ব্ল্যাক বক্স কি আসলেই কালো?
‘ব্ল্যাক বক্স’ শব্দের অর্থ সাধারণত ‘কালো বাক্স’ হওয়ার কথা। কিন্তু আসলেই কি তা কালো? বিশেষ করে বিমানের ব্ল্যাক বক্স কি কালো রঙের? উত্তর হ্যাঁ কিংবা না যা-ই হোক, তবু জেনে নিন ব্ল্যাক বক্স সম্পর্কে কিছু তথ্য-
ব্ল্যাক বক্স আসলে এমন একটি যন্ত্রের নাম, যা বিমানের পেছনের দিকে অবস্থান করে। এতে ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার অংশে বিমানের টেকনিক্যাল বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষিত হতে থাকে। আর ককপিট ভয়েস রেকর্ডার অংশে বিমান চালকের কক্ষের সব অডিও বা কথাবার্তা রেকর্ড হয়।
তবে এটি নামে ‘ব্ল্যাক বক্স’ হলেও বিমানের ব্ল্যাক বক্স আসলে কমলা রঙের হয়ে থাকে। কমলা রং অপেক্ষাকৃত সহজে দৃশ্যমান হওয়ার কারণেই এ ব্যবস্থা। ব্ল্যাক বক্স আসলে কোনো বক্স বা বাক্সের মতো দেখতে নয়। ব্ল্যাক বক্সের কাঠামোতে সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান হয় একটি সিলিন্ডার, যেটি একটি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। সিলিন্ডারের পাশে বক্স আকারের কাঠামোর মধ্যে এর ব্যাটারি থাকে। আর সিলিন্ডারে থাকে মেমোরি ইউনিট।
বিমান বিশেষজ্ঞরা এটিকে ব্ল্যাক বক্স বলে না ডেকে ‘ইলেকট্রনিক ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার’ বলে অভিহিত করেন। ব্ল্যাক বক্স অত্যন্ত মজবুতভাবে তৈরি। এর কাঠামো লিথিয়াম অথবা স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি। একটি কংক্রিটের দেয়ালে যদি ৭৫০ কিলোমিটার বা ঘণ্টা গতিতে ব্ল্যাক বক্সকে আছড়ে ফেলা হয়, তাতেও এটি টিকে থাকবে।
এটি স্থির অবস্থায় ২.২৫ টন ওজন নিয়ে কমপক্ষে ৫ মিনিট অক্ষত থাকতে পারে। সর্বোচ্চ ১১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় একঘণ্টা পর্যন্ত কোনো প্রকার ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই টিকে থাকে। ৬ হাজার মিটার গভীরে পানির নিচের চাপেও এটি অক্ষত থাকতে পারে।
ব্ল্যাক বক্সের বিশেষ সেন্সর যখন পানির সংস্পর্শে আসে; তখন এটি প্রতি সেকেন্ডে একটি করে সিগন্যাল পাঠায়, যা থেকে উদ্ধারকারী দল এর অবস্থান বুঝে ডিভাইসটি তুলে আনতে পারে। তবে ব্ল্যাক বক্সের ব্যাটারি যতদিন কাজ করবে ততদিন এটি এই সিগন্যাল পাঠাতে পারবে। সাধারণত সর্বোচ্চ ত্রিশ দিন পর্যন্ত সিগন্যাল পাঠাতে পারে। আর পানির নিচ থেকে সর্বোচ্চ ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত এই সংকেত আসতে পারে।
এসইউ/আরআইপি