বিএসএমএমইউতে দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি সেমিনার
ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো ধরনের দুর্যোগে ‘হাসপাতালগুলোর জরুরি প্রস্তুতি, মোকাবেলা ও করণীয়’ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকের ডা. মিল্টন হলে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়জিদ খোরশিদ রিয়াজের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার।
সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএসএইড বাংলাদেশের পরিচালক মিস্টার পল ম্যাসন । মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চিফ অফ পার্টি, স্ট্রেনদিং আর্থকোয়েক রেজিলিনসি ইন বাংলাদেশ ও এডিপিসি, থাইল্যান্ডের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মি. ফ্রেডেরিক জন এ্যাবো। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এশিয়ান ডিজাস্টার প্রিপারেডনেস সেন্টারের (এডিপিসি) কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ডা. নুর আহমেদ।
ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, হসপিটাল ডিজাস্টার রেজিলিয়েনসি অ্যান্ড সেফটি শীর্ষক সেমিনারটি ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো দুর্যোগে বিএসএমএমইউ এর জন্য জরুরি প্রস্তুতি, মোকাবেলা ও করণীয় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি রাজধানীতে একটি হাসপাতালসহ বেশকিছু অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া ভূমিকম্পের ঝুঁকিতো আছেই। তাই এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকাটা অত্যন্ত জরুরি।
ডা. কনক কান্তি বলেন, বিএসএমএমইউ এর কর্তব্যরত সকল শিক্ষক, চিকিৎসক, শিক্ষার্থী, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকল স্টাফ, রোগী ও স্বজনদের যাতে এ ধরনের দুর্যোগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবশ্যই থাকতে হবে। এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখে সঠিকভাবে ভবনসমূহ নির্মাণ করা খুবই জরুরি। নির্মিত ভবনগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আমাদের অনেক কিছুই করণীয় আছে। শিক্ষা কারিকুলামেও বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিৎ। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইতোমধ্যে বিএসএমএইউএর পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকমের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে মাহবুবুল হক প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের জুনে স্ট্রেনদিং আর্থকোয়েক রেজিলিনসি ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত এ প্রকল্পের কার্যক্রম চলবে। ইতোমধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রংপুর, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের ২৪টি সরকারি হাসপাতালসমূহে ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো দুর্যোগ মুহূর্তে হাসপাতালগুলোর জরুরি প্রস্তুতি, মোকাবেলা ও করণীয় নিয়ে ৩৫টি প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালিত হয়েছে।
এতে সংশ্লিষ্ট ৮২৪ জন, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্সকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছর কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবানের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালসমূহে আরও কয়েকটি প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করা হবে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কর্মশালা, সেমিনার, সভা ও এমারজেন্সি রেসপন্স প্ল্যানও কার্যক্রমও পরিচালনা করা হবে।
এমইউ/এমএসএইচ/পিআর