ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

চেক ডিজঅনার

ভিন্ন আইনে মামলা করলে প্রতিকার সম্ভব?

অ্যাড. আমিনুল ইসলাম মল্লিক | প্রকাশিত: ১২:৩৮ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

আমরা অনেক সময় না বুঝে শর্তপূরণ না করে অথবা বিধি লঙ্ঘন করে চেক ডিজঅনারের মামলা দায়ের করে থাকি। চেক সংক্রান্ত সমস্যার যথাযথ প্রতিকার পেতে অবশ্যই The Negotiable Instruments Act 1881 আইনটি ফলো করতে হবে। অন্যথায় প্রতিকার পাওয়া তো দূরের কথা পরিশ্রমটাই পণ্ড হবে।

দীর্ঘদিন যাবত আর্থিক লেনদেন নগদ অর্থের পাশাপাশি ব্যাংক চেকের মাধ্যমে চলে আসছে। ১৮৮১ সনে চেক ডিজঅনার সংক্রান্ত আইনটি পাস হয়। চেক ডিজঅনার সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করার উদ্দেশ্যে ১৯৯৪ সালে আইনের প্রথম সংশোধনী আনা হয়।

কিন্তু সম্প্রতি ব্যবসায়িক লেনদেনের ক্ষেত্রে চেক ডিজঅনার এবং ব্যাংকে টাকা না রেখে যত্রতত্র চেক প্রদান করে প্রতারণা করার প্রবণতা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন বাস্তবতায় ২০০০ সালে ১৭ নং আইন দ্বারা চেক ডিজঅনারে কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য ১৩৮ ধারা সংযোজন করা হয়েছে।

১৩৮ ধারার অপরাধ প্রমান হলে চেকদাতার শাস্তি স্বরূপ প্রতারণার জন্য ১ বছরের কারাদণ্ড এবং বর্ণিত চেকে উল্লেখিত টাকার ৩ গুণ অর্থদণ্ড দিতে হবে। ২০০৬ সালে পুনরায় এ আইন সংশোধন করা হয়।

১৩৮ ধারার সাথে ১৩৮(ক) ধারা যুক্ত করা হয়। চেক ডিজঅনারের মামলায় সাজা হলে চেকে উল্লেখিত টাকার ৫০% অর্থাৎ অর্ধেক টাকা জমা দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে দায়রা জজ আদালতে আপিল করতে হবে।

যে ভুলের কারণে চেকের মামলা খারিজ হয়

মনে রাখা প্রয়োজন, কোম্পানি একটি আইনগত ব্যক্তি। ব্যক্তির মতো কোম্পানী স্বত্বেও অস্তিত্ব আছে। কোম্পানির নামীয় চেক ডিজঅনার হলে এ আইনের ১৩৮ ধারা মতে কোম্পানির স্বত্বাধিকারী অর্থাৎ চেকে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তি এবং ১৪০ ধারা মতে কোম্পানিকে নোটিশ দিয়ে উভয় ধারায় মামলা দায়ের করতে হয়।

আরও পড়ুন

আমাদের অনেক নবীন আইনজীবী বন্ধুরা কোম্পানির নামে চেক থাকা স্বত্ত্বেও কোম্পানিকে নোটিশ না দিয়ে এবং কোম্পানিকে আসামি না করে মামলা দায়ের করে থাকেন। এটি একটি মারাত্মক ভুল এবং এরূপ ভুলের কারণে মামলা খারিজ হয়।

যেসব ভিত্তির ওপর টিকে থাকে চেকের মামলা

মনে রাখা দরকার, চেক ডিজঅনারের মামলা বিশেষ কিছু নীতির ওপর নির্ভরশীল। চেকের মেয়াদ থাকে ৬ মাস। অর্থাৎ চেক প্রদানের পর ৬ মাসের মধ্যে চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপন করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই চেকে টাকা প্রদান করতে বাধ্য। চেক ডিজঅনারের মামলা করার আইনগত বিধান হলো ৬ মাসের মধ্যে চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপন করা হলে অপর্যাপ্ত স্থিতির (insuficient found) কারণে চেক ডিজঅনার হলে এর ৩০ দিনের মধ্যে নোটিশ দিয়ে এর ৩০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর মামলা করতে হয়।

ভিন্ন আইনে চেকের মামলায় প্রতিকার সম্ভব?

Stop paymet (চেকদাতার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পরিশোধে বাধা), Signature Differ (চেকদাতার সাক্ষরের সঙ্গে চেকের সাক্ষরের অমিল), Validity over (চেকের সময় অতিবাহিত) ইত্যাদির কারণে চেক ডিজঅনার হলে ১৩৮ ধারায় মামলা দায়ের করা যায় না। তাহলে উপায় কী? উপায় হচ্ছে, ভিন্ন আইনে মামলা করা। আর এই ভিন্ন আইনে মামলা করলে প্রতিকার জুটবে কতটুকু সেটিই আলোচ্য বিষয়।

আমরা অনেক সময় শর্তপূরণ না করে অথবা বিধি লঙ্ঘন করে চেক ডিজঅনারের মামলা দায়ের করে থাকি। চেক সংক্রান্ত সমস্যার যথাযথ প্রতিকার পেতে অবশ্যই The Negotiable Instruments Act 1881 আইনটি ফলো করতে হবে। এর বিকল্প নেই। তবে কিছুটা প্রতিকার পাওয়া যায়।

তাহলো এ ক্ষেত্রে লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০ ধারায় মামলা দায়ের করা যায়। এ মামলায় অর্থদণ্ডের কোনো বিধান নেই। কেবল physical punishment এর বিধান আছে। তাই দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০ ধারায় মামলা দায়ের প্রতিকার থেকে এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় মামলা করলে অধিকার প্রতিকার পাওয়া যায়।

এসইউ/এমএস

আরও পড়ুন