আকাশের চোখ রাঙানিকে ভয় করে না ক্ষুদে শিশুরা
হঠাৎ করেই কালো মেঘে ছেঁয়ে গেল আকাশ। সেই সঙ্গে তীব্র বেগে বইছিল বাতাস। প্রাইভেট কার, জিপ ও মাইক্রোবাসগুলো বাতাসের বিপরীতে সামনে এগুতে গিয়ে প্রতিহত হয়ে গতি কমাতে বাধ্য হলো। মোটরসাইকেল চালকরা স্ট্র্যার্ট বন্ধ করে নিরাপদে আশ্রয় নিলো। এই ছিল হাতিরঝিলের বুধবার বিকেলের চিত্র।
সাধারণ মানুষ ভয়ার্ত হয়ে নিরাপদে আশ্রয় নিলেও ব্যতিক্রম ছিল হাতিরঝিলের অকুতোভয় হৈ চৈ দল। আকাশ কালো করে মেঘ যখন চোখ রাঙাছিল তখন বার তেরজন শিশু এটুকু ভয় না পেয়ে হা-ডু-ডু খেলছিল।
ওদের একদলে রাজা নামে অপেক্ষাকৃত বড় সাইজের ছেলের সঙ্গে আরো দুই শিশুসহ মোট তিনজন অপর দলে থাকা আট-নয় জনের সাথে ওয়াকওয়ে সংলগ্ন ঘাসের ওপর হা-ডু-ডু খেলছিল।
রাজা নামের ছেলেটি যখনই দম নিয়ে অপরপক্ষের দিকে যাচ্ছিল তখন আট-নয়জন মিলে রাজাকে ধরে ফেললেও সে সবাইকে টেনে অন্যপাশে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় শিশুদের নির্মল হাসিতে চারদিক উদ্ভাসিত হয়। একজন আওয়াজ তুলে- চল, বিজ্রের ওপর কে আগে উঠতে পারে, এ কথা শুনতেই সকলে মিলে দেয় ভোঁ দৌড়।
নয়ন, জুম্মন, ফয়সাল, মুরাদ আবিদ, নাহিদ, শাহজাদও পিয়াল নামের শিশুরাতেজগাঁও শিল্প এলাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে। বিকেল হলেই ওরা ছুটে আসে হাতিরঝিলে। ওরা নিজেরাই দলের নাম দিয়েছে ‘হৈ চৈ’। ওরা কখনো ক্রিকেট, কখনো কানামাছি আবার কখনো হা-ডু-ডু খেলে। হাতিরঝিলের ওভারব্রিজ দিয়ে ওরা উত্তর দক্ষিণে দৌড়ে যায় আবার দৌড়ে ফিরে আসে।
এমন ঝড় বৃষ্টিতে ভয় করছে না এমন কথায় সবাই একসাথে হেসে উঠে বলে, আমরা এইসব ভয় পাই না। শাহজাদ নামের ছেলেটি বলে উঠে, মরণ তো আল্লাহ লেইখ্যাই রাখছে। এতো চিন্তা কইরা কি লাভ। চল আবার ব্রিজে উঠি বলে আবার দলবেঁধে ছুটে যায়।
এমইউ/এসএইচএস/এবিএস