ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

শিশুর মাঝে পশু খোঁজে ভালোবাসা, মানুষ খোঁজে যৌনতা

জুনাইদ আল হাবিব | প্রকাশিত: ১২:৫৫ পিএম, ১০ জুলাই ২০১৯

আমি শিশুদের ভালোবাসি। আমি ওদের বন্ধু। শিশুদের হাসিতে চোখ রেখে জগতের বহু যন্ত্রণা ভুলতে পারি। ওরা নিষ্পাপ, ফুলের মতো পবিত্র। যে ঘরে শিশু আছে, সে ঘরে যেন ফুলের বাগান আছে। ওদের হাসির মাঝেও আমি ফুলের সৌরভ খুঁজে পাই। ফুলের সুঘ্রাণ যেভাবে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে, ঠিক সেভাবে শিশুদের ভালোবাসা আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে, শিরায় শিরায় প্রবেশ করে। আমি প্রশান্তি পাই। আমি প্রাণোচ্ছ্বাসে মেতে থাকার প্রেরণা পাই। ওদের কথা, ওদের বার্তা মাঝে মাঝে মনটাকে ভালো করে দেয়। কী সুন্দর ওদের ভাষা। কতো ভঙ্গিমায় ওরা কথা বলে। এ যেন ভালোবাসার এক অফুরন্ত ভান্ডার।

কিন্তু সম্প্রতি কী ঘটছে আমাদের দেশে? আমরা কি মানুষ, না পশু? নিজেদের পশুত্বের প্রমাণ দিতে আমরা কেন এত অসভ্য হয়ে পড়েছি? আমরা শিশুদের মাঝে ভালোবাসা না খুঁজে যৌনতার গন্ধ খুঁজি। ছি! কী অসভ্য আমরা। এই হলো আমাদের সমাজ! আমাদের করুণ বাস্তবতা। শিশু ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনকহারে ক্রমেই যে বেড়ে চলেছে, এর শেষ কোথায়?

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এমন পরিস্থিতিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। কিছু মানুষ প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই কুকুর ও শিশুর একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘কুকুরটাও শিশুটির ভালোবাসা বোঝে, আর মানুষ নামের জানোয়াররা শিশুদের মাঝে যৌনতা খোঁজে। কী নির্লজ্জ ওরা। ওদের রুচি কেমন? ওদের জন্য আজ শিশুরা কোনভাবেই নিরাপদ নয়। তবুও কি ধর্ষকদের বিবেকের সূর্য উদিত হবে না? শিশুরা তো কেউ আমাদের আদরের সন্তান, আদরের ছোট বোন। তাহলে ওদের প্রতি কেন আমরা দানবের মতো আচরণ করছি।’

child-in-(1)

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

কী নৃশংস, কী জঘন্য হতে পারে আমাদের আচরণ। একটি শিশুকে ধর্ষণ করার পরও পশুত্ববহনকারী মানুষগুলো ক্ষান্ত হয় না। নিজেকে সাধু হিসেবে প্রমাণ করার জন্য শিশুদের মেরে ফেলা হচ্ছে। তাহলে আমরা কোথায় আছি? আমরা কি সেই আইয়্যামে জাহেলিয়ায় আছি?

প্রতিটি পুরুষের যৌন জীবন উপভোগ করার বিধান তার ধর্মেই আছে। কারো ইচ্ছে হলে তারা বিয়ে করে ভালো থাকতে পারে। শিশুদের জীবন নষ্ট করে ওরা কিভাবে ভালো থাকে? ছেলে-মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাদের বিয়ে করানো উচিত। এতে সমাজে এমন ঘটনা ঘটবে না। ধর্ষণের ঘটনা বাড়ার পরেও মানুষের টনক নড়েনি। ইদানিং শিশু ধর্ষণের ঘটনা এবং ধর্ষণের পর হত্যার মতো হৃদয়বিদারক ঘটনা ‘অন্ধকার যুগ’কেও হার মানায়।

বিজ্ঞাপন

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষ এও লিখেছেন, ‘আপনার ঘরে কি একটি মেয়ে শিশু আছে? তাহলে তাকে একটি অস্ত্র কিনে দিন লাইসেন্সসহ। তাহলে ওই শিশুর নিরাপত্তা আছে।’ আমরা শিশুদের প্রতি কতটা বর্বর হলে আমাদের বলতে হয়, শিশুদের বাঁচতে হলে অস্ত্র হাতে তুলে দিতে হবে। ধর্ষকরা কতো বড় পশু হলে শিশুদের প্রতি এমন জঘন্য আচরণ করতে পারে?

child-in-(2)

ধর্ষণ শব্দটি মুখে আনতে এবং লিখতে আমি লজ্জাবোধ করি। কিন্তু অনবরত এ ঘটনা বাড়তে থাকায় মনে হলো, আমাদের এখনি রুখে দাঁড়াতে হবে। এর লাগাম টেনে ধরা উচিত। না হলে আমরা পশু হিসেবে সমাজে স্বীকৃতি পাবো। এজন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। শিশুদের প্রতি নজর দিতে হবে। হয়তো আপনার কাছের কারো দ্বারাই আপনার শিশুটির জীবন বিনাশ হতে পারে!

বিজ্ঞাপন

তবে হ্যাঁ, কাছের মানুষদের প্রতি আবার আস্থাহীন হওয়া চলবে না। হয়তো কাছের এমনও মানুষ আছে, যারা আপনার সন্তানকে তার সন্তানের মতো আদর করেন। মোটকথা হচ্ছে, শিশুদের সবসময় চোখে চোখে রাখা উচিত। আর যেসব মানুষ নামের পশু আজ শিশুদের সাথে এমন অমানবিক আচরণ করছে, তাদের ভাবা উচিত- আমরাও একদিন শিশু ছিলাম। ওদের মতোই। যদি আমার বেলায় ঘটনাগুলো ঘটতো, তাহলে কেমন হতো?

সবমিলিয়ে বলতে চাই- কোন ধর্ষণই কাম্য নয়। শিশুদের বিষয় তো একেবারেই নয়। শিশুদের রয়েছে স্বপ্নীল ভবিষ্যৎ। ওদেরকে বাঁচতে দিতে হবে। না হলে আমাদের বিকৃত মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে হবে। বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো না। ওরা বড় হোক আমাদের মতোই। বেড়ে উঠুক নিরাপদে।

এসইউ/এমকেএইচ

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন