান। কিন্তু নার্সরা জানান, এ মুহূর্তে ডাক্তার নেই। আশপাশের কোনো ওয়ার্ডে আছেন।
ভোলার বাসিন্দা এক বৃদ্ধ জানান, তার ছোট ছেলে ছয়দিন ধরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। প্রতিবছর গ্রামে ঈদ করলেও এবার ডেঙ্গুর কারণে যেতে পারেননি। নিরূপায় হয়ে হাসপাতালেই ঈদ করতে হচ্ছে।
এমইউ/এনডিএস/এমএস