মহাশূণ্যেও যার দেহভষ্ম
২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মেইন অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা হ্যালি টুমে সোশাল মিডিয়ার কাছে এক অদ্ভূত আবেদন জানিয়েছিলেন। সোশাল মিডিয়ায় তিনি বলেছিলেন, তার ছেলে সিজে টুমের দেহভষ্ম তিনি ছড়িয়ে দিতে চান ১০০টি দেশে এবং এই ব্যাপারে তিনি সাহায্য চান।
অদ্ভূত আবেদনের মাত্র এক বছর পার হয়েছে। এরি মধ্যে সিজের দেহভষ্ম ১০০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এমনকি নিয়ে যাওয়া হয়েছে মহাশূণ্যেও।
আর এই কাজে ফেসবুকে একটি পেজ খোলা হয়েছে। এতে সিজের নানা ধরনের ছবি রয়েছে। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক তরুণ ক্যামেরার দিকে তাকিলে হাসছে। তান সানগ্লাসটি মাথায় তোলা। মার্কিন বেসবল টিম বস্টন রেড সক্সের টিশার্ট পড়া।
২০ বছরের এই তরুণ ২০১০ সালের ১৪ই এপ্রিল আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর পর তার দেহভষ্ম এতদিন বাড়িতেই রাখা ছিল। একদিন সিজে`র মা হ্যালি টুমে যে পাত্রে ঐ ভষ্ম ছিল তার দিকে তাকিয়ে ভাবলেন, বেঁচে থাকতে তার ছেলে কোনদিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে যায়নি। কিন্তু মৃত্যুর পর কী সেটা করা যায় না?
বিষয়টা নিয়ে তিনি কথা বললেন তার স্বামী জনের সাথে। তারপর দু`জনে মিলে খুললেন ফেসবুকের পাতা `স্ক্যাটারিংসিজে`। সেখানে তারা অনুরোধ করলেন সিজের দেহভষ্মের সামান্য একটু নিয়ে যেন বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়।
টুমে দম্পতির আকুল আবেদনের প্রতি প্রথম দিকে সাড়া পড়েছিল কমই। কিন্তু আস্তে আস্তে তা বাড়তে থাকে। এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন দেশের ৯০০০ ব্যক্তি তাদরে সঙ্গে যোগাযোগ করলেন।
কেউ যোগাযোগ করলে হ্যালি টুমে পাত্র থেকে সিজে`র দেহভষ্মের সামান্য একটু একটি পুরিয়ায় ভরেন। এরপর সেই পুরিয়ার সাথে একটি চিঠি এবং সিজে`র একটি ফটো দিয়ে ডাকযোগে পাঠিয়ে দেন নির্দিষ্ট ঠিকানায়।
যারা এই কাজ করেন, তাদের প্রতি অনুরোধ থাকে তারা যেন দেহভষ্ম ছড়িয়ে দেয়ার সময় একটি ছবি তোলেন এবং কোথায় সেই ভষ্ম ছড়ানো হয়েছে সেই জায়গা সম্পর্কে কিছু তথ্য লিখে পাঠান। এইভাবে `স্ক্যাটারিংসিজে` ফেসবুকের পাতা এখন ভরে উঠেছে নানা দেশের ছবি আর নানা দেশ থেকে লেখা চিঠিতে। -বিবিসি