এত রোগ, এরপরও এত প্রাণবন্ত তিনি!
‘আমি ৩৪ বছরের পুরনো সোরিয়াসিস (চর্মরোগ) রোগী। ৩০ বছর যাবৎ ডায়াবেটিসে ভুগছি। ৩২ বছর যাবৎ প্রেসার। হার্টে একটা স্টেন্ট (রিং) লাগান আছে। ১০ বছর যাবৎ সোরিয়াসিস আর্থাইটিসে ভুগছি।’
এ কথাগুলো শোনার পর পাঠকরা হয়তো মনে করবেন এ রোগীর অবস্থা মুমূর্ষু। হয়তো স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। কোনোভাবে বেঁচে আছেন!
রোববার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে সোরিয়াসিস সচেতনতা ক্লাবের উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে। দেশবরেণ্য সিনিয়র চর্মরোগ বিশেষজ্ঞসহ নবীন-প্রবীণ চিকিৎসকরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছিলেন তার কথা। তিনি আর কেউ নন, দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান।
খ্যাতনামা এ সাংবাদিক শরীরে এত রোগ বহন করেও কীভাবে দেশের শীর্ষ জনপ্রিয় সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন? কীভাবে তিনি এত প্রাণবন্ত তা ভেবে বিস্মিত উপস্থিত সবাই।
মতিউর রহমান ১৯৮২ সাল থেকে সোরিয়াসিসে আক্রান্ত। গত ৩৪ বছর ধরে তিনি এ রোগে ভুগছেন। শুধু সোরিয়াসিস নয়, তিনি ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপেও ভুগছেন।
শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধলেও কীভাবে দৃঢ় মনোবল নিয়ে বেঁচে আছেন, সেই গল্প শুনে উপস্থিত চিকিৎসকরাও বিমোহিত ও বিস্মিত হন।
মতিউর রহমান জানান, ১৯৬১ সালে তিনি ম্যাট্রিক এবং ১৯৬৭ সালে এমএ পাস করেন। ১৯৮২ সাল থেকে সোরিয়াসিসে আক্রান্ত হন। এটা কোনো ছোঁয়াচে কিংবা ভয়ঙ্কর রোগ নয়। এ রোগ সম্পর্কে কখনও তিনি লুকাননি, সাধ্যমতো দেশ-বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসা নিতে গিয়ে সুখ ও দুঃখের নানা অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন।
এ রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে তিনি সোরিয়াসিস সচেতনতা ক্লাবকে সহায়তার আশ্বাস দেন। ক্লাবের পক্ষ থেকে মতিউর রহমানকে আজীবন সদস্যপদ দেয়া হয়।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর রাজনীতি করেছি। ১৯৯১ সাল থেকে সাংবাদিকতার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। ইতোমধ্যেই প্রিন্ট ও অনলাইন মিলিয়ে প্রতিদিন ৬৫ লাখ মানুষ প্রথম আলো পড়েন। দৃঢ় মনোবল নিয়ে প্রথম আলোকে পাঠকের কাছে আরও জনপ্রিয় করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
এমইউ/জেডএ/এমএআর/জেআইএম