বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েও বাহার যেভাবে সফল
এসএম বাহার উদ্দিন। জন্ম বেড়ে ওঠা বগুড়ার সোনাতলার হুয়াকুয়া গ্রামে। তিনি ছোট থেকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও নিজের অদম্য মনোবলে হয়েছেন সফল। তিনি একজন সংগ্রামী মানুষ। পড়েছেন বগুড়া জেলা স্কুলসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দেশসেরা বিদ্যাপীঠে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সংগ্রাম করে তিনি বর্তমানে বিসিআইসি কলেজের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।
১৫ অক্টোবর বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবসে তার এই সংগ্রামের গল্প, দৃষ্টিহীন জীবনের গল্প, পড়ালেখার প্রতিবন্ধকতা ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা হয় জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাজেদুর আবেদীন শান্ত —
জাগো নিউজ: আপনার দৃষ্টিহীন শৈশবের গল্প শুনতে চাই
এসএম বাহার উদ্দিন: দেশের একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক সাধারণ পরিবারে আমার জন্ম। আমি বাবা-মার অষ্টম সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করি। তখনকার সামাজিক প্রেক্ষাপটে সচেতনতা ছিল একেবারে একটি দুর্বোধ্য বিষয়। আমার পূর্বের তিন ভাই বোনের মৃত্যু হওয়ায় আমার জন্মের সঙ্গে সঙ্গে বাম কানটি ছিদ্র করে দেওয়া হয়; যাকে আঞ্চলিক ভাষায় ‘মোল্লে’ বলা হয়। আমার বয়স যখন প্রায় দুই বছর ছয় মাস। তখন একবার আমার নানা বাড়ি গাবতলী থানার হাতীবান্ধা গ্রাম থেকে মা বাবার সঙ্গে বাড়িতে আসার সময় গাবতলী রেলস্টেশনে পৌঁছালে ডায়রিয়া শুরু হয়। ভেলুর পাড়া স্টেশনে নেমে আমাদের বাড়ি হুয়াকুয়া পৌঁছাতেই বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ি। ঝাড়ফুঁক পানি পড়াসহ বিভিন্ন চিকিৎসায় ১১ জন ডাক্তার কবিরাজ ব্যর্থ হয় ডায়রিয়া রোধ করতে।
অবশেষে গ্রামের একজন পল্লী চিকিৎসকের প্রায় দশটির অধিক ভুল ইনজেকশন পুশ করায় দুই বছর ছয় মাস বয়সেই দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ি আমি। একজন অবুঝ শিশুর কাছে দৃষ্টিশক্তি থাকা না থাকার অনুভূতি সৃষ্টি হওয়ার পূর্বেই প্রকৃতি যেন, পরিস্থিতি আপন করে দিয়েছিল আমাকে। সহপাঠীদের সঙ্গে ছোটাছুটি, বিভিন্ন গাছে উঠা দলবেঁধে পিকনিক করা এবং পানিতে সাঁতার কাটা ছিল আমার আনন্দের অন্যতম মাধ্যম।
আরও পড়ুন: একজন নারীর প্রথম কম্পিউটার বিজ্ঞানী হয়ে ওঠা
জাগো নিউজ: দৃষ্টিহীনতা পড়াশোনায় কেমন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে?
এসএম বাহার উদ্দিন: বাবা ছোটবেলায় গ্রামের হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। প্রায় বছর খানিক রাতের খাবার মাদ্রাসায় নিয়ে গিয়ে আমাকে খাইয়ে মাদ্রাসা মসজিদে রাত কাটিয়ে দিতেন আমার বাবা। ফজর নামাজ পড়ে বাবা বাড়িতে চলে এলে স্কুল পড়ুয়া দুই বোন আমার খাবার নিয়ে যেত এবং তাদের ছুটির সময় আমাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরত। ভোর চারটা থেকে সকাল নটা পর্যন্ত পড়াশোনা, বেলা দশটা থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত ঘুমানো, সাড়ে বারোটা থেকে দুটো পর্যন্ত আবার পড়াশোনা। দুটো থেকে তিনটা পর্যন্ত খাবারের বিরতি, তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পড়াশোনা। বিকেল পাঁচটা থেকে মাগরিবের আজানের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত কিছু সময়ের বিরতি থাকলে মাগরিব নামাজের পর থেকে রাত দশটা পর্যন্ত পরের দিনের পড়াশোনা রেডি করা ছিল প্রতিদিনের কাজ।
পড়াশোনার জন্য মাদ্রাসার হুজুর এবং সিনিয়র ছাত্রদের কাছ থেকে আরবি হরফ বা আয়াত শুনে শুনে মুখস্ত করতাম। মাদ্রাসার এই কঠিন নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ থেকে যেমন বিনোদনের জন্য কোনো সুযোগ পেতাম না তেমনি আবার মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে যেতে হতো অন্যান্য ছাত্রদের সঙ্গে বিভিন্ন অঞ্চল বা পাড়া গ্রামে। এরপর বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ভর্তি হলাম বগুড়া জেলা স্কুলে।
প্রতিদিন হুয়াকুয়া থেকে চরপাড়া পর্যন্ত মাঝখানে নৌকা যুগে বাঙালি নদী পার হয়ে উভয় পারের প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে গিয়ে বাসে উঠতাম। চেলোপাড়া থেকে নবাববাড়ি রোড হয়ে হেঁটে হেঁটে জেলা স্কুলে পৌঁছাতাম সঙ্গে থাকতো শুধু একটি বেতের সাদাছড়ি। ক্লাস শেষ করে একইভাবে বাড়ি ফিরতাম প্রতিদিন। এতো চড়াই-উতরায় পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও বগুড়া জেলা স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক আমাকে নবম শ্রেণিতে নিবন্ধ করতে দিতে চাননি। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় যদি খারাপ ফলাফল করি সেই আশঙ্কায়। অতঃপর নিজ জেলা ছেড়ে গাইবান্ধাতে গিয়ে গাইবান্ধা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় নবম শ্রেণিতে নিবন্ধিত হয়ে ২০০৭ সালে সফলতার সঙ্গেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। মাধ্যমিকে অনেক দৃষ্টিমানের চেয়েও ভালো ফলাফল করি। ভর্তির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কলেজের পাশাপাশি সৈয়দ আহমেদ কলেজে যাওয়া মাত্রই শুধু দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে অনেকের কাছ থেকে তাচ্ছিল্যের শিকার হই। শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরত্বে গাবতলী সরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ মেলে এবং সেখান থেকে ২০০৯ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়। এরপর ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করি।
