ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

তিন মাধ্যমেই মুখর থাকতে চাই: মশিউর রহমান শান্ত

প্রকাশিত: ১০:১৪ এএম, ০২ এপ্রিল ২০১৫

শান্ত আসলে কী? নিউজ প্রেজেন্টার, রিপোর্টার, আরজে, অভিনেতা, মডেল, লেখক না কি নাট্যকার? এর উত্তর খুঁজতে শুধু পাঠক কেন দ্বিধান্বিত হবেন স্বয়ং শান্ত নিজেই! শান্ত`র পুরো নাম মশিউর রহমান শান্ত। এবং মজার ব্যাপার হলো উপরের সবগুলো অভিধাই শান্তর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যদিও তার চেহারা থেকে এখনও টিনএজারের ছাপ মুছে যায়নি! এত কম বয়সে মিডিয়ায় এতখানি অভিজ্ঞতা খুব কমজনেরই হয়। সেদিক থেকে শান্ত ভাগ্যবান। এবং সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হলো বর্তমানে টেলিভিশন, রেডিও এবং পত্রিকা- এই তিন মাধ্যমেই একই সঙ্গে পদচারণা করে বেড়াচ্ছেন শান্ত! তাকে নিয়ে লিখেছেন হাবীবাহ্ নাসরীন-

শান্তর শুরুটা ছিল লেখালেখির মাধ্যমে। এবং তারও আগে বই পড়ার মাধ্যমে। ২০১০ সালে শান্ত যে বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বসলো সে বছরই লেখালেখির ভূত তার ঘাড়ে চেপে বসেছিল। তবে শুরুটা ছিল নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ার মধ্য দিয়ে। `জোসনা ও জননীর গল্প` পড়ে সেই যে বইয়ের নেশায় ধরলো শান্তকে, তারপর টানা ১৭০ দিনে পড়ে ফেললেন ১৭০টি বই! এবং তার সবগুলোই ছিল হুমায়ূন আহমেদের লেখা। এত বই তিনি কোথায় পেতেন? পুরান ঢাকায়, যেখানটাতে শান্তদের বাসা ছিল সেইসময়, তার অদূরেই ছিল এক পাঠাগার। আর সেখান থেকেই প্রতিদিন একটি করে বই নিয়ে আসতেন। পরের দিন সেই বইটি ফেরত দিয়ে নতুন আরেকটি বই। পাঠাগারের গ্রন্থগারিক লোকটি প্রতিদিনই শান্ত`র দিকে অবিশ্বাসের চোখে তাকাতেন। প্রতিদিন একটি করে বই পড়ে শেষ করছে, এমন পাঠক মনে হয় তিনি সারাজীবনেও দেখেননি!

হুমায়ূন আহমেদের বই পড়তে পড়তে তার একজন বড় ভক্ত হয়ে গেলেন শান্ত। তারপর নিজেই একদিন সাহস করে লিখে ফেললেন একটি ছোটগল্প। এরকম করে কিছু ছড়া-কবিতাও। পাঠাতে লাগলেন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে। না। প্রথমবারেই শান্তর কোনো লেখা ছাপা হয়ে যায়নি। অবশ্য সেকারণে ধৈর্য্যহারাও হননি তিনি। প্রতি সপ্তাহেই লিখতেন। এবং প্রতি সপ্তাহেই নিয়ম করে বিভিন্ন পত্রিকার ঠিকানায় লেখা পাঠাতেন। হঠাৎ একদিন একটি লেখা ছাপা হয়ে গেলো দৈনিক যায়যায়দিনে। সেই ছিল শুরু। তারপর কতশত লেখা তার প্রকাশ হলো পত্রিকার পাতায়, কতশত বার ছাপার অক্ষরে পাঠকেরা পড়ল তার নাম, তার হিসেব কষা মুশকিল!

শান্ত`র যত কাজ

মশিউর রহমান শান্ত`র মিডিয়ায় পথচলা শুরু ২০১০ সালে একুশে টেলিভিশনে মুক্ত খবরে রিপোর্টার এবং প্রেজেন্টার হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে। শিশুতোষ রিপোর্ট এবং প্রেজেন্টেশন সবমিলিয়ে একুশে টিভিতে প্রচারিত প্রতিবেদনের সংখ্যা ১৭৬টির বেশি।  দৈনিক জনকণ্ঠ, দৈনিক কালেরকন্ঠ, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশসহ পত্রিকায় লেখা ফিচারের সংখ্যা দুইশতাধিক। ছোটগল্প লিখেছেন ৪২ টি যার মাঝে ৮টি গল্প প্রকাশ হয়েছে ভারত থেকে।

মিউজিক নিয়ে অতিরিক্ত ভালোবাসার কারনে শুধু বাংলাদেশেরই নয় দেশের বাইরের বিশেষ করে অঞ্জন দত্ত, হৈমন্তী শুক্লা, অনুপম রায় এবং বলিউডের গায়িকা অন্বেষাকে নিয়ে তৈরি করেছেন বিশেষ কিছু আয়োজন।

গণমাধ্যমে শিশু-কিশোরেরা, ভূত সমাজ বিলুপ্ত, ছোটগল্পসমগ্র, যুদ্ধ ৭১(প্রকাশিতব্য), সায়েন্স ফিকশন (প্রকাশিতব্য)। যুদ্ধ ৭১ বইটি মূলত দেশের সব জেলা থেকে সাধারণ মুক্তি যোদ্ধা অর্থাৎ যারা কোন খেতাব পাননি কিন্তু অসীম সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেছেন তাদের যুদ্ধকালীন গল্প দিয়ে সাজানো হয়েছে। প্রতিভাবান এই লেখক অভিনয় করেছেন সাদা কালো বাইস্কপ, রঙ্গিন বাইস্কপ-সহ ১০টির মতো টিভি নাটকে। নাটক লিখেছেন তিনটি। তারমধ্যে বর্তমানে শুটিং চলছে চিত্রনায়ক ফেরদৌসের প্রযোজনায় তারই লেখা টেলিফিল্ম `ধূম্রজাল`-এর। শান্ত বর্তমানে একুশে টিভির মুক্ত খবরে রিপোর্টার এবং প্রেজেন্টার থাকার পাশাপাশি আরজে হিসেবে কর্মরত আছেন এবিসি রেডিও ৮৯.২ এফএম-এ।

একনজরে শান্ত

পুরো নাম: মশিউর রহমান শান্ত।
ডাক নাম: শান্ত।
জন্ম তারিখ: ২৩ আগস্ট।
উচ্চতা: ৫`-১০"।
প্রিয় মানুষ: হুমায়ূন আহমেদ।
প্রিয় খাবার: প্রিয় কোনো খাবার নেই।
প্রিয় স্থান: নিজের কক্ষ। এবং সেখানে কারো ঢোকার অনুমতি নেই!
প্রিয় বই: পার্থিব, সাতকাহন, জোসনা ও জননীর গল্প।
প্রিয় মডেল: ইশিকা।
প্রিয় মুহূর্ত: অনএয়ারে থাকার সময়টা।
প্রিয় স্মৃতি: টিভির পর্দায় যখন প্রথমবার নিজেকে দেখেছিলেন।
প্রিয় কাজ: গিটার বাজানো।
প্রিয় শখ: গল্পের বই পড়া।

এইচএন/আরআই