ডেঙ্গু চিকিৎসায় ‘আস্থার ঠিকানা’ সেন্ট্রাল হাসপাতাল!
ডেঙ্গু রোগীদের সুচিকিৎসা প্রদানে রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতাল ‘আস্থার ঠিকানা’ বলে দাবি করেছেন হাসপালাতটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান।
তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীর সুচিকিৎসায় সেন্ট্রাল হাসপাতাল আস্থার ঠিকানা হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। গত পাঁচ মাসে এ হাসপাতালে শিশুসহ মোট এক হাজার ৪৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। মোট ভর্তি রোগীর মধ্যে ৫শ’ ৪২ জন প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষ এবং ৫০২ জন শিশু।’
ডা. মতিউর রহমান বলেন, একজন রোগীর মৃত্যুও কাম্য না হলেও চিকিৎসকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার পরও চিকিৎসাধীন সহস্রাধিক রোগীর মধ্যে গত পাঁচ মাসে তিনজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর দায় চিকিৎসকদের ওপর চাপিয়ে দেয়া মোটেই কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার (৪ নভেম্বর) দুপুরে হাসপাতালের কনফারেন্স কক্ষে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ হাসপাতালে (সেন্ট্রাল হাসপাতাল) রোগীর সুচিকিৎসা প্রদানে কারও অবহেলার সুযোগ নেই বলেও দাবি করেন হাসপালাতটির চেয়ারম্যান।
অধ্যাপক মতিউর রহমান বলেন, ডেঙ্গু রোগীর সুচিকিৎসায় আস্থা অর্জন করলেও মাঝে মাঝে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর দায় চিকিৎসকের ওপর চাপিয়ে দেয়া, হাসপাতাল ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের শারীরিকভাবে হেনস্থা করার ঘটনায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছ। এমনটা চলতে থাকলে অন্যান্য হাসপাতালের মতো ডেঙ্গু রোগীর ভর্তি করাতে চিকিৎসকরা ভয় পাবে। সেক্ষেত্রে রোগীদের সুচিকিৎসা ব্যাহত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত ২৫ অক্টোবর রাতে এ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আফরিন হক নামের ১১ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়। আফরিনের পরিবারের অভিযোগ চিকিৎসকের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে।
শিশু আফরিনের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সবিস্তারে ব্যাখ্যা ও হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু রোগীর সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের কাছে তুলে ধরেন হাসপাতালের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য চিকিৎসকরা।
হাসপাতালটির ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) ইনচার্জ ডা. এন কে ভৌমিক জানান, গত ২৫ অক্টোবর ধানমন্ডি নিবেদিতা মেডিকেল সেন্টার থেকে আফরিন হক নামের শিশুটি রেফার হয়ে ৫১৬ নম্বর কেবিনে ভর্তি হয়। ভর্তির পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অাইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। রক্তের প্লাটিলেট এখ লাখ ৬৫ হাজার নিয়ে ভর্তি হলেও আশঙ্কাজনকভাবে তা ৩৬ হাজারে নেমে আসে। দ্রুততম সময়ে তার লিভার ও কিডনি অকেজো হয়ে পড়ে। আফরিনকে বাঁচাতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টার পরও অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে শিশুটির মৃত্যু হয়।
পেডিয়েট্রিক ইউনিটের ডা. সুজিত কুমার রায় বলেন, চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের অনেকেরই আকস্মিভাবে রক্তে প্লাটিলেট আশঙ্কাজনকহারে কমে গিয়ে হার্ট, কিডনি ও লিভারসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল (মাল্টিঅর্গান ফেইলিউর) হয়ে রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হওয়ায় অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতাল ডেঙ্গু রোগী ভর্তি করতে চাইছে না। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম সেন্ট্রাল হাসপাতাল। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত বহু মুমূর্ষু রোগীকে সুচিকিৎসা প্রদান করে তারা সুস্থ করে তুলছেন।
এমইউ/এমবিআর/আরআইপি