জাগো নিউজ: দৃষ্টিহীনতা আপনার জীবনে কী প্রভাব ফেলেছে?
এসএম বাহার উদ্দিন: অনেক প্রভাব ফেলেছে। দৃষ্টিহীনতা আমার জীবনকে প্রভাবিত করে চলছে যেসব বিষয়ে তার একটি বাসস্থান। জন্মস্থান থেকে শুরু করে যেখানেই বাস করি না কেন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চলাফেরায় উঠতে-বসতে প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে আঘাতের শিকার হতে হয়। ঘরবাড়ি, প্রাতিষ্ঠানিক ভবন, বিদ্যালয়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের উপযোগী করে নির্মাণ না হওয়ায় সর্বদায় শারীরিক ও মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছি। এছাড়াও অনেকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছে। দৃষ্টিগত প্রতিবন্ধকতার কারণে যেমন নেতিবাচক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হয়েছি তেমনি পরিবারেও কখনো পায়নি প্রাপ্য মর্যাদা অধিকার।
জাগো নিউজ: চাকরির জন্য অনশন করেছিলেন, এ ব্যাপারে জানতে চাই।
এসএম বাহার উদ্দিন: বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল কারণ ছিল বৈষম্যহীন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। জাতির জনক বলেছিলেন এ দেশকে আমরা রাজনৈতিক-অর্থনৈতিকভাবে গড়ে তুলবো। যে অর্থনীতির ভিত্তিতে দেশের প্রতিটি নাগরিক সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করবে। অথচ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৫ দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আজও এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে প্রতিনিয়ত স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য মোকাবেলা করে চলছি অর্থনৈতিক সংকটে। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আত্মনির্ভরতার লক্ষে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে পোস্ট গ্রেজুয়েশন করেও ঘুরেছি দ্বারে দ্বারে। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস কমিশনের সব নিয়ম অনুসরণ করে সঠিক পদ্ধতিতে আবেদন করেছি, বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি, ফলাফল প্রাপ্তির মতো পরীক্ষা দিয়েছি অথচ অজ্ঞাত কারণে ফলাফল হাতে পায়নি। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি সমাজসেবা অধিদপ্তরের ৭০ নম্বরের পরীক্ষায় ৬৬ প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রদান করেও যেমন ফলাফল পেতে ব্যর্থ হয়েছি তেমনি জীবন বীমা কর্পোরেশনে লিখিত পরীক্ষায় ৯৫ এবং বহুনির্বাচনী পরীক্ষায় ৯৪ এর উত্তর প্রদান করেও ফলাফল পেতে ব্যর্থ হয়েছি। অনেকের দ্বারে দ্বারে এভাবেই ঘুরেছি প্রায় ছয় বছরের অধিক সময়। সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রাপ্তির বয়সসীমা শেষ হয়ে আশায় একান্তই বাধ্য হয়ে প্রথমে ২০২১ সালের ১৬ মার্চ বগুড়ার সাতমাথায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু মঞ্চে আমরণ অনশনে বসি। সেখানে দুইদিন অবস্থান করলেও কোনো পক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ না করতে পারায় অবশেষে ১৮ মার্চ থেকে বগুড়া প্রেসক্লাব চত্বরে অনশন অব্যাহত রাখি। ২০ অক্টোবর বিভিন্ন মিডিয়াতে সংবাদ প্রচারের প্রেক্ষিতে বগুড়ার জেলা প্রশাসক মহোদয় প্রতিনিধি পাঠান যার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে অনশন স্থগিত করি।
আরও পড়ুন: নিভৃতচারী এক পদার্থবিজ্ঞানী আতাউল করিম
বিষয়টি মিডিয়ার মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি নির্দেশ প্রদান করেন বিভিন্ন দপ্তরসমূহে। যার প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ১৩ মার্চ বগুড়া জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকার অনুদান এবং সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক ৩০ হাজার টাকা সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করা হয় আমাকে। সমাজকল্যাণ সচিব সেলিম চৌধুরী স্যারসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান চাকরির অফার করলেও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন বিসিআইসির চেয়ারম্যান মহোদয়ের পক্ষ থেকে ২০২২ সালের ২৯ মার্চ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ৩১ মার্চ প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় উপস্থিত হই। বিসিআইসি তৎকালীন চেয়ারম্যান জনাব শাহ মোহাম্মদ এমদাদুল হক স্যার তিন মাসের মধ্যে স্থায়ী করা হবে প্রতিশ্রুতি সহ তাৎক্ষণিক সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে বিসিআইসি কলেজ মিরপুরে নিয়োগ প্রদান করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও চেয়ারম্যান মহোদয়ের প্রতিশ্রুত সময়ের ১৮ মাস পেরিয়ে গেলেও অদ্যাবধি খন্ডকালীন হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি বিসিআইসি কলেজ মিরপুর ঢাকায়।
জাগো নিউজ: বর্তমানে একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, কোনো অসুবিধা হয়?
