ধীর গতির গাড়ি এখন দুরন্ত গতির যান
তিলোত্তমা নগরী ঢাকা। তিল ধারণের ঠাঁই নেই এই শহরে। অথচ সেই ঢাকা শহর এখন অনেকটাই ফাঁকা। আর এই ফাঁকা শহরের রাস্তায় গাড়ি চলছে এখন সাঁই সাঁই করে। আগে যেখানে থেমে থেমে চলতো গাড়ি। এখন সেই গাড়িই বনে গেছে দ্রুতগতির যান। অল্প সময়ের মধ্যে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়ার উপযুক্ত সময় এখন।
একইভাবে এখন গাড়িগুলোতেই এখন সিট ফাঁকা। ঈদ উপলক্ষে এই কয়েকদিন রাজধানীর কোথাও বুঝি আর গাড়িতে ঝুলন্ত মানুষ দেখা যাবে না।
ঈদের কয়েকদিন আগেও শ্যামলী থেকে মধ্যবাড্ডা যাতায়াতের জন্য সর্বনিম্ন সময় লাগতো এক ঘণ্টা ২০ মিনিট। অথচ এখন সময় লাগছে মাত্র ২৫ মিনিট। একইভাবে যাতায়াতের সময় কমেছে অন্যান্য রাস্তার ক্ষেত্রেও।
প্রায় আড়াই কোটি মানুষের এই শহর নিষ্প্রাণ হয়ে ওঠে বছরের দুই ঈদে। অনেকের মতে ঈদের সময়গুলো প্রকৃত রূপ ফুটে ওঠে ঢাকার।
বৃহস্পতিবার শ্যামলী থেকে লেগুনাযোগে মহাখালী আসার পথে কথা হয় সুমন ইসলাম নামে এক চাকরিজীবীর সঙ্গে। তিনিও এবার ঢাকায় ঈদ করছেন। চাকরি করেন একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায়।
তিনি বললেন, ৩ বছর ধরে ঢাকায় আছি কিন্তু এই শহরটাকে ভালোভাবে দেখতে পারিনি। এই সুযোগ এর আগে হয়নি। অতিরিক্ত যানজটের কারণে এই ভাবনাকে কখনো বাস্তব রূপ দেয়ার চেষ্টাও করিনি। কিন্তু, আগামীকাল শুক্রবার ঈদের দিন পরিবার নিয়ে পুরো ঢাকা শহর ঘুরবো। আর এ কারণেই এবার ঈদে বাড়ি গেলাম না।
কথা হলো লেগুনার হেলপার রায়হানের সঙ্গে। বয়স তার ১৫ এর কাছাকাছি। বাড়ির কথা জিজ্ঞেস করতেই, জানালো যশোর। ঈদে বাড়ি যাচ্ছো না, বলতেই সে বললো এলাকায় কিছু দেনা আছে, এলাকায় গেলেই টাকা দিতে হবে। আর কিছুদিন কাজ করার পর টাকা নিয়ে বাড়ি যাবো।
তার সঙ্গে কথা বলতে বলতে লেগুনাটি এসে হাজির মহাখালীতে। এরপর আবার গাড়ি বদল। এবার উঠলাম মধ্যবাড্ডার গাড়িতে। উঠেই দেখলাম আমিসহ মোট তিনজন। অথচ অন্যদিন ওই গাড়িতে জোর করে উঠতে হতো। সিট তো দূরের কথা। কারো পায়ের ওপর পা দিয়ে দাঁড়াতে হতো সেখানে। গাড়িতে উঠার পর থেকে হেলপার ‘এই লিঙ্ক রোড, লিঙ্ক রোড’ বলে চিৎকার শুরু করলো। প্রায় তিন মিনিট ডেকেও একজনকেও পাওয়া গেল না লিঙ্করোড যাওয়ার জন্য। এরপর তিনজনকেই নিয়ে ছুটলো গাড়িটি। পৌঁছালাম লিঙ্করোড। এরপর অফিস।
এমএএস/এসএইচএস/এমএস