ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে সুন্দরবন

মামুনূর রহমান হৃদয় | প্রকাশিত: ১২:৩০ পিএম, ২৮ মে ২০২৪

সুন্দরবন, বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। যা দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশ এবং পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিস্তৃত। এটি শুধু একটি বন নয়, এটি বাংলাদেশের মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পদ। এর প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা, জীববৈচিত্র্য এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব আমাদের জীবনে এক অনন্য প্রভাব ফেলে আসছে।

এই বনটি বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হলেও, এর প্রকৃত গৌরব অর্পিত আছে এর প্রতিরোধ ক্ষমতায়। ম্যানগ্রোভের জটিল শিকড়ের কাঠামো এবং ঘন বৃক্ষরাজি উপকূলীয় অঞ্চলে ঢেউয়ের উচ্চতা কমিয়ে দেয় এবং ঝড়ের গতি ও তীব্রতা হ্রাস করে। ফলে সুন্দরবন একটি প্রাকৃতিক বাধা হিসেবে কাজ করে, যা উপকূলীয় অঞ্চলে ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনে।

২০০৭ সালের সিডর, ২০০৯ সালের আইলা, ২০২০ সালের আম্ফান, ২০২১ সালের ইয়াস এবং ২০২৪ সালের রিমাল এমন অনেক ঘূর্ণিঝড়ের সময় সুন্দরবন তার প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলকে রক্ষা করেছে। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময় সুন্দরবনের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রিমাল যখন বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে, তখন সুন্দরবনের ঘন ম্যানগ্রোভ বন ঝড়ের তীব্রতা কমিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলকে রক্ষা করে।

আরও পড়ুন

সুন্দরবন শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে ঢাল নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জীববৈচিত্র্যপূর্ণ অঞ্চল। এখানে ডোরাকাটা রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ, কুমির, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, পাখি এবং অসংখ্য উদ্ভিদের প্রজাতি বাস করে। এই জীববৈচিত্র্য সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশকে সমৃদ্ধ করে এবং অর্থনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এছাড়াও সুন্দরবন স্থানীয় অর্থনীতির জন্য একটি উৎস। মধু সংগ্রহ, মাছ ধরা,পর্যটন, ওষুধি গাছ সংগ্রহ এবং বনজ সম্পদ স্থানীয় জনগণের জীবিকা নির্বাহের প্রধান মাধ্যম। সুন্দরবনের পর্যটন শিল্প বৈদেশিক অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখে। স্থানীয় জনগণের খাদ্য যোগানদাতাও সুন্দরবন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবনের অবদান আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, এটি শুধু একটি বন নয় বরং আমাদের জীবনের রক্ষাকবচ। তবে সুন্দরবন বর্তমানে মানব ক্রিয়াকলাপ এবং জলবায়ু পরিবর্তনে হুমকির সম্মুখীন। তাই সুন্দরবনের সুফল ভোগ করতে এর সংরক্ষণ ও সুরক্ষার দায়িত্ব আমাদের।

আরও পড়ুন

কেএসকে/জিকেএস

আরও পড়ুন