ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

সিনেমায়ও সফল গাজী মাজহারুল আনোয়ার

ফিচার ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৩:১০ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

অসংখ্য গানের গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক কিংবদন্তি গাজী মাজহারুল আনোয়ার। এ পর্যন্ত তিনি লিখেছেন ৩০ হাজারেরও বেশি গান। প্রযোজনা করেছেন ৪৩টিরও বেশি চলচ্চিত্র।

তার লেখা বিভিন্ন গান মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, প্রকৃতি, জীবনবোধ, প্রেম, বিরহ, স্নেহ অনুভূতির বৈচিত্র্যময় প্রকাশ ঘটায়। বিবিসি বাংলার জরিপকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় আছে তার লেখা তিনটি গান।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

‘টিট ফর ট্যাট (১৯৯২), অজান্তে (১৯৯৬), চুড়িওয়ালা (২০০১), লাল দরিয়া (২০০২), কখোনো মেঘ কখোনো বৃষ্টি (২০০৩) ও মেয়েটি এখন কোথায় যাবে (২০১৬) এই ৬টি চলচ্চিত্রের গানের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে ‘বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ অর্জন করেন।

‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের’ তিনি একজন নিয়মিত গীতিকার ছিলেন। ২০০২ সালে গাজী মাজহারুল আনোয়ার একুশে পদক অর্জন করেন। এমনকি ২০২১ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক স্বাধীনতা পুরষ্কারও লাভ করেন গুণী এ ব্যক্তি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন দেশবরেণ্য গুণী এই গীতিকার। জানা যায়, বনেদি পরিবারের সন্তান ছিলেন তিনি। বেড়ে ওঠেন কুমিল্লাতেই। শিক্ষাজীবন শুরু করেন কুমিল্লা জেলা স্কুলে। এরপর পড়েন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। তিনি ছিলেন বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র।

ছোটবেলা থেকেই ভীষণ মেধাবী ছিলেন তিনি। তার বাবার ইচ্ছে ছিল তিনি ডাক্তার হবেন। বাবার আশা পূরণ করতে কলেজ শেষ করে তিনি ভর্তিও হলেন ঢাকা মেডিকেলে। তবে ডাক্তার হয়ে ওঠা আর হয়নি তার। মেডিকেল কলেজ ছেড়ে তখন থেকেই শুরু করেন গান লেখা। এতে বাবা তার প্রতি অসন্তুষ্টও ছিলেন বটে!

বিজ্ঞাপন

তখন ১৯৬২-৬৩ সাল, গাজী মাজহারুল আনোয়ার লিখেছিলেন তার প্রথম গান ‘বুঝেছি মনের বনে রং লেগেছে।’ গানটির সুর করেছিলেন নাজমূল হুদা বাচ্চু ও শিল্পী ছিলেন ফরিদা ইয়াসমিন। ১৯৬৪ সালে রেডিও পাকিস্তানে গান লিখে ৫০ টাকা আয়ের মাধ্যমে পেশাদার গীতিকার হিসেবে জীবন শুরু করেন তিনি।

১৯৬৫ সালে চলচ্চিত্রে যুক্ত হওয়ার পর গাজী মাজহারুল আনোয়ার চিত্রনাট্য, গান, সংলাপ ও কাহিনি রচনা শুরু করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই তার অবদান ছড়িয়ে আছে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি অঙ্গনে।

সুভাষ দত্তের ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ চলচ্চিত্রে ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’ গান দিয়ে চলচ্চিত্রের গান লেখা শুরু করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ সিনেমায় আঞ্জুমান আরা বেগমের গাওয়া সেই গানের আবেদন আজও ফুরায়নি।

বিজ্ঞাপন

তিনি একজন সফল কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালকও বটে। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দেশ চিত্রকথা থেকে শাস্তি, স্বাধীন, শর্ত, সমর, শ্রদ্ধা, ক্ষুধা, স্নেহ, তপস্যা, উল্কা, আম্মা, পরাধীন, আর্তনাদ, পাষাণের প্রেম, এই যে দুনিয়া প্রমুখ চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন।

