স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে ২৫ বার ভর্তি পরীক্ষা
বয়স ৫৫ বছর। সকাল সন্ধ্যা বইয়ে মুখ গুঁজে আছেন। সামনেই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। এতটুকু পড়ার পর নিশ্চয়ই কিছু মিলাতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা তা-ও ৫৫ বছর বয়সে! হ্যাঁ, স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে ২৫ বার ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন চীনের এক ব্যক্তি।
লিয়াং শি দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সিচুয়ান প্রদেশের রাজধানী চেংদুতে বাস করেন। পেশায় একজন ব্যবসায়ী। একটি সফল নির্মাণ সামগ্রী কোম্পানির মালিক তিনি। কোনো কিছুর অভাব নেই জীবনে। তবে একটি শখ অপূর্ণ থেকে গেছে এখনো। হাল ছেড়ে দেননি। এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
লিয়াংয়ের ইচ্ছা ছিল চীনের সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। কিন্তু ২৫ বার পরীক্ষা দিয়েও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। ২৬ বারের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। কঠোর পরিশ্রম করতে হচ্ছে তাকে। এবার আশা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন তিনি। তবে না হলেও সমস্যা নেই, আবারও চেষ্টা করবেন।
লিয়াং শি ১৯৮৩ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তবে এমন নয় যে লিয়াং অকৃতকার্য হয়েছেন সব সময়। তিনি অনেক ভালো নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন বেশিরভাগ সময়ই। তার সর্বকালের সেরা স্কোর ছিল ৭৫০ এর মধ্যে ৪০০ এর বেশি।
এই স্কোর নিয়ে তিনি খুব সহজেই দ্বিতীয় স্তরের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারতেন। তবে লিয়াংয়ের স্বপ্ন যে সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাকে বলা হয় গাওকাও। যা বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেখানে লাখ লাখ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। চীনের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয় তাদের। এই পরীক্ষা একজন শিক্ষার্থীর জন্য স্বপ্নের মতো।
গাওকাও পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবক ও শিক্ষকরাও বেশ উদ্ধিগ্ন সময় পার করেন। চীনে প্রতিবছর দুই দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ভর্তির পরীক্ষা। এই পরীক্ষার সময় প্রতিটি স্কুলের আশেপাশে সব ধরনের শব্দ নিয়ন্ত্রণ করা হয়, পুলিশ এসে রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেয়, বন্ধ থাকে আশেপাশের সব নির্মাণ কাজ। এই পরীক্ষাটিকে বলা যায় আগামী দিনে একটি ভালো চাকরি বা একটু উন্নত জীবন পাওয়ার পরীক্ষা।
অন্যান্য পরীক্ষার্থীরা ভালো চাকরি এবং শিক্ষার জন্য এই পরীক্ষায় অংশ নেন। তবে লিয়াংয়ের এখন চাকরির প্রয়োজন নেই। স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই তার জন্য সব। এখনো তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এবার অর্থাৎ ২৬ তম পরীক্ষায় স্বপ্ন পূরণ না হলে আবারও চেষ্টা করবেন তিনি।
সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল
কেএসকে/এএসএম