ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে
বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ২০১৮ সালে ১০ সহস্রাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার নতুন রেকর্ড হয়েছিল। চলতি বছরের (২০১৯) পাঁচ মাসেরও বেশি সময় বাকি থাকতেই ডেঙ্গু আক্রান্তে গত বছরের রেকর্ড ভঙ্গ হতে চলছে। চলতি বছরের ২৫ জুলাই (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ২৫৬ জন। তাদের মধ্যে চলতি মাসেই সর্বোচ্চসংখ্যক ৭ হাজার ১১২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, কয়েক দিন ধরে যে হারে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে এ মাস শেষ হওয়ার আগেই গত বছরের আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড ভেঙে যাবে।
এদিকে ৯ হাজারেরও বেশি রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলছেন, দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সিঙ্গাপুর, তাইওয়ানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি হলেও ইতোমধ্যে সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬ হাজার ৯২৬ জন। বর্তমানে রাজধানীসহ সারাদেশের হাসপাতালে ২ হাজার ৩২২ জন ভর্তি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য হালনাগাদ চিকিৎসা গাইডলাইন প্রণয়নের পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাসহ সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশার সংখ্যা কমানোর জন্য বিদেশ থেকে একধরনের মশা আমদানি করার চিন্তা-ভাবনা চলছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ তত্ত্ব নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর,বি) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জাদি সাবরিনা ফ্লোরা বলেন, গণমাধ্যম বা অন্যান্য যে কেউ ডেঙ্গুতে মৃত্যু দাবি করলেও রোগ তত্ত্ব ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে গঠিত কমিটি মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে এমন ঘোষণা দিতে পারেন না।
তিনি বলেন, আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আমাদের কাছে মাত্র আটজনের মৃত্যু খবর রয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৪৭ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মহাপরিচালক ডেঙ্গু পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দাবি করলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সরকারি হিসেবে ডেঙ্গুতে মৃত্যু সংখ্যা আটজন বলা হলেও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে তার তিনগুণ হবে বলে বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে।
এমইউ/আরএস/এমকেএইচ