ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

গল্প নয় সত্যি

প্রকাশিত: ০২:৩১ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৭

‘আপনার বোন কি চাকরি ফিরে পেয়েছেন?’ বুধবার সকালে তথ্য ক্যাডারের এক জুনিয়র কর্মকর্তা ব্যক্তিগত কাজে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে আসলে সিনিয়র থেকে শুরু করে সাক্ষাৎ হওয়া সবাই এমন প্রশ্ন করছেন। কৌতূহলবশত এ প্রতিবেদক এমন প্রশ্নের রহস্য জানতে চাইলে বেরিয়ে আসে হজযাত্রী এক ভদ্র নারীর সৌদি আরবের জেল যাপনের করুণ কাহিনি। অসাবধানতার খেসারত হিসেবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিজীবী ওই নারীকে সাত-আট মাসের দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হয়।

[সামাজিকভাবে নতুন করে সুনাম ক্ষুণ্ন করা হতে পারে এ আশঙ্কায় ভুক্তভোগীর পরিচয় গোপন রেখে আসন্ন হজে হজযাত্রীদের সাবধান করে দিতে গল্পাকারে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।]

তথ্য ক্যাডারের ওই কর্মকর্তা জানান, দুই বছর আগে ২০১৪ সালে তার মা, সরকারি চাকরিজীবী বোন ও বোনের স্বামী হজ করতে যান। গ্রামের অতি পরিচিত এক হুজুরের (দলনেতা) মাধ্যমে একটি হজ এজেন্সি থেকে তারা হজে যান। পবিত্র হজ পালন শেষে ফিরে আসার দিনক্ষণ পূর্বনির্ধারিত থাকায় পরিবারের সবাই মা, বোন ও বোনের জামাইয়ের ফিরে আসার অপেক্ষা করছিলেন। বিমানবন্দরে পৌঁছে বোনজামাই কখন ঢাকায় পৌঁছাবেন টেলিফোনে তাও জানিয়ে দিয়েছিলেন।

তবে ইমিগ্রেশনে যাওয়ার আগে দলনেতা ওই হুজুর তার বড় বোনের হাতে একটি পোটলা দিয়ে জানান, এখানে কিছু স্বর্ণ আছে, মেয়ের বিয়ের জন্য কিনেছেন। তার কাছে রাখলে সমস্যা হতে পারে, তাই ঝামেলা এড়াতে বোনের কাছে রাখার অনুরোধ জানান। সরল বিশ্বাসে হুজুরের দেয়া প্যাকেট নিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসারের দিকে এগিয়ে যান তার বোন। কিন্তু ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা সবাইকে ছেড়ে দিলেও তাকে আটকে রাখেন। ভাষাগত সমস্যার কারণে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা কী বলছিলেন তাও বুঝতে পারছিলেন না তিনি।

পরে দোভাষী আনলে জানা যায়, পোটলার ভেতর স্বর্ণের বিস্কুট (বার) রয়েছে। এ সময় পুরুষদের ইমিগ্রেশন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ওই হুজুরকে দেখিয়ে দিলে হুজুর স্বর্ণের বারের কথা অস্বীকার করেন। এ সময় তুমুল হট্টগোলের সৃষ্টি হলে হুজুরসহ বোনকে পুলিশ আটক করে।

এদিকে ফ্লাইট ছাড়ার সময় হয়ে এলে বোনজামাই শুধু তার মাকে বিমানে তুলে দিয়ে স্ত্রীকে অভয় দিতে সেখানেই থেকে যান। এরপর শুরু হয় ভোগান্তি। ধর্ম মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ হজে যাওয়া এজেন্সিতে ধরনা দিয়েও লাভ হয়নি।

চলে যাওয়ার সময় তথ্য ক্যাডারের ওই কর্মকর্তা বলেন, আসন্ন হজে সোয়া লাখেরও বেশি হজযাত্রী সৌদি আরব যাচ্ছেন। কেউ যেন না জেনে না বুঝে স্বর্ণ বা অন্য কোনো পণ্য পরিবহন না করেন।

এ বিষয়ে সবাইকে সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ জানান তিনি।

এমইউ/আরএস/এএইচ/এমএস

আরও পড়ুন