খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ
মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা বলেছেন, রাজধানীসহ সারাদেশে মানুষের মধ্যে রীতিমতো উৎসবের আয়োজন করে খেজুরের কাঁচা রস খাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এভাবে কাঁচারস পানের ফলে যে কারো বাদুড়বাহিত মরণব্যাধি নিপাহ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এ রোগে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি হওয়ায় নীরবে মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরের আইইডিসিআরের সম্মেলন কক্ষে আইইডিসিআর আয়োজিত ‘নিপাহ বিস্তাররোধে জনসচেতনতা : গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, ‘নিপাহ রোগে মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি। চলতি বছর নিপাহতে দুজন আক্রান্তের একজন মারা গেছেন। আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত গাছ থেকে কাঁচা খেজুরের রস সংগ্রহ করা হবে। তিনি কাঁচা খেজুরের রস পান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে প্রয়োজনে রস আগুনে ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দেন।
‘সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত রস উৎসব অনুষ্ঠানের উদাহারণ তুলে ধরে আইইডিসিআর’র পরিচালক বলেন, ওই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভিসিকে সাগ্রহে খেজুরের কাঁচা রস পান করতে দেখা গেছে। তার মতো হাইপ্রোফাইল মানুষকে মানুষ যখন রীতিমতো ঘটা করে খেজুরের কাঁচা রস পান করতে দেখেন তখন অনেকেই কাঁচারস পানে উৎসাহিত হন, যার ফলে মৃত্যুঝুঁকি দেখা দিতে পারে।’
গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা বলেন, গত ১৯ বছর যাবত দেশে নিপাহ রোগটি রয়েছে। ‘২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ৩০৫ জন নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। আক্রান্তদের মধ্যে ২১২ জনের মৃত্যু হয়। আক্রান্ত ও মৃতের হিসেবে ২০০১ থেকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত আক্রান্ত যথাক্রমে ১৩, ০, ১২, ৬৭, ১৩, ০, ১৮, ১১, ৪, ১৮, ৪২, ১৮, ২৬, ৩৮, ১৮, ০, ২ ও ৩ জনসহ মোট ৩০৫জন। একই সময়ে আক্রান্তদের মধ্যে মারা যান যথাক্রমে ৯, ০, ৮, ৫০, ১১, ০, ৯, ৯, ০, ১৬, ৩৬, ১৩, ২২, ১৫, ১১, ০, ১ ও ১ জন। শতকরা হিসাবে এ সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৭০ ভাগ।’
সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কমে এসেছে বলে জানান। তিনি বলেন, খেজুরের রস গাছে হাড়িতে থাকার সময় বাদুড় সেখানে খায়, প্রস্রাব করে। গোপন ক্যামেরার মাধমে তারা দেখেছেন, হাড়ির চারপাশ জাল বা অন্য কিছু দিয়ে ঢেলে দিলেও বাদুর প্রস্রাব করেই। তাই খেঁজুরের রস পান কোনোভাবেই নিরাপদ নয়।
এমইউ/এসআর/জেডএ/এমকেএইচ