ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

সাপের চেয়ে বিষাক্ত প্রাণী আছে আপনার আশপাশেই

ফিচার ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২:৪৪ পিএম, ৩০ জুন ২০২৪

বিশ্বের প্রায় সব দেশেই রয়েছে নানা প্রজাতির সাপ। বর্তমানে আমাদের দেশে রাসেলস ভাইপারের প্রাদুর্ভাবে আতঙ্কিত সবাই। দেশের অনেক জেলায় এই সাপের কামড়ে মারা গেছেন অনেকে। তবে আমাদের দেশে শুধু রাসেলস ভাইপার নয়, আরও অনেক বিষধর সাপের বসবাস।

তবে জানেন কি, আপনার আশপাশেই সাপের চেয়ে বিষাক্ত প্রাণী আছে। যেগুলোর কামড়ে মানুষ প্রাণঘাতি হতে পারে। চলুন এমন কয়েকটি আপাত দৃষ্টিতে সাধারণ হলেও প্রাণঘাতি প্রাণী বা পতঙ্গের কথা জেনে নেওয়া যাক-

মশা

দেখতে ক্ষুদ্র এই পতঙ্গ কীভাবে মানুষের প্রাণনাশের কারণ হতে পারে তা হয়তো বুঝতেই পারছেন। প্রাণনাশের সংখ্যা বিবেচনায় মশা হিংস্র প্রাণীদেরকেও হার মানিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, ক্ষুদ্র এই প্রাণীটির কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে প্রতিবছর সাত লাখ ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গুতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, শুধু ২০২২ সালে বিশ্বের প্রায় ২৫ কোটি মানুষ মশাবাহিত ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হন, যাদের বড় অংশই আফ্রিকা অঞ্চলের। এদের মধ্যে প্রাণ হারান ছয় লাখেরও বেশি মানুষ।

অন্যদিকে, ২০২৩ সালে বিভিন্ন দেশে ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন, যাদের মধ্যে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। গত কয়েক দশকে বাংলাদেশেও বেশ কয়েকবার ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা গেছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে। সরকারি হিসাবে গত বছর সারা দেশে তিন লাখেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন, যাদের মধ্যে মৃত্যুবরণকারীর সংখ্যা দেড় হাজারেরও বেশি।

আরও পড়ুন

বৃশ্চিক

পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন এই বিষাক্ত প্রাণীটির কারণে সারা বিশ্বে প্রতিবছর গড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। ক্ষুদ্রাকার এই প্রাণীটির দৈহিক গঠন এবং হাঁটা-চলায় কাঁকড়ার সঙ্গে কিছুটা মিল রয়েছে বলে বাংলাদেশে এরা ‘কাঁকড়াবিছা’ নামেও বেশ পরিচিত। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার মরুভূমি অঞ্চলেই এদেরকে বেশি দেখা যায়। বৃশ্চিকের সাধারণত লেজের অংশে বিষ ধাকে। আক্রমণকালে এরা লেজ দিয়ে হুল ফোটায় এবং শিকারের শরীরে বিষ ঢেলে দেয়।

অ্যাসাসিন বাগ

এটি এক ধরনের পতঙ্গ, যেটি মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় বেশি দেখা যায়। দেখতে অনেকটা মশা-মাছির মতো এই প্রাণীকে কেউ কেউ ‘কিসিং বাগ’ নামেও ডেকে থাকেন। আকারে ছোট হলেও রক্তচোষা এই প্রাণীটি চাগাস রোগের জীবাণু ছড়ায়। চাগাস এমন একটি সংক্রামক রোগ, যাতে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যান।

অ্যাসাসিন বাগ সাধারণত ঘুমন্ত মানুষকে কামড়ায়। তখন মানুষের শরীরে ‘প্রোটোজোয়ান ট্রাইপানোসোমা ক্রুজি’ নামক একপ্রকার জীবাণু ঢুকে পড়ে। তবে এই রোগাক্রান্ত হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ বুঝতে পারে না। ফলে ধীরে ধীরে জীবাণু শরীরে ছড়াতে থাকে এবং এক পর্যায়ে আক্রান্ত মানুষটি মারা যায়। কামড়ানোর বাইরে অ্যাসাসিন বাগের মাধ্যমে সংক্রমিত খাবার খেলেও চাগাস রোগ হতে পারে।

হানি বি

হানি বি হচ্ছে সেসব মৌমাছি যেগুলোর চাক থেকে মধু সংগ্রহ করা হয়। পৃথিবীতে ২০ হাজার প্রজাতির মাছির মধ্যে মাত্র সাত প্রজাতির হানি বি বা মৌমাছি রয়েছে। এরা নিজেদের প্রতিরক্ষার্থে শত্রুকে কামড়াতে ওস্তাদ। যদিও এদের ক্ষুদ্র হুল দ্বারা নিঃসৃত সামান্য পরিমাণ বিষ খুব একটা ক্ষতিকর নয়, তথাপি অ্যালার্জির সমস্যা আছে এমন কোনো ব্যাক্তির মৌমাছির কামড়েও ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে অত্যাধিক কামড়ে! এক্ষেত্রে কামড়ের সংখ্যা এবং কতটুকু বিষ শরীরে প্রবেশ করে তার উপর নির্ভর করবে আক্রান্ত ব্যাক্তির অসুস্থতা। প্রাথমিকভাবে কামড়ের সঙ্গে সঙ্গে সে স্থানে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হবে। তবে ব্যথা অল্প সময়ের মধ্যে চলে গেলেও কামড়ের স্থানে ত্বক ফুলে ওঠে, লাল হয়ে যায়। অধিক সংখ্যক কামড় খেলে বমি বমি ভাব এবং জ্বর হতে পারে।

কুকুর

কুকুর মানুষের বিশ্বস্ত সঙ্গী। আমাদের বাড়ি পাহারা দিয়ে চোর ডাকাত দূরে রাখে। এছাড়াও কুকুরের বিশ্বস্ততা নিয়ে আছে অসংখ্য উদাহরণ। অথচ এই প্রাণীটির কামড়ে প্রতিবছর সারা বিশ্বে গড়ে ৫৯ হাজার জনের মতো মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। এক্ষেত্রে বেওয়ারিশ পাগলা কুকুরের পাশাপাশি বুনো কুকুর, এমনকি পোষা কুকুরও কামড় দিয়ে বসতে পারে। তেমনটি ঘটলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলে ব্যক্তির জলাতঙ্ক রোগ হতে পারে। ফলে এক পর্যায়ে তিনি মারা যেতে পারেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, কুকুরের মাধ্যমেই মানুষের শরীরে প্রধানত জলাতঙ্কের ভাইরাস সংক্রিত হয়ে থাকে। তবে কামড়ানো ছাড়াও আক্রান্ত কুকুরের শরীরের ক্ষতস্থান, লালা এবং নখের আঁচড়ের মাধ্যমেও মানুষের শরীরে জলাতঙ্কের জীবাণু প্রবেশ করতে পারে।

আরও পড়ুন

সূত্র: ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম

কেএসকে/এএসএম

আরও পড়ুন