বদলে যাওয়া জেরুজালেম (দেখুন ছবিতে)
জেরুজালেম এমন একটি শহর; যা বর্তমানে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কণ্টকাকীর্ণ একটি ইস্যু। এরও আগে ১৯৬৭ সালে আরব-জেরুজালেম যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ছয় দিনের সেই যুদ্ধের সময়ের জেরুজালেমের সঙ্গে বর্তমান জেরুজালেমের পার্থক্য কেমন? ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদন এবং আলোকচিত্রে উঠে এসেছে বর্তমান এবং অতীতের জেরুজালেমের এমন রূপ। দেখুন ছবিতে-
জলপাই পাহাড় (বর্তমান)
এক সময় এলাকাটি ছিল জলপাই বাগানে ঘেরা। তাই নাম দেওয়া হয় জলপাই পাহাড়। এটাই এখন পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়ে আসা ইহুদিদের সবচেয়ে প্রাচীন সমাধি। ছবিতে পুরাতন নগর দেয়াল, স্বর্ণ-গম্বুজ মসজিদ, পাথরের গম্বুজ দেখা যাচ্ছে। দৃশ্যটি পুরাতন নগরের পূর্ব পাশে পাহাড়ের নিচের।
জলপাই পাহাড় (অতীত)
১৯৬৭ সালের ৭ জুন ছবিটি তোলা হয়। আরব-ইসরায়েলের ছয় দিনের যুদ্ধ চলাকালে এই পাহাড়ের চূড়ায় ছিল একটি ব্রিগ্রেড কমান্ডের ছাউনি। তবে ছবিটির পেছনে পুরাতন অটোমান নগর দেয়াল এবং মসজিদ না থাকলে বোঝা যেত না যে, এটা একই জায়গা।
মসজিদ আল-আকসা (বর্তমান)
রূপালি গম্বুজ এবং বিশাল হলঘর বিশিষ্ট আল-আকসা মসজিদ টেম্পল পাহাড়ে অবস্থিত। মুসলমানরা একে ‘হারাম আল শরীফ’ বলে থাকে। এটা ইহুদিদেরও সবচেয়ে পবিত্র স্থান। এখানে বাইবেলে উল্লেখিত দু’টি উপাসনালয় রয়েছে। এটা সুন্নি মুসলমানদের কাছে তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। এখানকার পুরো পাহাড়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘ বিরোধ রয়েছে।
মসজিদ আল-আকসা (অতীত)
আল-আকসা জেরুজালেমের সবচেয়ে বড় মসজিদ। ১৯৬৭ সালে জেরুজালেম জয়ের পর এই এলাকার উপর ইসরায়েল কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। তখন নেতারা একমত হয়েছিলেন যে, ‘ওয়াকফ’ নামে ইসলাম ধর্মীয় একটি ট্রাস্ট দ্বারা টেম্পল মাউন্ট পরিচালিত হবে।
দামেস্ক গেট (বর্তমান)
দামেস্ক গেট থেকে উত্তরের রাস্তা দামেস্কের দিকে গেছে। পূর্ব জেরুজালেম এবং একটি ব্যস্ত আরব বাজারে ঢুকতে এটা ফিলিস্তিনিদের প্রধান প্রবেশদ্বার। গত দুই বছরে এটা ফিলিস্তিনিদের আক্রমণের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।
দামেস্ক গেট (অতীত)
দামেস্ক গেট ১৫৩৭ সালে অটোমান সুলতান মহামতি সুলেমান নির্মাণ করেছিলেন। যা ১৯৬৭ সালেও প্রায় একই রকম ছিল। পুরাতন শহর এবং এর বিভিন্ন অংশে প্রবেশের দ্বার ৭টি।
পুরাতন শহর (বর্তমান)
জেরুজালেমের প্রাণবন্ত পুরাতন শহর এটি। ১৯৮১ সালে ইউনেস্কো এটাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে। এটা বিভিন্ন ধর্মের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান। পাথরের গম্বুজ, আল-আকসা মসজিদ, টেম্পল পাহাড়, ইহুদিদের পশ্চিম দেয়াল এবং খ্রিষ্টানদের একটি পবিত্র চার্চ এখানে অবস্থিত। ব্যস্ত ও বর্ণিল এই শহর কেনাকাটা, খাবার-দাবার এবং ভ্রমণের জন্য খুবই আকর্ষণীয়।
পুরাতন শহর (অতীত)
১৯৬৭ সালের জুলাই মাসে এই ছবিটি তোলা হয়। ৫০ বছর পরেও পুরাতন শহরটি একেবারে বদলায়নি। ছবিটিতে ‘ব্যাগেল’ নামের তিলের পেস্টি নিয়ে এদিক ওদিক ঘুরছে এক শিশু। এমন দৃশ্য এ শহরে এখনো দেখা যায়।
পশ্চিম দেয়াল (বর্তমান)
চুনাপাথরের প্রাচীন দেয়ালটি টেম্পল মাউন্টের পশ্চিমের দেয়াল। ইহুদিদের কাছে এটা সবচেয়ে পবিত্রতম স্থান। তারা এখানে প্রার্থনা করতে আসে। কখনো কখনো দেয়ালের ফাটলে চিরকুট রাখতে আসে। এখানে পুরুষ-নারীর জন্য পৃথক বিভাগ রয়েছে। তবে সারা বছরই এটা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। অবশ্য প্রবেশের আগে বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা তল্লাশি পার হতে হয়।
পশ্চিম দেয়াল (অতীত)
পশ্চিম দেয়ালের আরেক নাম ‘ওয়েইলিং ওয়াল’ বা ‘ক্রন্দনের দেয়াল’। অবশ্য ইহুদিরা এটাকে মর্যাদাহানীকর শব্দ হিসেবে বিবেচনা করে। তারা এ শব্দ ব্যবহার করে না। প্রার্থনার জন্য দেয়ালের দিকে জড়ো হওয়া মানুষের ছবিটি ১৯৬৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর তোলা।
এসইউ/এমএস