যেভাবে গড়ে ওঠে কুবার প্যাডি
শহর সাধারণত মাটির ওপরই হয়ে থাকে। তবে প্রযুক্তির যুগে এসে মাটির নিচে অনেক কিছুই হচ্ছে। তেমনই একটি শহর কুবার প্যাডি। এটি একটি মাটির নিচের শহর। পৃথিবীর একমাত্র মাটির নিচের শহর। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড থেকে ৮৪৬ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের মরুভূমিতে অবস্থিত এ শহর। শহরটি ‘পৃথিবীর ওপাল রাজধানী’ নামেও খ্যাত।
১৯১১ সালের আগে এর বাসিন্দা বলতে ছিলো মরুভূমির সাপ, বিষাক্ত পোকামাকড়, টিকটিকি আর এমু পাখি। এই জায়গার বিশেষত্ব প্রথম আবিষ্কার করে উইল হাচিসন নামের চৌদ্দ বছরের এক কিশোর। ১৯১৬ সালে ‘ওপাল’ নামে একধরনের খনিজ পদার্থের খোঁজে এখানে জড়ো হতে থাকেন খনিশ্রমিকরা। পৃথিবীর ৮০ ভাগ ওপালের জোগান আসে এখান থেকে।
প্রতিদিন কুবার প্যাডিতে খনি সংগ্রহ করতে অনেক শ্রমিক আসতো। জনপদ থেকে স্থানটি অনেক দূরে হওয়ায় প্রতিদিন এসে কাজ করা সম্ভব ছিলো না। দিনের বেলায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি তাপমাত্রা থাকতো। রাতের বেলা বিপরীত তাপমাত্রা দেখা যেত। শূন্যের কোঠায় নেমে যেত তাপমাত্রা। তার ওপর রয়েছে ধূলিঝড়ের উৎপাত। তারপরও কাজ করতে হতো। এই ভেবে শ্রমিকরা মাটির নিচে ঘর বানানো শুরু করে।
এভাবে মাটির নিচে গড়ে ওঠে পুরো একটি শহর। প্রথম দিকে বিদ্যুৎ, পানি ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা না থাকলেও সময়ের ব্যবধানে ব্যবস্থা হয়ে যায়। এরপর ধীরে ধীরে বাজার, মার্কেট, গির্জা, বিনোদন কেন্দ্র, ব্যাংকসহ দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় সবকিছুই স্থাপন করা হয়।
তবে শহরের অদ্ভুত বিষয় হলো- এখানে কোনো গাছ বা ঘাস দেখা যায় না। শুধু আছে তৈলাক্ত বালি। কুবার প্যাডি এখন পর্যটন স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। প্রতিবছর অসংখ্য পর্যটক এখানে আসেন।
এসইউ/আরআইপি