দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তরুণীর কুরআন অনুবাদ
অনন্য গৌরবের অধিকারী নাফিস তারিন। ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষিকা। ব্রেইল পদ্ধতিতে হিন্দি ভাষায় পবিত্র কুরআনুল কারিম অনুবাদ করেন তিনি। তার এ অদম্য প্রতিভা পৃথিবীর সকল দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর জন্য অনন্য নজির স্থাপন করেছে। যার কিছু দিক তুলে ধরা হলো-
নাফিস তারিন যখন ডিগ্রিতে পড়াশুনা করেন তখন পবিত্র কুরআন পড়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেন। তিনি অন্ধ হওয়ায় কেউ তাকে কুরআন শিক্ষা দিতে আগ্রহ দেখায়নি।
পরবর্তীতে মোহাম্মদ তসলিম নামের একজন হাফেজে কুরআন তাঁকে কুরআন শিক্ষা দিতে সম্মত হয়। কুরআন শিক্ষা গ্রহণের সময় থেকে অন্যান্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের কথা চিন্তা করে ব্রেইল পদ্ধতিতে কুরআনের অনুবাদ লেখার ইচ্ছা পোষণ করেন।
২০০৫ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিন বছরে তিনি ব্রেইল পদ্ধতির এ অনুবাদের কাজ শেষ করেন। পরবর্তীতে ব্রেইল পদ্ধতিতে লিখিত অনুবাদটির ত্রুটি-বিচ্যূতিগুলো সংশোধনে অনেক সময় ব্যয় হয়।
নাফিস তারিন বলেন, কুরআন শিক্ষার বিষয়ে তার বাবাকেও নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল এ বলে যে, একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নারী কিভাবে কুরআন শিখবে? বিবিসি হিন্দি নিউজের বরাত দিয়ে সংবাদটি প্রকাশ করেছে দুনিয়া নিউজ।
নাফিস তারিন আশা প্রকাশ করেন যে, ব্রেইল পদ্ধতিতে হিন্দি ভাষায় কুরআনের অনুবাদ প্রকাশ করতে কিছু মুসলিম ট্রাস্ট এবং সংগঠন তার সাহায্যে এগিয়ে আশার আশ্বাস দিয়েছেন।
বোকারোর মুফতিগণ তার এ কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এবং বোকারোর গাউসনগর মসজিদের ইমাম বলেন যে, আমরা এক বছর ধরে সুরা ফাতিহা থেকে শুরু করে সুরা নাস পর্যন্ত ব্রেইল পদ্ধতিতে অনুদিত হিন্দি ভাষায় শুনে নিশ্চিত হয়েছি যে, সম্পূর্ণ অনুবাদ ত্রুটিমুক্ত।
ব্রেইল একটি লিখন পদ্ধতি। যা অন্ধ শিক্ষক লুইস ব্রেইল (১৮০৯-১৮৫২) অন্ধ ব্যক্তিদের জন্য এ পদ্ধতির আবিষ্কার করেন।
সম্প্রতি পবিত্র কুরআন এবং ধর্মীয় বই-পুস্তক ব্রেইল পদ্ধতিতে প্রকাশিত হয়েছে। যাতে উপকৃত হয়েছে মুসলিম দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা।
পরিশেষে...
আল্লাহ তাআলা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নাফিস তারিনকে কুরআনের খেদমতের জন্য কবুল করুন। উপযুক্ত প্রতিদান তাদের জন্য, যারা বা যে সংস্থা এ কাজে নাফিস তারিনকে সহযোগিতা করেছে। এবং আল্লাহ তাআলা এ মহতি কাজের প্রচার-প্রসারসহ সকল প্রকার কল্যাণের কাজে অংশ গ্রহণ করার জন্য উম্মাতে মুহাম্মাদিকে তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এবিএস