সমুদ্রের প্রাচীন শিকারি ফ্রিল্ড শার্ক
ফ্রিল্ড শার্ক গভীর সমুদ্রের এক বিস্ময়কর এবং বিরল প্রাণী। একে জীবন্ত জীবাশ্মও বলা হয়। ফ্রিল্ড শার্কের বৈজ্ঞানিক নাম ক্ল্যামাইডোসেলাকাস অ্যাঙ্গুইনিয়াস। এই প্রজাতির প্রায় ৮০ মিলিয়ন বছরের প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে এবং এটি আজও তেমন কোনো পরিবর্তন ছাড়াই টিকে আছে। অন্যান্য হাঙরের মতো নয়, এর গঠন এবং আচরণ প্রাচীনকাল থেকেই অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা এটিকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে।
ফ্রিল্ড শার্কের সবচেয়ে অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এর সাপের মতো লম্বা দেহ। এর নামকরণের পেছনেও একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই প্রাগৈতিহাসিক শার্কটির মুখে ছয় জোড়া বিশেষ ধরনের দাঁত থাকে, যা ফ্রিলের মতো দেখায়। দাঁতের এই বিশেষ কনফিগারেশনই ‘ফ্রিলড’ নামের উৎস। এই ফ্রিলগুলো দাঁতের চারপাশে সজ্জিত এবং এটি শার্কটিকে অন্য প্রজাতির থেকে আলাদা করে। ফ্রিলড শার্কের এই বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দাঁত, যা প্রাকৃতিক অলঙ্করণের মতো দেখায়, এটিকে সমুদ্রের এক রহস্যময় প্রাণী হিসেবে তুলে ধরে।
- আরও পড়ুন
- চিঠি দিও লাল ডাকবাক্সে
এর শরীর প্রায় ২ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং এর মুখে ত্রিশূলের মতো ধারালো দাঁত রয়েছে, যা এটি শিকার ধরতে ব্যবহার করে। ফ্রিল্ড শার্ক সাধারণত স্কুইড, ছোট মাছ এবং এমনকি অন্যান্য হাঙর শিকার করে। ফ্রিলড শার্ক সাধারণত দক্ষিণ গোলার্ধের গভীর সমুদ্রের প্রায় ২০০ থেকে ১২০০ মিটার গভীরতায় বাস করে। কোথাও কোথাও গভীরতার পরিমাণ ১৫০০ মিটার পর্যন্ত বলা হয়েছে।
এটি খুব ধীরে ধীরে সাঁতার কাটে এবং তার শিকার ধরার সময় সাপের মতো তির্যক গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এর এই আচরণ এবং শিকার ধরার কৌশল এটির খাদ্য সংগ্রহের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
ফ্রিল্ড শার্কের প্রজনন চক্রও অত্যন্ত বিস্ময়কর। এটি প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে গর্ভধারণ করে, যা অন্য কোনো প্রাণীর তুলনায় দীর্ঘতম। ধীরে ধীরে প্রজনন করার কারণে, ফ্রিল্ড শার্কের সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়ে না এবং এ কারণে এটি পরিবেশগত পরিবর্তন এবং মানবসৃষ্ট সমস্যার কারণে বিপন্ন হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
সূত্র: ব্রিটানিকা , বিবিসি আর্থ
কেএসকে/জিকেএস