জীবনটাই চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স!
জীবনটাই চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স! জীবনযুদ্ধের মহা হাতিয়ার এ বাক্য। পরিবার-পরিজন, সমাজ, দেশ পেরিয়ে বিশ্ব। চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের ব্লু প্রিন্ট কপি হাতে শাসন-শোষণ-তোষণ! পরিবার প্রধানের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স বলে দেয়; প্রতিবেশী আত্মীয়-অনাত্মীয় সম্পর্ক কেমন হবে, কী করবে ইত্যাদি।
পরিবার প্রধানের হাত ধরে রাষ্টযন্ত্র বা রাষ্ট্রপ্রধান ঠিক করেন; তাদের দেশনীতি, পররাষ্ট্রনীতি ঠিক কীভাবে কোন পথে পরিচালিত হবে? স্মর্তব্য এই যে, পরিবার বনাম রাষ্ট্রের পলিসি বেশ অবাক করার মত! পরিবার প্রধানের মনের গোপন সুক্ষ্মদর্শী চালে কুপোকাত তটস্থ হয়ে পরিবারে যার যার মত দায়িত্ব পালন করেন। মনের গোপন অভিপ্রায় কিন্তু ছেলে-মেয়ে দূরে থাক, জীবনের শেষদিন পর্যন্ত একসাথে এক বিছানার পার্টনার পর্যন্ত বুঝতে পারেন না।
প্রেম-কাম, তোষণ-ভাষণ এমনকি দয়াতেও এখন চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স নীতি। এ নীতিতে ঝুলে থাকে হরেক রকমের লোভ, টোপ, দয়া, মিথ্যার ঝুলে দেওয়া মুলো। অবস্থান ধরে রাখতে এ নীতির কুম্ভিল আপেক্ষিকতা এখন বিশ্বে শাঁখের করাত হলেও কেউই পিছিয়ে আসছেন না।
মাঝে-মাঝে চাঞ্চল্যকর খুনের রহস্যঘেরা তদন্তে বেরিয়ে আসে, আপন পিতা-মাতার হাতে সন্তান খুন! স্বামী-সন্তানের হাতে গৃহকর্ত্রীর রহস্যঘেরা খুন। পরে বেরিয়ে আসতে থাকে, প্রতিবেশীর প্রভাব-প্রতিপত্তি, উত্থান কিংবা কাউন্টার মামলার চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স দিতেই নিজের সন্তানকে খুন করা হয়েছে। আবার দেখা যাচ্ছে, গৃহকর্ত্রীর নামে বিপুল টাকা ঋণ নিয়ে না দেওয়ার কৌশলে পরিবারের সবাই মিলে খুন করে লাশ গোপন করে থানায় নিখোঁজ জিডি করেছেন। অমার্জিত ভীষণ রকমের অসৎ কৃতঘ্ন ভাবনা নিয়ে কোনো পরিবার, সমাজ, এমনকি যেকোনো দেশ বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারেন না!
হিটলার, মুসোলিনী, নীটশের চিন্তা ভয়ঙ্কর কাজ, কৌশল পৃথিবীর কল্যাণে কতটা এগিয়ে এসেছে জানি না; তবে পৃথিবীর সমৃদ্ধ সভ্যতার মুখে চুনকালি লেপন করেছে- তা বেশ স্পষ্ট দৃশ্যমান। যা করেছে, মানব সভ্যতার কলঙ্ক তিলক পৃথিবী ধ্বংস অবধি লেগে থাকবে। পৃথিবী কোনোদিনই সভ্যতার ব্যত্যয় ক্ষমা করে না। চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স নীতিতে ধ্বংস হয়েছে গড়ে ওঠা পৃথিবীর সমৃদ্ধ তাবড় সভ্যতা, সংস্কৃতি, ধর্ম, কৃষ্টি, মনন ও নন্দন। এমনকি বেঁচে থাকার অস্তিত্বের সংকট! পাথর যুগ থেকে কথিত সভ্যতা হালের একবিংশ শতাব্দি।
ভয়াবহ চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স ভর করে বিশ্বে চলছে এক অস্থির অবিমৃষ্য প্রজন্মের খবরদারি। এ অবিমৃষ্য প্রজাতিকে বাগে আনা যাচ্ছে না কিছুতেই। এ প্রজাতি ধর্মেও থাকে-জিরাফেও থাকে, বোঝা যায় না- ওদের কোনো মতিগতি! ক্ষিধে নিয়ে নিজের সন্তানের মাংসে পেট ভরে হেলেদুলে চলা বাঘের মতো।
চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স সংস্কৃতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করার সময় এসে গেছে। এ সংস্কৃতির কূট-কৌশলে হারিয়ে গেছে পৃথিবীর সমৃদ্ধ তাবড় সভ্যতা, মহান জন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও ধ্রুব সত্য! এ অবিমৃষ্য বৈদ্যুতিক ঈলফিশ প্রজাতি বেশ কৌশলী! এজন্য ঈলফিশ প্রজাতির ভণ্ডদের চিহ্নিত করতে বেশ বেগ পেতে হয়।
পৃথিবীজুড়ে মানবতার চরম শত্রু মানব বৈদ্যুতিক ঈলফিশ প্রজাতি পরিবার, সমাজ, দেশ-বিদেশ সবখানেই কৌশলে হিংসা, বিভাজন সৃষ্টি করে নিরর্থক ভণ্ড, মহাপণ্ডিত সেজে চরম-চরম মিথ্যাচার করে সভ্যতার কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে।
হাত গুটিয়ে বসে থাকলে মানবতার চরম শত্রু চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স নীতির ঝাঁকঝাঁক বৈদ্যুতিক ঈলফিশ এখন পৃথিবীজুড়ে অবশিষ্ট মানব সভ্যতার বাঁকে-বাঁকে পাহারায় থাকবে। খপখপ করে সমৃদ্ধ সভ্যতা বা চিন্তাগুলো খেয়ে হজম করে নেবে। সেদিন আর বেশি দূরে নেই! পৃথিবীজুড়ে মনের গোপন খাঁচায় পোষা ভয়ঙ্কর চরম স্বার্থান্ধ চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স একচোখা নীতি বৈদ্যুতিক ঈল ফিশ মানবতার চরম শত্রু হয়ে পৃথিবীর অবশিষ্ট থাকা অন্ধের যষ্ঠি সভ্যতা হাজার ভোল্টে তাড়িত করে শেষ করে দেবে।
এসইউ/এমকেএইচ