১৯৮২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গাজী মাজহারুল আনোয়ার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নান্টু ঘটক’ মুক্তি পায়। এতে অভিনয় করেন- ওয়াসিম, আলমগীর, সুচরিতা, অঞ্জনা, বাবর প্রমুখ। এই চলচ্চিত্রে তার লেখা ও সুর করা গানগুলো বেশ জনপ্রিয়তা পায়।

সৈয়দ আব্দুল হাদীর কণ্ঠে ‘জন্ম মৃত্যু আর বিয়া/ এই ৩টি সত্য নিয়া’, এন্ড্রু কিশোরের কণ্ঠে ‘আমার নাম কালু মিয়া/ বাড়ি আমার করটিয়া’ ও এন্ড্রু কিশোর ও শাম্মী আখতারের কণ্ঠে ‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ায় উইড়া উইড়া’ গানগুলো ছিলো দর্শক-শ্রোতাদের মুখে মুখে।

বিজ্ঞাপন

১৯৯০ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের একটি গল্প অবলম্বনে ‘স্বাধীন’ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ার পরিচালিত ব্যবসাসফল এক চলচ্চিত্র ‘এই যে দুনিয়া’। এটি মুক্তি পায় ২০০৭ সালের ৬ নভেম্বর। এতে জনপ্রিয় সব কলাকুশলীরা অভিনয় করেন।

তাদের মধ্যে ছিলেন- রাজ্জাক, মান্না, মৌসুমী, শাবনূর, শাহরিয়ার নাজিম জয় প্রমুখ। এই চলচ্চিত্রের কাহিনি, চিত্রনাট্য, সংলাপ, সংগীত পরিচালনা, সুর ও গান সবই পরিচালনা করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার।

তার পরিচালিত শেষ চলচ্চিত্র ‘হৃদয় ভাঙা ঢেউ’। এতে অভিনয় করেন অনন্ত জলিল ও বর্ষা। অ্যাকশনধর্মী এই চলচ্চিত্রে আরও অভিনয় করেন রাজ্জাক, আলমগীর, দিতি, ইলিয়াস কোবরাসহ অনেকে।

বিজ্ঞাপন

গাজী মাজহারুল আনোয়ার প্রযোজিত মোট চলচ্চিত্রের সংখ্যা ৪৩টি। তার প্রযোজিত প্রথম ছবি ‘সমাধি’। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ‘দেশ চিত্রকথা’।

চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সভাপতি, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ডের সদস্য, সেন্সরবোর্ড সদস্য হিসেবেও তিনি একাধারে দায়িত্ব পালন করেছেন।

একাধিকবার বাচসাস পুরস্কার, বিজেএমই অ্যাওয়ার্ড, ডেইলি স্টার লাইফ টাইম অ্যাওয়ার্ডসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তার অর্জিত পুরস্কারের সংখ্যা ১১০টি।

বিজ্ঞাপন

কিংবদন্তি গীতিকার, সুরকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণাগ্রাহী রেখে গেছেন।

জেএমএস/এসইউ/জিকেএস

টাইমলাইন

  1. ১২:১৯ পিএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ শহীদ মিনারে মাজহারুল আনোয়ারকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল
  2. ০৪:৪৯ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ‘কাকা আর ফোন করে বলবে না মনির চলে আসো’
  3. ০৪:৪৫ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ‘আমাকে সুচরিতা তৈরি করেছেন গাজী ভাই’
  4. ০৩:৪৬ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোক
  5. ০৩:১০ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ সিনেমায়ও সফল গাজী মাজহারুল আনোয়ার
  6. ০২:৩২ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ গাজী মাজহারুল আনোয়ারের বিখ্যাত যত গান
  7. ০১:৫৯ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ বনানীতে মায়ের কবরে সমাহিত হবেন গাজী মাজহারুল
  8. ০১:৩৪ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ গাজী মাজহারুলের মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ছুটে গেলেন শাকিব খান
  9. ০১:২৮ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ যুক্তরাষ্ট্র থেকে মেয়ে দিঠি ফিরলে গাজী মাজহারুলের দাফন
  10. ১১:৫৪ এএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ গাজী ভাই বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল: অঞ্জনা
  11. ০৮:৫৪ এএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ গীতিকার-পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন