খাসেরহাট সেতু যেন বিনোদনকেন্দ্র
ঈদের দীর্ঘ ছুটি। তবে বৈরি আবহাওয়া। এই রোদ এই বৃষ্টি। তাতে কী? আনন্দ তো আর থেমে থাকার নয়। খুব বেশি দূরে যেতে না পারলেও সদ্যনির্মিত সেতুুতেই যদি বিনোদন মেলে তবে ক্ষতি কী?
হ্যাঁ, এমনই এক বিনোদনকেন্দ্র চোখে পড়েছে এবার ঈদের ছুটিতে। মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের খাসেরহাট বন্দরের আড়িয়াল খাঁ সেতুই হয়ে উঠেছে বিনোদনকেন্দ্র। বিকেলে রোদের তাপ কমতে শুরু করলেই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষের ঢল নামে এই সেতুতে।
সেতুটি এখনো চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়নি। দু’পাড়ের সংযোগ সড়ক ও আলো স্থাপনের কাজ বাকি আছে। আর এ সুযোগে দু’পাড়ের মানুষের মিলনমেলায় মুখরিত হয়ে ওঠে দীর্ঘ এই সেতু। আশপাশের স্নানঘাটা, উত্তর উড়ারচর, আকাল বরিশ, পরিপত্তর, সমিতির হাট, এনায়েতনগর, কালকিনি, কুলপদ্দি, ভাটোবালি, আলিপুর, ছয়গাঁও, নাগেরপাড়া, ডামুড্যা, সাহেবরামপুর, গোপালপুর, সূর্যমনিসহ কয়েকটি এলাকার সহস্রাধিক মানুষের সমাগম হয় এখানে।
সেতুর উপর জনসমাগমকে কেন্দ্র করে ফুচকা, চটপটি, বাদাম, খেলনাসহ নানাবিধ ভ্রাম্যমাণ দোকান বসতে দেখা গেছে। এমন আনন্দঘন সময়কে স্মৃতিময় করে রাখতে সবাইকে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন মিলে সেলফি তুলতে দেখা গেছে। কেউ গলা ছেড়ে গাইছেন গান। এ যেন আরেক উৎসব। উৎসবপ্রিয় মানুষের হাসি-আনন্দে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।
চাঁদরাতে বন্ধুদের নিয়ে ফানুস উড়াতে আসা সাংবাদিক বাদল খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঈদ মানেই তো আনন্দ। অনেকদিন পর বন্ধুরা একত্রিত হয়েছি। সেতুটি সময় কাটানোর জন্য ভালো একটি স্পট। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম এখানে ফানুস উড়িয়ে দেশবাসীর জন্য শান্তি কামনা করবো।’
সস্ত্রীক ঘুরতে আসা সরকারি কর্মকর্তা মাসুদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসে দেখলাম প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আড্ডা জমে সেতুতে। এলাকার বিনোদনবঞ্চিত মানুষের একটু বিনোদনের ব্যবস্থা হলো যেন। তাই আমিও আমার স্ত্রীকে নিয়ে চলে এলাম আনন্দ করতে।’
পরিপত্তর এলাকার নাট্যকর্মী শামীম আল জাবের জাগো নিউজকে বলেন, ‘একটু আনন্দঘন মুহূর্ত কাটানোর জন্য এটি উত্তম স্থান। তবে এতো মানুষের সমাগম হওয়ায় বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা ঘটতে পারে। যেহেতু কাছেই খাসেরহাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্র; তাই নিরাপত্তার স্বার্থে একটু সতর্ক থাকা দরকার।’
আইনজীবী হাসান জাহিদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আনন্দ যেন কোনো দুর্ঘটনার জন্ম না দেয়, তার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত নজরদারি। শুধু ঈদই নয়। সেতুটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সবসময়ই দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকবে। তাই স্থানীয় প্রশাসনের সতর্ক দৃষ্টি কামনা করছি।’
এসইউ/পিআর