শিশুদের জীবনরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর ‘হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন’
বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত হেপাটাইটিস বি ভাইরাস (এইচবিভি) ভ্যাকসিন কর্মসূচির আওতায় সংক্রমণরোধে শিশুদের যে ভ্যাকসিন দেয়া হয় অত্যন্ত কার্যকর। এ ভ্যাকসিন শিশুদের লিভার সংক্রমণসহ অন্য সকল ঝুঁকি প্রতিরোধ করে।
মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর’বি); রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) বাংলাদেশ; সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন, আটলান্টা (সিডিসি), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
আমেরিকান জার্নাল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিনে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন কর্মসূচির আওতায় যে তিন ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে তা জটিল ধরনের হেপাটাইটিস বি ভাইরাস প্রতিরোধ করে। এমনকি কোনো নবজাতককে জন্মের সময় টিকা না দিলেও এ ভ্যাকসিন প্রদানের ফলে পরবর্তীতে শিশুদের সংক্রমণ ঝুঁকি হ্রাস পায়।
ছয় বছরের কম বয়সী শিশুরা হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে লিভার সিরোসিস অথবা লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে। বাংলাদেশে ২০০৩ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন অন্তর্ভুক্ত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শিশুদের ছয় সপ্তাহ, ১০ সপ্তাহ ও ১৪ সপ্তাহে টিকা প্রদানের পরামর্শ দেয়। পরবর্তীতে তারা জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নবজাতককে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন দেয়ার সুপারিশ করে।
আইসিডিডিআর’বির সাবেক গবেষক ও এ গবেষণার প্রধান রিপন পাল বলেন, জন্মের পরপর হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে এমন দুই হাজার শিশুর ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে, তাদের মধ্যে মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ ভাগ নবজাতকের মধ্যে জটিল সংক্রমণ ঘটেছে।
আজ বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসের প্রাক্কালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক হেপাটাইটিস বি নিয়ন্ত্রণে বেঁধে দেয়া টার্গেট শতকরা এক ভাগেরও কম ক্রনিক হেপাটাইটিস সংক্রমণ প্রতিরোধে সমর্থ হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন কর্মসূচির আওতায় শতকরা ৯৪ দশমিক দুই ভাগ শিশুকে টিকা প্রদান করার প্রমাণ পাওয়া যায়।
এমইউ/বিএ/আরআইপি