ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

সমুদ্রের জীবন্ত শিল্পকর্ম পাতাযুক্ত সাগর ড্রাগন

মামুনূর রহমান হৃদয় | প্রকাশিত: ০৩:১৮ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পাতাযুক্ত সাগর ড্রাগন‌ সমুদ্রের একটি বিরল এবং বিস্ময়কর প্রাণী, যা তার নামের মতোই দেখতে পাতালতার মতো। ইংরেজিতে‌ একে ‘লিফি সি ড্রাগন’ বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো ফাইকোডিউরাস ইক্যুয়েস।

অস্ট্রেলিয়ার উপকূলবর্তী অঞ্চলে এদের দেখা যায়। এদের উপস্থিতি সাগরের পানিতে এক ধরনের শিল্পের সৌন্দর্য এনে দেয়। এই প্রাণীর বৈশিষ্ট্য এবং জীবনযাপন প্রকৃতির এক অসাধারণ চমক।

পাতাযুক্ত সাগর ড্রাগনের দেহের গঠনই তাকে অনন্য করে তুলেছে। এর শরীরের সঙ্গে পাতার মতো অঙ্গ রয়েছে, যা মূলত তার ছদ্মবেশের জন্য ব্যবহার হয়। সমুদ্রের শৈবাল এবং উদ্ভিদে মিশে যাওয়ার মতো করে এরা নিজেদের শিকারীদের হাত থেকে রক্ষা করে। এই পাতালতাসদৃশ অংশগুলো শুধু দেখতে পাতা নয়, বরং এগুলো শিকারী প্রাণীদের বিভ্রান্ত করার কাজেও আসে।

পাতাযুক্ত সাগর ড্রাগনের রং সাধারণত সবুজ, হলুদ ও বাদামি মিশ্রিত হয়, যা তার আশেপাশের পরিবেশের সঙ্গে মিলে যায়। এর চোখ খুবই তীক্ষ্ণ এবং ছোট ছোট পাখনার মাধ্যমে সে সমুদ্রের পানিতে ধীরে ধীরে ভেসে চলে।

এই সাগর ড্রাগন খুবই ধীরগতির এবং সাধারণত ছোট প্রাণী, যেমন চিংড়ি বা প্ল্যাঙ্কটন, খেয়ে বেঁচে থাকে। এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, তারা শিকার ধরার সময় প্রায় পুরোপুরি স্থির থাকতে পারে এবং খুব কম সময়ে তাদের ছদ্মবেশের জন্য শিকার ধরার সুযোগ তৈরি করে।

পাতাযুক্ত সাগর ড্রাগন সাধারণত ২০-২৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয় এবং প্রায় ১০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। এদের প্রজননের সময় পুরুষ ড্রাগনই ডিম বহন করে, যা প্রকৃতির আরেকটি চমকপ্রদ দিক। মেয়ে ড্রাগন তার ডিম পুরুষের পুচ্ছ অংশে স্থাপন করে এবং পুরুষ ড্রাগন সেই ডিমগুলো নিয়ে যত্ন করে।

পাতাযুক্ত সাগর ড্রাগন বর্তমানে বিপন্ন প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। সমুদ্র দূষণ, বাসস্থান হারানো এবং সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এই প্রজাতির জন্য হুমকিস্বরূপ। অস্ট্রেলিয়ায় এদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ আইন এবং সংরক্ষণ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।

পাতাযুক্ত সাগর ড্রাগনকে অনেকেই সমুদ্রের জীবন্ত শিল্পকর্ম হিসেবে মনে করেন। এর পাতালতাসদৃশ সৌন্দর্য শুধু শিকার ধরার জন্য নয়, এটি প্রমাণ করে যে প্রকৃতির সৃজনশীলতা কতটা বিস্ময়কর হতে পারে। সমুদ্রের গভীরতা ও রহস্যময় সৌন্দর্যকে জানতে এবং বুঝতে এই ধরনের প্রাণী আমাদেরকে প্রকৃতির প্রতি আরও আকৃষ্ট করে তোলে।

সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

কেএসকে/জিকেএস

আরও পড়ুন