ভিডিও EN
  1. Home/
  2. স্বাস্থ্য

লোহার খাঁচায় বন্দি ঢামেকের ডিজিটাল উপস্থিতির মেশিন

প্রকাশিত: ১১:২৬ এএম, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থাপিত ‘ডিজিটাল উপস্থিতি মেশিন’ এখন লোহার খাঁচায় বন্দি হয়ে পড়ে আছে। কয়েক মাস আগে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও বহিঃবিভাগ এবং প্রশাসনিক ব্লকে স্থাপিত মেশিন তিনটি বিকল হয়ে পড়লে চুরির ভয়ে লোহার গ্রিলের খাঁচা বানিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বছর দুয়েক আগে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার অংশ হিসেবে হাসপাতালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কর্মস্থলে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ব্যাপক ঢাক ঢোল পিটিয়ে তিনটি ইলেকট্রনিক উপস্থিতির মেশিন স্থাপিত হয়।

হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের প্রতিদিন হাসপাতালে ডিউটিতে উপস্থিত হয়ে ডিজিটাল ওই মেশিনে বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করার নির্দেশনা জারি হয়। শুরুর দিকে কর্মচারী নেতারা আপত্তি তুললেও তৎকালীন পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান পরীক্ষামূলকভাবে ৩টি মেশিন স্থাপন করেন।

শুরুর দিকে কয়েকমাস ডিজিটাল মেশিনে উপস্থিতি গ্রহণ করা হলেও পরবর্তীতে নানা অজুহাতে কর্মচারীরা মেশিন ব্যবহার করতে অস্বীকৃতি জানায়। হঠাৎ করে মেশিনগুলো বিকল হয়ে পড়ে। মেশিন বিকল হয়েছে নাকি বিকল করা হয়েছে তা নিয়ে নানা কথা শোনা যায়।

রোববার সকালে সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, প্রশাসনিক ব্লকে স্থাপিত মেশিনটির চারপাশে লোহার গ্রিল দিয়ে বন্ধ রয়েছে। ভেতরে মেশিনটির ওপরে ধুলোবালি জমে আছে।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. খাজা আবদুল গফুরের কাছে মেশিন ব্যবহৃত না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বছর দেড়েক ইলেকট্রনিক মেশিনগুলোর মাধ্যমে উপস্থিতি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মচারীরা এ ধরনের মেশিন ব্যবহারে অভ্যস্ত নয় বলে মাস শেষে উপস্থিতি নিশ্চিত করা নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয়েছিল।

তিনি জানান, কর্মচারীরা মনে করতো শুধুমাত্র বুড়ো আঙ্গুল একবার চাপলেই উপস্থিতি নিশ্চিত হবে। কিন্তু বাস্তবে মেশিনে ঠিকমত চাপ না লাগলে উপস্থিতি দেখায় না। এ নিয়ে ঝামেলা হচ্ছিল। তদুপরি কয়েকমাস আগে মেশিনগুলো বিকল হয়ে পড়লে সেগুলোর আপাতত ব্যবহার বন্ধ রাখা হয়। মেশিনগুলো হাসপাতালের নিজস্ব ফান্ড থেকে কেনা হয়েছিল।

তিনি জানান, বিকল মেশিনগুলো মেরামত করে হয়তো আবার ব্যবহার করা যেতো কিন্তু বর্তমান পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান যোগদানে পর বিষয়টি জেনে সার্বিক প্রস্তুুতি নিয়ে তারপর আবার ডিজিটাল উপস্থিতির মেশিন চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন- মেশিনগুলো বিকল হয়নি, কর্মচারীরাই ইচ্ছেকৃতভাবে বিকল করেছে। ওই মেশিন চালু থাকলে কর্মচারীদের মধ্যে যারা দেরিতে বা কাজে না এসেই মাস শেষে বেতন তুলতো তাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছিল।

ঢামেক হাসপাতালে দেড়শতাধিক তৃতীয় ও সহস্রাধিক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের উদ্যোগে বিপুল অর্থ ব্যয়ে রাজধানীসহ সারাদেশের জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে এ ধরনের ডিজিটাল মেশিন স্থাপিত হয়েছিল। সেগুলোর অধিকাংশই এখন ঢামেক হাসপাতালের মেশিনগুলোর মতো বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। সস্তা দামের মেশিন অতিরিক্ত দামে কেনা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

এমইউ/এসএইচএস/আরআইপি