ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

মাত্র ১০ টাকায় বাঘ শিকার!

প্রকাশিত: ০৬:৩৯ এএম, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

‘মাত্র দশ টাকায় তিন গুলিতে বাঘ (টাইগার) শিকার করেন। আসেন মাত্র দশ টাকায় টাইগার জিতে নেয়ার সুযোগ নেন।’ বৃহস্পতিবার সকালে টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশদ্বারের অদূরে তিনটি শিশু এভাবে চিৎকার করে প্রাতঃভ্রমণ করতে আসা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল।

তিনজনের মধ্যে দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে। ওরা সম্পর্কে ভাইবোন। প্রত্যেকের বয়সের ব্যবধানে দুই তিন বছর হতে পারে।

কৌতুহলবশত সামনে এগিয়ে যেতে দেখা যায়, ওরা একটি ব্যাগ থেকে লাল রংয়ের স্কচটেপে মোড়ানো তিনটি টেনিস বল, এক থেকে দেড় ফুট আয়তনের একটি পাথরের টুকরা ও তিনটি কোমল পানীয়ের বোতল বের করে। শিশুদের দু’জন পাথরটা ধরে পাঁচ ছয় গজ দূরে নিয়ে মাটিতে রেখে পাথরটির ওপর কোমল পানীয় সাজিয়ে রাখলো।

Tiger
১০ টাকায় তিনগুলিতে বাঘ শিকারের বিষয়ে জানতে চাইলে শিশুদের একজন জানায়, পাথরের ওপর যে কোমল পানীয় সাজিয়ে রাখা হয়েছে সেই কোমল পানীয়গুলোতে তিনবার টেনিস বল ছুঁড়ে মাটিতে ফেলতে পারলে বিজয়ী হিসেবে একটি করে টাইগার নামক কোমল পানীয় দেয়া হবে। যিনি খেলাটি খেলবেন তাকে ১০ টাকা দিয়ে বলগুলো কিনতে হবে।

মোহাম্মদ আলিফ, আবদুর রাহিম ও শহিদা এই তিন শিশু সম্পর্কে ভাইবোন। বাবা নেই। মা কিডনির রোগী। দিনাজপুরে গ্রামের বাড়ি হলেও বর্তমানে তারা রাজধানীর হাজারীবাগে বসবাস করছেন। টাকার অভাবে ওরা স্কুলে যেতে পারে না, তবে সকলেই মাদ্রাসায় আরবি পড়ে। ছেলে দুটির পরনে পাঞ্জাবি ও পায়জামা ও মেয়েটির বোরখা টাইপের পোশাক দেখে বুঝা যায় ওরা মাদ্রাসায় যায়।

Tiger

শাহিদা নামের মেয়েটি জানায়, অভাবের সংসার। বাবা না থাকায় মা গার্মেন্টেসে চাকরি করে এতদিন সংসার চালাচ্ছিল। সম্প্রতি তাদের মায়ের কিডনিতে পাথর ধরা পড়ায় চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। মহল্লার একজনের পরামর্শে তিনটা বল ৬০ টাকা, তিনটা টাইগার কোমল পানীয় ৭৫ টাকা ও পাথরটা ৪৫ টাকায়সহ মোট ১৮০টাকা পুঁজি খাটিয়ে এই ব্যবসা শুরু করেছি।

ওরা জানাল, মোটামুটি ভালই ব্যবসা হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ১শ’ থেকে দেড়শ টাকা আয় হচ্ছে। ওই সময় এক তরুণ শাহিদার দিকে এগিয়ে এসে হাতে বল নিয়ে অদূরে কোমল পানীয়ের বোতল ছুড়ে ফেলতে চেষ্টা করে। দুটি বোতল পড়লেও একটি বোতল রয়ে যায়। ওই তরুণ পকেট থেকে ৫ টাকা বের করে দিলেও শিশুরা নিতে চায় না।

তারা বলেন, আংকেল বাঘ শিকার করবেন আর ১০টাকা দিবেন না এটা কী হয়। শিশুদের কথা শুনে তিনি পকেট থেকে ১০ টাকার নোট তুলে দেন শাহিদার হাতে।

এমইউ/এআরএস/এবিএস