জীবনের ১০০ বসন্ত পার, প্রেমের পর ঘর বাঁধলেন দম্পতি
প্রেমে পড়ার কোনো ধরা বাঁধা বয়স আছে? প্রেম মানে না কোনো বয়স, জাতপাত, ধর্ম, সময়। এমনটাই তো বলেন সাহিত্যিকরা। বাংলা সাহিত্য তো বটেই বিশ্বের বড় বড় সাহিত্যিকরা প্রেমকে সব কিছুর ঊর্ধ্বেই রেখেছেন। প্রেমের যে কোনো বয়স নেই তার আবার প্রমাণ দিলেন ফিলাডেলফিয়ার এক দম্পতি।
সম্প্রতি চার হাত এক হয়েছে তাদের। নতুন জীবনে পা দিয়েছেন একেবারে জীবনের শেষ সময়ে। তবে তাতে ভালোবাসা বা উচ্ছ্বাসের কোনো কমতি নেই। বরের বয়স ১০০ বছর এবং কনের ১০২ বছর। ফিলাডেলফিয়ার এক বৃদ্ধাশ্রমে তাদের চার হাত এক হলো।
বার্নি লিটম্যান ও মার্জোরি ফিটারম্যানই এখন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নবদম্পতি। শতায়ু যুগল ঠাঁই করে নিয়েছেন গিনেস অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও। বার্নি আর মার্জোরি একে অপরের পরিচিত অনেক আগে থেকেই। পেনসিলভেনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে পড়তেন তারা। প্রেম, বিয়ে এসব তখন মাথাতেও আসেনি। পরে বার্নি ইঞ্জিনিয়ার হন। মার্জোরি শিক্ষিকা। তারপর যে যার জীবনে। বিয়ে করেন আলাদা আলাদা। জীবন সঙ্গী, সন্তান এরপর নাতি-নাতনিদের নিয়ে ভালোই এক সুখের জীবন কাটিয়েছেন তারা।
তবে জীবনসঙ্গীরা মারা যাওয়ার পর তারা দুজনই বৃদ্ধাশ্রমে চলে আসেন। ফিলাডেলফিয়ার এক বৃদ্ধাশ্রমে কয়েক যুগ পর আবার দেখা তাদের। কয়েক বছর আগে বৃদ্ধাশ্রমের কস্টিউম পার্টিতে তারা প্রেমে পড়েন। আর যেদিন বার্নির প্রপৌত্রের জন্ম হয়, সেদিন তারা প্রথম ডেটে যান। এরপরের গল্প এখন সবার জানা।
বৃদ্ধাশ্রমেই বার্নির সঙ্গে নতুন করে পরিচয় হয় মার্জোরির। একে ওপরকে নতুন করে আবিষ্কারও করেন তারা। তারপর কস্টিউম পার্টি, ডেটে যাওয়া, প্রেম। এভাবেই ৯ বছর চলার পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তারা। ওই বৃদ্ধাশ্রমেই ৩ মে আংটি বদল হয়। সম্প্রতি বার্নির হাতে মার্জোরির চুমু খাওয়ার ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
জীবন কল্পনার চেয়েও রঙিন। তাকে আর কবে গল্পের সীমানায় বাঁধা গিয়েছে। বার্নি এবং মার্জোরির মিলিত বয়স ২০২ বছর ২৭১ দিন। বার্নির নাতনি সারাহ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে বলেছেন, ‘একসঙ্গে থাকলে ওদের বয়স কমে যায়। একে অন্যের রসবোধও খুব উপভোগ করেন। প্রশংসা করেন বুদ্ধিমত্তার।’ বৃদ্ধাশ্রমেই নতুন দাম্পত্যজীবন শুরু করেছেন তারা।
বার্নি এবং মার্জোরির বিয়ে দিয়েছেন অ্যাডাম ওলবার্গ। তিনিই ছিলেন ‘পুরোহিত’। আনুষ্ঠানিক বিয়ের পর নবদম্পতিকে পরামর্শ দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। তবে বার্নিদের বিয়েতে সে পথে হাঁটেননি অ্যাডাম। শুধু বলেছিলেন, আপনারা অভিজ্ঞ। এরই মধ্যে জীবনের অমূল্য জ্ঞান অর্জন করেছেন। আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গী, অনুভূতি এবং সিদ্ধান্ত যথেষ্ট ম্যাচিউর। আগামীদিনে এভাবেই এগিয়ে চলুন।
সূত্র: গিনেস অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস
কেএসকে/জিকেএস