ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

যেখানে জাগে ৫২’র স্মৃতি

প্রকাশিত: ০৩:৫৫ এএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আমার শ্বশুরবাড়ি পুরান ঢাকার খাজে দেওয়ান লেনে। বেশ কিছুদিন হলো ইংল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছি। পলাশীর এ রাস্তায় যাওয়ার সময় অনেকবার চোখ পড়লেও আসা হয়নি। আজ সময় করে এলাম। আমরা যারা প্রবাসী তাদের মন দেশের জন্য, মানুষের জন্য, বাংলা ভাষার জন্য কাঁদে। যে ভাষার জন্য রফিক, সালাম ও বরকত প্রাণ দিল তাদের কথা আরও বেশি মনে পড়ে। আজ যাদুঘরটি দেখতে আসতে না পারলে আফসোস নিয়ে ডারবিতে ফিরতে হতো।

বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হল সংলগ্ন পলাশী চৌরাস্তা উত্তরপূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ভাষা শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘরের ভেতর দাঁড়িয়ে এক প্রবাসী নারী এভাবেই তার অনুভূতির কথা জানাচ্ছিলেন।

barkat
স্মৃতি জাদুঘরটিতে তখন মাত্র মাত্র তিনজন দর্শনার্থী। বাইরে ভিজিটর খাতা নিয়ে বসে আছেন একজন নিরাপত্তারক্ষী। খোঁজ নিয়ে জানা গেল এ জাদুঘরটিতে দর্শনার্থীর সংখ্যা সারা বছরই কম থাকে। তবে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি এলে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ে। দর্শনার্থীদের বেশিরভাগ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গড়ে ছয়জনের কম দর্শনার্থী জাদুঘর ও সংগ্রহশালাতে এসেছে। এখানে ভাষা আন্দোলনের সময়ের নানা স্মৃতিচারণমূলক চিত্র, পত্রপত্রিকার কাটিং সাজানো রয়েছে।

abul
রয়েছে আবুল বরকতের ব্যক্তিগত ব্যবহার্য কিছু জিনিসপত্রও। দোতলায় রয়েছে লাইব্রেরি। ২০১২ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান এটি উদ্বোধন করেন।

আবুল বরকত ১৯২৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার বাবলা গ্রামে জম্মগ্রহন করেন। ডাক নাম আবাই। তিনি ১৯৪৫ সালে তালিবপুর হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক ও ১৯৪৭ সালে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন।

meu
দেশ ভাগের পর ১৯৪৮ সালে ঢাকায় আসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। তিনি ১৯৫১ সালে একই বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক সম্মান ডিগি লাভ করেন। বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী অপরাহ্নে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভরত ছাত্রজনতার ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়।

এতে আবুল বরকত গুলিবিদ্ধ হয়ে ওই রাতে ঢামেক হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। মাতৃভাষা বাংলার জন্য আত্মত্যাগ করার স্বীকৃতি স্বরুপ তাকে ২০০০ সালে মরণোত্তর একুশে পদক দেয়া হয়।

এমইউ/এনএফ/পিআর

আরও পড়ুন