ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

সাইকেলিংয়ে ঝুঁকছেন আফগান নারীরা

প্রকাশিত: ০২:২৯ এএম, ২৪ এপ্রিল ২০১৫

অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী ও রক্ষণশীল মুসলিম প্রধান দেশ আফগানিস্তানে নারীদের অবস্থান উন্নত নয়। স্থানীয় রীতিনীতির কারণে ইচ্ছামতো কাপড় পরিধান করে কর্মসংস্থান ও স্বাভাবিক কার্যক্রমও তারা করতে পারে না। বলা যেতে পারে, ঘরের বাইরে নারীদের জীবন অনেক বেশি মাত্রায় সংকুচিত। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ ধরনের অবস্থা আস্তে আস্তে পরিবর্তিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতাই দেশটিতে প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠিত হলো নারী সাইকেল দল।

১৯ শতাব্দীতে মার্কিন নারী-অধিকার আন্দোলনকারী সমাজহিতৈষী সুসান ব্রাউন্নেল এন্থনি জানান, নারীমুক্তির জন্য সাইকেল সম্ভবত বিশ্বের অন্যান্য জিনিসের চেয়ে ভালো কাজ করছে। এটা একজন নারীকে অবাধ ও স্বাধীন বিচরণের অনুভূতি দেয়। যখন তিনি সাইকেলে বসেন, তিনি জানেন, সাইকেল থেকে না নামা পর্যন্ত তিনি আহত হবেন না। তিনি সাইকেল চালিয়ে দূরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটা হয় অবাধ ও মুক্ত নারী স্বভাবের ছবি।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের উপকণ্ঠে, একটি নারী সাইকেল দলের দৈনন্দিন প্রশিক্ষণ কোর্স চলছে। সাধারণ আফগান নারীর তুলনায় তারা ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও পর্দা ছাড়া বরং পেশাগত সাইকেল প্রতিযোগীর পোশাক এবং মাথায় হেলমেট পরে। পুরুষ ও শিশুদের অবাক দৃষ্টির সামনে তারা সাইকেল চালান। নারী সাইকেলদলের একজন সদস্য হিসেবে জাহরা মনে করেন, নারী সাইকেলদলে যোগ দেয়া নারীমুক্তির জন্য অসাধারণ একটি কাজ। তিনি বলেন, আমরা আফগানিস্তানের বাইরের নারীদের কাছে প্রমাণ করতে চাই যে, আফগান নারীও এ ধরণের খেলাধুলা করতে পারে। আমরা আর বাসায় আটকে থাকতে চাই না। ক্রীড়া হোক, লেখাপড়া ক্ষেত্রে হোক আমরা নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণ করতে চাই। আমাদের আর তালিবান সময় পর্বের মতো বাসায় আটকে রাখা উচিত নয়।


তালেবান গোষ্ঠি ক্ষমতায় থাকার সময় দেশটির নারীরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। তাদের অবাধে, কোনো প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়। বর্তমানে আফগান নারীদের বিভিন্ন মহলে দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে আরো বেশি নারী মুষ্টিযুদ্ধ, বাস্কেটবল, ভলিবল এমনকি স্কেটবোর্ডসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশ নেন। নারী সাইকেলদল নমুনা হিসেবে, তারা দেশটির প্রতিনিধিত্ব করে দক্ষিণ কোরিয়া, কাজাখস্তানসহ বিভিন্ন দেশে প্রতিযোগিতা করেছেন।


নারী সাইকেল দলের প্রশিক্ষক আব্দুল মনে করেন, সমাজে নারীর অবস্থানের ওপর গুরুত্ব দেয়া উচিত। তারপর সমাজ আরো সমান ও ন্যায়সঙ্গতভাবে এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, সাইকেল চালানোতে পুরুষদের চেয়ে নারীদের অনেক বেশি সুযোগ রয়েছে। তারা নিজেরাই সাইকেল চালাতে বেশ আগ্রহী। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আফগানিস্তানে বসবাসরত নারীদের অধিকার খুবই সীমিত। ঠিক এ ধরনের অসমান অধিকারের কারণে আফগান নারীরা বাইরে যাওয়ার সুযোগ খুবই কম পান। তাদের প্রশিক্ষণের সময় উৎসাহব্যাঞ্জক শক্তি থাকা উচিত।

এ সব নারী সদস্য থেকে আমরা দেখতে পারি যে, তরুণ নারীরা নিজেদের প্রচেষ্টায় সামাজিক মর্যাদা ও লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে সক্ষম হয়েছেন। তারা নিজেদের বৈধ অধিকারের জন্য যথাসাধ্য লড়াই করছেন। এ ধরনের সাহসী ও সংগ্রামী মনোভাব খুবই প্রশংসনীয়।

এএইচ/এমএস