এসএম বাহার উদ্দিন: যেহেতু এখনো আমি একজন অস্থায়ী বা খন্ডকালীন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি তাই কোনো সমস্যা থাকলেও তা প্রকাশ করা মানেই আমার ভবিষ্যৎ কর্মজীবন অনিশ্চিতের আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে সর্বক্ষেত্রে সবার চলার পথ মসৃণ থাকে না, অনেক সংগ্রাম করতে হয়। তারপর আমি প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী সব ব্যক্তিকেই আরও বেশি সংগ্রাম করতে হয়। সেক্ষেত্রে আমি নিজেও সংগ্রাম করতে প্রস্তুত যদিও চাকরির স্থায়ীকরণের সময়টি অতি দীর্ঘ হওয়ায় ব্যাপক মানসিক চাপে বিধ্বস্ত হচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে।
জাগো নিউজ: আপনার সফলতায় অনুপ্রেরণা হিসেবে কী ছিল?
এসএম বাহার উদ্দিন: পরিবারের মধ্য থেকে আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে আমার বড় বোন হাসিনা বেগম। মাতৃ স্নেহের সঙ্গে আমার শারীরিক ও মানসিক যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি আমার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সার্বক্ষণিক আলোচনা করতেন এবং চলাফেরার বিভিন্ন পদ বলে দিতেন কীভাবে আমার জীবনকে সাজাবো! আমার সর্বোচ্চ সফলতার পেছনে মূল ভূমিকা হিসেবে যার অনুপ্রেরণা এবং যার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আমার এতদূর আসা তিনি হলেন আমার শিক্ষা মাতা বেগম সেলিনা আক্তার। সাবেক রিসোর্স টিচার সমাজসেবা অধিদপ্তর। বর্তমান আমেরিকান প্রবাসী। বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবসের একটি অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আমি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করলে তিনি এসে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পরিচিত হন। তখন থেকেই সূচনা হয় আমার জীবনের সোনালি অধ্যায়ের। শিক্ষা মাতা বেগম সেলিনা আক্তার আমাকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জেনারেল লাইনের পড়াশোনা সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেন। পাশাপাশি ব্রেইল পদ্ধতি সম্পর্কেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। আমাদের চলাফেরা সংক্রান্ত মুভিলিটি কোর্সের ওপর নিজেই প্রশিক্ষণ দেন এবং বগুড়া জেলা স্কুলে শিক্ষা লাভের সুযোগ প্রদানে মূল সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখেন। আমার স্কুল জীবনের সর্বাত্মক সহযোগিতার পাশাপাশি সর্বশেষ ২০১৮ সালে প্রযুক্তি ক্ষেত্রেও একটি ল্যাপটপ প্রদান করে আমার জীবনের নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন করেন।
জাগো নিউজ: দৃষ্টিহীন ভাই-বোনদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?
এসএম বাহার উদ্দিন: শরীরে প্রতিবন্ধকতা কোনো অভিশাপ বা পাপের ফসল না। এটি নিছক কারও না কারও ভুল পদক্ষেপ, ভুল সিদ্ধান্ত বা ভুল দৃষ্টিভঙ্গির ফলাফল। আর পারিবারিক অসচেতনতা, অসতর্কভাবে চলাফেরা এবং কুসংস্কারের ফলেই মানুষ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধীত্বের শিকার হয়। তাই দৃষ্টিহীন ভাই-বোনদের প্রতি আমার পরামর্শ নিজেকে বোঝা না ভেবে এগিয়ে চলুন, পড়ালেখা করুন। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন সফলতা আসবেই।
কেএসকে/জিকেএস