শরতের সৌন্দর্যে বিমোহিত আমরা
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ণনা করা বা এর চিত্র তুলে ধরা একটি কঠিনতর বিষয়। কেননা আমাদের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এ দেশটিকে সৃষ্টিকর্তা নিজ হাতে সাঁজিয়েছেন। কবি-সাহিত্যিকেরা তাদের লেখনিতে বাংলার প্রকৃতির বন্দনা করেছেন। সৌন্দর্যের আধার আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বছরের একেক সময়ে একেক রূপে আমাদের সামনে হাজির হয়ে থাকে।
আমাদের দেশটি অপরূপ সৌন্দর্যে শোভিত। ঋতুবৈচিত্র্যের এদেশে ঋতুবিশেষ প্রকৃতি নবরূপে আমাদেরকে তার সৌন্দর্য উপহার দেয়। ঠিক তেমনি আমাদের মাঝে হাজির হয় শরৎ। শুভ্র মেঘের ভেলা, দিগন্ত বিস্তৃত আকাশে সাদা ও নীলের খেলা আমাদেরকে বিমোহিত করে। প্রকৃতির অভিনবত্ব দেখে মুগ্ধ হয়ে শরতকে কাছে পাবার তাড়না সবার মাঝে বিরাজ করে থাকে।
শরৎ এসেছে এমনটি জানতে কাশফুলই যথেষ্ট। কেননা শরৎ আর কাশফুল একই নদীর দু’টি ধারা। মানুষের মাঝে কাশফুলের সৌন্দর্য এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। কাশফুলের নরম স্পর্শ পাবার আকুলতা সে তো মানুষের এক সহজাত প্রবণতা।
শরতের দিগন্তজোড়া মাঠে সাদা কাশফুলের মাঝে হারিয়ে যেতে যেতে মনে প্রেম জাগ্রত হয়। ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে নীল আকাশের নিচে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের এক কোণে বসে চোখে চোখ রেখে নিজেকে খুঁজে পাবার আকুলতা একটি সহজাত প্রবৃত্তি। প্রেমের গহীন অরণ্যে হারিয়ে যেতে এমন পরিবেশের বিকল্প আর কি বা আছে। মূলত বাংলা সাহিত্যে এমন রস জোগাতে শরৎ ঋতু এক কিংবদন্তি।
তবে কংক্রিটের এ নগরে আমরা শুধু শরৎ নয় অন্য যেকোনো ঋতুর সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। নগর সভ্যতা আমাদের দিয়েছে বেগ আর কেড়ে নিয়েছে আবেগ। কিন্তু গ্রামবাংলায় আজও প্রকৃতি যেমন তার আপন সৌন্দর্যে মহিয়ান তেমনি শরৎ তার সৌন্দর্য আমাদের মাঝে বিলিয়ে দিতে অকৃপণ।
শরৎ তুমি আসবে আমাদের মাঝে- আসবে যুগে যুগে। তোমার সৌন্দর্যে বিমোহিত করবে আমাদের, বাংলার প্রকৃতি তোমার মাঝে পাবে সার্থকতা।
লেখক: শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
এসইউ/এবিএস