তিনবেলা বিভিন্ন রকম পোকা খান এই নারী
মাছ ভাত বাঙালির প্রধান তেমনি অনেক দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য তালিকায় থাকে বিভিন্ন ধরনের পোকা। আমাদের বেলায় এটি পুরোই উল্টো। বরং হোটেল-রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে পোকামাকড় পাওয়া গেলে তা নিয়ে অনেক বিপত্তি দেখা দেয়। এ অভিযোগে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধও করে দেয়া হয় রেস্তোরাঁ। কিন্তু বিভিন্ন দেশের রেস্তোরাঁর মেন্যুতে থাকে বিভিন্ন রকম পোকা।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের এক নারী তিনবেলা অর্থাৎ সকাল, দুপুর, রাত শুধু পোকামাকড়ই খান। এটিই তার প্রধান খাদ্য। যখনই খাবার খান পাতে থাকে কোনো না কোনো পোকা। জোয়ানি টেকো নামের ৩০ বছর বয়সী এই নারী ঝিঁঝিঁ পোকা, পিঁপড়া থেকে শুরু করে শুঁয়োপোকা, কাঁকড়া-বিছা সবই খান।
তবে শুধু পোকা ন্য, পোকার বিভিন্ন রকম রেসিপিও তৈরি করেছেন তিনি। জোয়ানির দাবি, তিনি যে যে খাবার খান, সেগুলো অত্যন্ত সুস্বাদু। কখনো ঝিঁঝিঁ পোকা শুকিয়ে গুঁড়া করে সেই গুঁড়া তিনি ছড়িয়ে দেন সালাদের উপর। কখনো আবার বিশেষ ধরনের শুঁয়োপোকা ও কিউয়ি ফল দিয়ে তৈরি করেন তরকারি। বিভিন্ন ধরনের পতঙ্গ একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা ‘টাকো’ এবং বিশেষভাবে তৈরি করা পোকার বিস্কুট খেতেও দারুণ পছন্দ করেন তিনি।
কোন পোকা কেমন খেতে, তাও বিস্তারে জানিয়েছেন পোকাপ্রেমী জোয়ানি। ‘মিলওয়ার্ম’ নামের এক ধরনের পোকা খেতে একেবারে মাংসের মতো। পিঁপড়ার স্বাদ নোনতা। ঝিঁঝিঁ পোকা খেতে বাদামের মতো। বাগ, পিঁপড়া ভাজলে খেতে একেবারে ভাজা মুরগির মতোই এবং গন্ধটা পপকর্নের মতো। এমনটাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন জোয়ানি।
তার সবচেয়ে প্রিয় পোকা হলো ‘বাম্বু ওয়ার্ম’। এই পোকা একবার হাতের কাছে পেলে চিপসের মতো করে খান। তবে জোয়ানি আরও জানান, সব পোকা খেতে সুস্বাদু নয়। যেমন- কাঁকড়াবিছে, চকলেটে মাখিয়ে খেলেও বিশেষ কোনো স্বাদ পাওয়া যায় না।
জোয়ানির বাবা ২০১৭ সালে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ঘুরতে গিয়ে কিছু পোকামাকড়ের তৈরি খাবার নিয়ে আসেন বাড়িতে। তখনই প্রথম বার পোকা খাওয়া শুরু করেন তিনি। এরপর মাঝে মধ্যে খেলেও এখন এগুলো ছাড়া কোনো খাবারই খেতে পারেন না। পোকামাকড়ের ব্যাপারে অদ্ভুত মোহ রয়েছে তার। বিজ্ঞানের ভাষায় কীটপতঙ্গ খাওয়ার ইচ্ছাকে বলে ‘এন্টোমোফ্যাগি’।
জোয়ানি নিজেও ছিলেন প্রাণিবিজ্ঞানের ছাত্রী। তার দাবি, এই খাদ্যাভাস কেবল সুস্বাদু নয় পুষ্টিকর এবং পরিবেশবান্ধব। আরও বেশি মানুষ যাতে পোকামাকড় থেকে তৈরি খাবার খাওয়ার সুযোগ পান, তাই নিজের একটি খাদ্যপ্রস্তুতকারক সংস্থাও তৈরি করেছেন জোয়ানি। পোকা থেকে তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করে তার সংস্থা। এমনকি নিজের বাড়িতে পোকার খামারও গড়ে তুলেছেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন ধরনের পোকার চাষ করেন।
সূত্র: মেট্রো কো ইউকে
কেএসকে/জিকেএস