প্রাচীন ঘটনার সময় জানবেন যেভাবে
আইরিশ পাদ্রী জেমস অ্যাশার বলেছিলেন, ‘আমাদের পৃথিবী নাকি খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০৪ সালের ২৩ অক্টোবর সকালবেলায় বানানো হয়েছিল।’ কিন্তু আমরা জানি, অ্যাশারের অনেক আগেই পৃথিবীর সূচনা। আর এমনটা জানা সম্ভব হয়েছে সময় বের করার পদ্ধতি আবিষ্কারের ফলে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন ১০ পদ্ধতি-
ভাষাগত সময়
ভাষাগত সময় নির্ধারণ পদ্ধতি হলো প্রাচীন কোনো লিপি বা দেয়ালে আঁকা কোনো চিত্র বা কোনো পাত্রে আঁকা ছবি দেখে তার সৃষ্টিকাল সম্পর্কে ধারণা লাভ করা। অনেক পুরনো নথিপত্র, প্রাচীন শিলালিপি দেখে এভাবেই তার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
গাছের চক্র
প্রতি বছর গাছের বাকল পাল্টে নতুন বাকল সৃষ্টি হয়। সেই সাথে গাছের কাঠের বৃদ্ধি হয়। গাছের বৃদ্ধির সাথে গাছের গোড়ায় একটি নতুন চক্রের সৃষ্টি হয়, যা গাছ কাটার পর দেখা যায়। গাছের সেই চক্র দেখে গাছের বয়স সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
মাটির পাত্রে সময়
প্রাচীনকাল থেকেই মাটির তৈরি শিল্পকর্মের চর্চা চলে আসছে। সে ধরনের প্রাচীন মাটির শিল্পের বয়স নির্ধারণ করা হত পাত্রে আঁকা ছবি অনুমান করে। যেমন ৮০০০ খ্রিষ্টপূর্বে সিরামিকের পাত্রে কালো মূর্তির ছবি আঁকা হত, লাল চিত্রপটে কালো মূর্তির প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা হত।
তাপ পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে প্রাচীন মৃৎশিল্প বা সিরামিকের জিনিসপত্র আলোর তাপ দিয়ে উত্তপ্ত করে তা থেকে নির্গত আলো পরিমাপ করে বয়স বের করা হয়।
ইএসআর পদ্ধতি
বৈজ্ঞানিক এ পদ্ধতির পুরো নাম ইলেকট্রন স্পিন রেসোনেন্স। বস্তুর ভেতর নিহীত শক্তি পরিমাপ করে বের করা বস্তুটি কত আগের। ফসিলের দাঁতের বয়স বের করতেই এটি বেশি কাজে আসে।
পুরনো পঞ্জিকা
বর্তমান সময় নির্ধারণ পদ্ধতি খুব বেশিদিন হয়নি আবিষ্কার হয়েছে। কিন্তু এর আগেও মানুষ তারিখ ও সময়ের ব্যবহার করত। তবে সেগুলো খুব অগোছালো আর ভুলে ভরা ছিল। একই সময়ে গ্রীক ও মিশরের দুই ধরনের কালপঞ্জি পাওয়া গেছে।
ক্রস-ডেটিং
প্রাগৈতিহাসিক কোন সভ্যতার বসতি থেকে খুঁজে পাওয়া কোনো বস্তু সামগ্রীর বয়সও ওই সভ্যতার সমসাময়িক হয়। এ পদ্ধতিতে কোনো কিছুর বয়স বের করার পদ্ধতিকে ক্রস-ডেটিং বলা হয়।
রেডিওকার্বন পরীক্ষা
কার্বনের নিউক্লিয়াসে থাকে ৬টি নিউট্রন। তবে অর্গানিক উপাদানে থাকে হাই এনার্জি কার্বন অণু। যাতে থাকে ৮টি নিউট্রন। প্রতি ৫,৭০০ বছর পর এই কার্বনের নিউট্রনের সংখ্যা অর্ধেক হতে থাকে। আর এ ভাবেই পুরনো কোনো ফসিলের কার্বনে নিউট্রন যাচাই করে বের করা যায় তার বয়স।
পটাসিয়াম-আর্গন পরীক্ষা
পটাসিয়াম-৪০ নামের তেজস্ক্রিয় কণাটি ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় আর্গন-৪০ এ পরিণত হয়। অনেকটা রেডিওকার্বন টেস্টের মত এই পরীক্ষা। তবে শুধু পাথরের বয়স নির্ণয় করার জন্য এই পরীক্ষা করা হয়।
স্তরবিন্যাস
স্তরবিন্যাসের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বিষয়ক সময় বের করা হয়। যেমন ইনকা সভ্যতার বাসস্থলে গিয়ে সে স্থানের মাটি, স্তর ও অবস্থান ইত্যাদি দেখে সেখানকার আনুমানিক বয়স জানা যায়।
সূত্র: লিস্টভার্স ডটকম
এসইউ/পিআর