৫ লাখ গর্ভবতীর জরুরি প্রসূতি সেবায় সরকারি হাসপাতাল মাত্র ১টি
দেশে প্রতি ৫ লাখ গর্ভবতী মহিলার প্রাথমিক জরুরি প্রসূতি স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের সরকারিভাবে মাত্র একটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী কমপক্ষে ৫টি সরকারি হাসপাতাল প্রয়োজন। এছাড়া দেশের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে গর্ভকালিন ও গর্ভোত্তর জরুরি প্রসূতি সেবা এবং নবজাতকের স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণের সুযোগ খুবই সীমিত। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি অংশদারিত্ব (পিপিপি) ও প্রণোদনা প্রকল্প কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মায়ের গর্ভবতী মায়ের জরুরি প্রসূতি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত ও অকাল মাতৃমৃত্যুরোধ করা সম্ভব।
আইসিডিডিআর’বির দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী পরিচালিত জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা পদ্ধতি শীর্ষক এক জরিপ ফলাফলে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ইউকে ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এ জরিপ কার্যক্রম পরিচালনায় অর্থায়ন করে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব গাইনি অ্যান্ড অবস্ট্রেটিকস গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণা ফলাফল অনুসারে- দেশের মোট জেলার মাত্র এক পঞ্চমাংশ জেলায় প্রসূতি সেবার পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তবে বেসরকারি পর্যায়ে সমসংখ্যক জনসংখ্যার জন্য ৬টি হাসপাতালে জরুরিসহ প্রসূতি সেবার সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
গবেষণাকালে দেখা যায়, দেশে সরকারিভাবে ৫৭৭টি, বেসরকারি ১৬৯৬টি ও ১১৪টি অলাভজনক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে প্রসূতি স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে।
দেশের মোট জনসংখ্যার হিসেবে প্রতি ৫ লাখ গর্ভবতী মহিলার মধ্যে ৯ জনেরও কম সংখ্যকের জন্য মাত্র দুটি সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে ও ছাড়কৃত মূল্যে পরিশোধ করে প্রসূতি সেবার নেয়ার সুযোগ রয়েছে। মাত্র ১টি সরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারসহ আধুনিক জরুরি প্রসূতি সেবার সু-ব্যবস্থা রয়েছে।
গর্ভকালিন সময়ে অতিরিক্ত রক্তপাত মাতৃমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ উল্লেখ করে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশিরভাগ স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে প্রাথমিক জরুরি প্রসূতি সেবা প্রদানের সুযোগ সুবিধা নেই। গর্ভকালিন অতিরিক্ত রক্তপাত বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যায় না। ফলে গর্ভবতী মায়েরা সরকারি হাসপাতালে যেতে আগ্রহী হন না। গাটের টাকা খরচ করে বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে সন্তান জম্ম দেন।
তবে গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশ মাতৃমৃত্যুরোধে বিশাল সাফল্যে অর্জন করেছে। ১৯৯০ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত সময়ে শতকরা ৬৬ ভাগ মাতৃমৃত্যুরোধ করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু এখনও দরিদ্র গর্ভবতী মহিলারা প্রয়োজনীয় জরুরি প্রসূতিসেবা পেতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
আরএস/এমএস