জরুরি প্রসূতি সেবায় যন্ত্রপাতি দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর
জরুরি প্রসূতি সেবা নিশ্চিত করতে দেশের সকল উপজেলা হাসপাতালে প্রয়োজনীয় আট ধরনের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতরে উপ-পরিচালক প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা (পিএইচসি) ডা. পবিত্র কুমার শিকদার গত ১ আগস্ট এক চিঠিতে দেশের সকল উপজেলা হাসপাতালে জরুরি প্রসূতি সেবার যন্ত্রপাতির চাহিদা রয়েছে কি-না তা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, জরুরি প্রসূতি সেবার জন্য ডায়াথারমি মেশিন, ডেলিভার টেবিল, ওটি টেবিল, পোর্টেবল ওটি লাইট উইথ চার্জার/সেন্টার স্পট লাইট, লেরিংগোস্কোপ, অটোক্লেব (ইলেকট্রিক) টেবিল টপ স্টিম স্টেবিলাইজার, প্রেসার স্টিম স্টেরিলাইজার (ইলেকট্রিক) ও স্টেরিলাইজার ফুয়েল হিটেট ২৪ লিটার ইত্যাদি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জরুরি প্রসূতি সেবায় ব্যবহৃত এসব যন্ত্রপাতি বর্তমানে সেন্ট্রাল মেডিসিন স্টোর ডিপোর্ট (সিএমএসডি)-তে মজুদ রয়েছে। সিএমএসডি থেকে এসব যন্ত্রপাতি দ্রুত সরবরাহ করার তাগিদ দেয়া হলে স্বাস্থ্য অধিদফতর এগুলো উপজেলা হাসপাতালে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মা ও শিশু বিশেষজ্ঞ জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অত্যাবশ্যক এসব যন্ত্রপাতি ক্রয় করাই বড় কথা নয়, এগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত সম্ভব হলেই কেবল জরুরি প্রসূতি সেবা নিশ্চিত করা যাবে।
তারা জানান, উপজেলা হাসপাতালগুলোতে জরুরি প্রসূতি সেবা নিশ্চিত করতে হলে একজন গাইনি বিশেষজ্ঞ ও একজন অ্যানেসথেসিওলজিস্ট থাকা আবশ্যক। দেশের প্রায় ৫শ’ উপজেলা হাসপাতালের অধিকাংশগুলোতে ভালো যন্ত্রপাতিসমৃদ্ধ অস্ত্রোপচার কক্ষ রয়েছে কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোথাও গাইনি থাকলে অ্যানেসথেসিওলজিস্ট থাকে না আবার কোথাও অ্যানেসথেসিওলজিস্ট থাকে না। ফলে অত্যাবশ্যক যন্ত্রপাতি থাকলেও তা ব্যবহৃত হয় না।
হাসপাতালের চাহিদাপত্র ছাড়া কোনো যন্ত্রপাতি কেনা হবে না -এই মর্মে গত বছর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করেছিল। সে হিসেবে অত্যাবশ্যক যন্ত্রপাতি সিএমএসডিতে পড়ে থাকার কথা নয় কিংবা স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ওই সব যন্ত্রপাতির চাহিদা রয়েছে কি-না জানতে চাওয়ারও কথা নয় বলে মন্তব্য করেন তারা।
এদিকে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুরোধে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করেছে। ১৯৯০ সালে প্রতি ১ লাখ জীবিত শিশু জন্ম দিতে গিয়ে ৫৭৪ জন মা মারা যেত। সর্বশেষ জাতিসংঘের জরিপে তা বর্তমানে ১৭০ জনে নেমে এসেছে। একই সময়ে পাঁচ বছরের কম বয়নসি প্রতি ১ হাজার জীবিত শিশু মৃত্যুর হার ১৪৪ থেকে হ্রাস পেয়ে ৪১ নেমে এসেছে। বর্তমানে নবজাতকের মৃত্যু হার প্রতি হাজার জীবিত শিশুতে মাত্র ২৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, নবজাতকের মৃত্যুহার রোধে নিরাপদ প্রসূতি সেবা অপরিহার্য। তাই উপজেলা হাসপাতালগুলোকে অধিকতর উপযোগী করে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলছে।
এমইউ/আরএস/এমএস