ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

এমআইটিতে ভর্তি হতে চাইলে

প্রকাশিত: ০৪:৪৬ এএম, ৩০ অক্টোবর ২০১৪

১৮৬১ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর দেড়শ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এ সময়ে দিন দিন প্রতিষ্ঠানটির সুনাম বেড়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত গবেষণার ক্ষেত্রে এমআইটির পরিচিতি বিশ্বজুড়ে। নোবেল বিজয়ীদের মধ্যে ৭৬ জনই পড়াশোনা করেছেন এখানে। কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয় বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১১৫ টি দেশের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছেন এমআইটিতে।

প্রতিবছর তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এমআইটিতে ভর্তির আবেদন করে। দেড়শ এরও কম সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পান। এমআইটির উদার আর্থিক সুবিধা দিতে গিয়েই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা সীমিত রাখতে হয়। এমআইটিতে ভর্তির বিষয়টি অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ হওয়ায় বেশ আগে থেকে এখানে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। প্রতিযোগিতাপূর্ণ হলেও প্রতি বছরই সারা পৃথিবী থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। স্নাতক পর্যায়ে শতকরা ৯ ভাগ এবং স্নাতকোত্তর পর্য়ায়ে শতকরা ৩৮ ভাগ ছাত্রই আন্তর্জাতিক ছাত্র।

ভর্তি:
কেবল পরীক্ষায় ভালো ফল নয়, এমআইটিতে ভর্তির জন্য গণিত এবং বিজ্ঞানে ভালো গাঁথুনি প্রয়োজন। গণিত অলিম্পিয়াড, বিজ্ঞানমেলা এসব কর্মকান্ডে অংশগ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে সাফল্যের হারটা বেশি।

স্যাট-১, স্যাট-২ এবং টোফেল সম্পন্নের পর যে বিষয়ে পড়তে আগ্রহী সে বিষয়ের ওপর একটি রচনা লিখে ভর্তির আবেদন পাঠাতে হয়। আবেদন সুষ্ঠুভাবে পাঠানো এবং রচনার মানের ওপর ভর্তির বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভর করে।

এমআইটির নির্বাচন প্রক্রিয়াটি ‘নিড ব্লাইন্ড’ অর্থাৎ এখানে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীর আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করা হয় না। ভর্তির জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে আর্থিক সাহায্য করা হয়, এমনকি পুরো খরচও দেয়া হয়।

প্রতিবছর জানুয়ারীতে অনলাইনে ভর্তির জন্য আবেদন করতে হয় এবং ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বৃত্তি এবং আর্থিক সাহায্যের আবেদন চূড়ান্ত করতে হয়। নির্বাচিত হওয়া না হওয়ার বিষয়টি মার্চে এবং  বৃত্তির বিষয়টি এপ্রিলে জানানো হয়। সবাই পূর্ণ বৃত্তি পান না, যারা পূর্ণ বৃ্ত্তি পান না তাদের জন্য স্বল্পমেয়াদী চাকরি এবং খন্ডকালীন চাকরির সুযোগ আছে এখানে।

ভর্তির আবেদন করা:
অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ছাত্র: যুক্তরাষ্ট্রের ছাত্র এবং বাইরে ছাত্রদের জন্য আলাদা ভর্তি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন এমন ছাত্রদের যুক্তরাষ্ট্রের ছাত্র হিসেবে আবেদন করতে হয়। আবার যারা গ্রীন কার্ড পেয়েছেন তাদেরও যুক্তরাষ্ট্রের ছাত্র হিসেবে আবেদন করতে হয়। বাকি সবাই আন্তর্জাতিক ছাত্র হিসেবে আবেদন করতে পারেন। তবে গ্রীন কার্ড পাননি কিন্তু পেতে চলেছেন তারাও আন্তর্জাতিক ছাত্র হিসেবে আবেদন করতে পারেন।

স্নাতক কোর্সে আবেদনের যোগ্যতা
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ববর্তী শিক্ষা সমাপ্ত করে এমআইটিতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারে। অধিকাংশ দেশে এ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বয়স ১৭ থেকে ১৯ হয়। তবে ক্ষেত্রেবিশেষে এ বয়স কম বা বেশি হতে পারে। যদি কেউ যুক্তরাষ্ট্রে বা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর এমআইটিতে ভর্তির আবেদন করেন তবে তাকে বদলি শিক্ষার্থী বা ট্রান্সফার স্টুডেন্ট হিসেবে আবেদন করতে হয়।

ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে একটি সাক্ষাতকার নেয়া হয়। এমআইটির প্রাক্তন কোন শিক্ষার্থী এ সাক্ষাতকার নেন। কাছাকাছি এরকম কেউ না থকলে ভিডিও কনফারেন্সিং এর ব্যবস্থা করা হয়। অবশ্য এটি বাধ্যতামূলক নয়, তাই এটি করতে না পারলেও অসুবিধা নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে যারা পড়াশোনা করতে আসে তাদের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা অনুযায়ী রুপান্তর করে নেয়া হয় না। এমআইটির ভর্তি কর্মকর্তাগণ সংশ্লিষ্ট দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বিষয়টি বিবেচনা করে ফলাফল মূল্যায়ন করেন। কোন দেশের জন্য আলাদা কোটা বা ভর্তি সীমা নেই। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যেকোন দেশের শিক্ষার্থী যে কোন সংখ্যায় ভর্তি হতে পারেন।

এখানকার শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও প্রতিভার পরিচয় দেবে এটি আশা করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের কয়েকটি বিষয়ে পড়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এ কোর্সগুলো করা বাধ্যতামূলক নয় তবে এমআইটিতে পড়াশোনার ক্ষেত্রে এ কোর্সগুলো বিশেষ সহায়ক হয়।