ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন আশা
দুই রোগের ওষুধ একসঙ্গে ব্যবহার করে মরণব্যাধী ক্যানসারের চিকিৎসা করা যাবে। তা হলো- ডায়াবিটিসের ওষুধ মেটফর্মিন ও হাইপারটেনশনের ওষুধ সাইরোসিঙ্গোপিন। বিজ্ঞানীরা এমনই দাবি করেছেন। তারা বলছেন- ‘এটা কাজেও আসবে। গবেষণায় দেখা গেছে- ওই দুই ওষুধের যোগফলে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি কমে।’ ফলে ক্যানসার চিকিৎসায় জেগেছে নতুন আশা।
সুইৎজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব বাসেলের এক দল বিজ্ঞানীর এ গবেষণাপত্রটি আন্তর্জাতিক সায়েন্স জার্নাল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। লিউকেমিয়ার রোগীদের রক্তের নমুনার উপরে প্রয়োগের পাশাপাশি গবেষণাগারে লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত ইঁদুরের উপরে ওই কম্বিনেশন ড্রাগ প্রয়োগ করে সুফল মিলেছে বলে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবিটিস প্রতিরোধে মেটফর্মিন প্রথম সারির ওষুধ। ওই ওষুধ দেহে ইনসুলিন-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়। ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকলে স্তন, ইউটেরাইন, কোলো-রেকটাল এবং থাইরয়েড ক্যানসারের প্রবণতা বাড়ে। তাই যারা মেটাফর্মিন খেয়ে ওই প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আটকে দেন, স্বাভাবিকভাবে তাদের ক্যানসারের প্রবণতা কিছুটা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
এন্ডোক্রিনোলজিস্ট সতীনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘মেটফর্মিনের ক্যানসার প্রতিরোধী চরিত্রের কথা ইদানীং সামনে আসছে। এটা জানার পরে ডায়াবিটিক ক্যানসার রোগীদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ বিশেষভাবে চালু রাখা হচ্ছে।’ তবে সাইরোসিঙ্গাপিন-এর ক্যানসার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এখানকার চিকিৎসক মহল তেমন জানতেন না। গবেষণাপত্র প্রকাশের পরে অনেকেই মানছেন সাইরোসিঙ্গাপিন একা তেমন প্রভাব না ফেললেও মেটফর্মিনের সঙ্গে তার ক্যানসার প্রতিরোধী চরিত্রটি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা সম্ভব।
কার্ডিওলজিস্ট শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, এক এক সময়ে এক এক ওষুধ যে কারণে তৈরি হয়, পরে দেখা যায় সেই কারণে ততটা কার্যকরী না হলেও অন্য ক্ষেত্রে তা কার্যকরী হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘গর্ভাবস্থায় বমি আটকানোর ওষুধ পরে ক্যানসারের চিকিৎসায় কাজ দিচ্ছে। অবসাদ কমানোর ওষুধ ধূমপানের প্রবণতা কমাতে কাজ দেয়। এটাও হয়তো অনেকটা তাই।’
জেডএ/আরআইপি