ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে যা করবেন
ইতোমধ্যে নিশ্চয়ই জেনে গেছেন যে, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরযান চালানো দণ্ডনীয় অপরাধ। আসুন জেনে নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে আপনাকে কী কী করতে হবে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন ইফতেখার আহমেদ-
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ন্যূনতম ১৮ বছর এবং পেশাদার ন্যূনতম ২০ বছর বয়স্ক ব্যক্তি আবেদন করতে পারবেন। লাইসেন্স দেওয়া হয় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) থেকে। আর ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রথম ধাপ হলো শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের (লার্নার) জন্য আবেদন করা। প্রথমে এর জন্য বিআরটিএ থেকে বা ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করতে হবে।
শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
১. নির্ধারিত ফরমে আবেদন।
২. রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের দেওয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট।
৩. ন্যাশনাল আইডি কার্ড/জন্মসনদ/পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি।
৪. নির্ধারিত ফি, ক্যাটাগরি ০১- ৩৪৫ টাকা ও ক্যাটাগরি ০২- ৫১৮ টাকা বিআরটিএর নির্ধারিত ব্যাংকে (ব্যাংকের তালিকা www.brta.gov.bd তে পাওয়া যাবে) জমাদানের রশিদ। ক্যাটাগরি ০১- শুধু মোটরসাইকেল অথবা শুধু হালকা মোটরযান। ক্যাটাগরি ০২- মোটরসাইকেল এবং হালকা মোটরযান একসঙ্গে।
৫. সদ্য তোলা ০৩ কপি স্ট্যাম্প ও ০১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
এরপর আবেদনপত্রটি নিজ হাতে পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নিজ এলাকা অনুযায়ী বিআরটিএর সার্কেল অফিসে জমা দিতে হবে। সার্কেল অফিস আপনাকে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেবে। এরপর তাদের দেওয়া সময় অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এ সময় আপনাকে লার্নারের মূল কপি এবং কলম নিয়ে যেতে হবে।
লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্টে উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুনরায় একটি নির্ধারিত ফরমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি দিয়ে স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে। গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙুলের ছাপ) গ্রহণ করে স্মার্ট কার্ড ইস্যু করা হয়। স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রিন্টিং সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএসের মাধ্যমে তা গ্রহণের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়। স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করার পর বিআরটিএ একটি প্রাপ্তি রিসিট গ্রাহককে দিবে। যা স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স না পাওয়া পর্যন্ত স্লিপটি ড্রাইভিং লাইসেন্স হিসেবে গণ্য করা হয়।
> আরও পড়ুন- যানজটে প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে ৪০ লাখ কর্মঘণ্টা
স্মার্ট কার্ড লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
১. নির্ধারিত ফরমে আবেদন।
২. রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের দেওয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট।
৩. ন্যাশনাল আইডি কার্ড/জন্মসনদ/পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি।
৪. নির্ধারিত ফি (পেশাদার ১,৬৮০ টাকা ও অপেশাদার ২,৫৪২ টাকা) বিআরটিএর নির্ধারিত ব্যাংকে জমাদানের রশিদ।
৫. পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন।
৬. সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রকৃতি
পেশাদার হালকা: মোটরযানের ওজন ২,৫০০ কেজির নিচে হলে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২০ বছর হতে হবে।
পেশাদার মধ্যম: মোটরযানের ওজন ২,৫০০-৬,৫০০ কেজি হলে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২৩ বছর হতে হবে। পেশাদার হালকা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যবহার কমপক্ষে ০৩ বছর হতে হবে।
পেশাদার ভারি: মোটরযানের ওজন ৬,৫০০ কেজির বেশি হলে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২৬ বছর হতে হবে। পেশাদার মধ্যম ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যবহার কমপক্ষে ০৩ বছর হতে হবে।
নবায়ন: অপেশাদার লাইসেন্স ১০ বছর পরপর নবায়ন করাতে হবে। পেশাদার লাইসেন্স ০৫ বছর পরপর নবায়ন করাতে হয়।
ডিএমপিনিউজ/এসইউ/আরআইপি