ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

বিশ্বের ভয়ংকর ৩ পুতুল

ফিচার ডেস্ক | প্রকাশিত: ০১:২৫ পিএম, ০৮ জুন ২০২৪

ছোট্ট শিশুদের কাছে পুতুল সর্বক্ষণে সঙ্গী। ছেলে হোক কিংবা মেয়ে সবাই ছোটবেলায় কমবেশি পুতুল খেলেছেন। নানান আকারের পুতুল ছিল শৈশবের পরম বন্ধু। তবে কিছু পুতুল ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে ভয়ংকর হিসেবে। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর পুতুল অ্যানাবেলার কথা নিশ্চয়ই জানেন।

তবে অ্যানাবেলার চেয়েও ভয়ংকর আরও বেশ কয়েকটি পুতুলের কথা জানা গেছে বিভিন্ন সময়। যেগুলো এখনো রাখা আছে বিভিন্ন মিউজিয়ামে। চলুন এমন ৩ ভয়ংকর পুতুলের কথা জেনে নেওয়া যাক-

রবার্ট
১৯০০ সালের ঘটনা। আমেরিকার ইটন স্ট্রিট এলাকায় থাকত ওটো পরিবার। ওটো পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য ছিল ইউজিন রবার্ট ওটো। ইউজিনকে ভালোবেসে সবাই জিন বলে ডাকতেন। তাদের বাড়ির এক চাকর ইউজিনকে নিজের হাতে তৈরি করা একটি পুতুল উপহার দেন। সেই পুতুলের আকার জিনকেও ছাড়িয়ে যায়। পুতুলটি জিনের এতোই পছন্দ হয়েছিল যে, সে নিজের নামেই পুতুলের নাম রেখেছিল। জিন সেই পুতুলের নাম দিয়েছিল রবার্ট। জিনের সর্ব ক্ষণের সঙ্গী ছিল সে। পুতুলটির চেহারা একনজরে দেখে অদ্ভুত লাগলেও তার প্রতি জিনের ভালোবাসা দেখে বাড়ির কেউ এই বিষয়ে কিছু বলেননি।

তবে হঠাৎ এক রাতে ওটো পরিবারে অন্ধকার নেমে আসে। জিনের বয়স তখন ১০ বছর। গভীর রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় জিনের। ঘুম ভাঙতেই সে দেখে, রবার্ট তার বিছানার উপর বসে জিনের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রয়েছে। এই দৃশ্য দেখে জিন আঁতকে ওঠে। স্পষ্ট মনে আছে, ঘুমানোর আগে রবার্টকে বিছানায় নয়, অন্য জায়গায় রেখেছিল সে। তা হলে সে বিছানায় এলো কী করে? ভয়ে চিৎকার করে ওঠে ছোট জিন। চিৎকার করার পরেই ঘরের ভেতর শুরু হয় তুলকালাম কাণ্ড। ঘরের আসবাবপত্রগুলো নিজে থেকেই এ দিক-ও দিক সরে যেতে থাকে। ঘরের দরজাও যায় বন্ধ হয়ে।

আরও পড়ুন

ছেলের চিৎকার এবং আসবাবপত্র সরানোর আওয়াজ পেয়ে জিনের ঘরে ছুটে যান তার মা। তবে দরজা যে ভেতর থেকে বন্ধ। বহু ক্ষণ ধাক্কা দেওয়ার পর অবশেষে নিজে থেকেই ঘরের দরজা খুলে যায়। দরজা খুলতে ঘরের ভেতর ঢুকে জিনের মা দেখলেন, বিছানার এক কোণে জিন ভয়ে জবুথবু হয়ে বসে রয়েছে। ঘর অগোছালো এবং তার প্রিয় পুতুল রবার্ট খাটের পায়ার কাছে পড়ে রয়েছে। জিন তার মাকে জানায়, রবার্ট এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। কিন্তু ছেলের কথা বিশ্বাস করেননি বাড়ির কেউ। সবাই ভেবেছিলেন, নিজের দোষ ঢাকতে মিথ্যা গল্প বানিয়ে প্রত্যেককে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে জিন।

তবে সময় যত এগোতে থাকে, তারা বাড়িতে অন্য ব্যক্তির উপস্থিতি টের পেতে থাকেন। কখনো মনে হত, সিঁড়ি দিয়ে কেউ ক্রমাগত ওঠানামা করে চলেছে। এমনকি, ঘরে সবাই কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সময়েও তারা লক্ষ করতেন, কথার প্রসঙ্গ অনুযায়ী রবার্টের মুখভঙ্গি বদলে যেত। বাড়ির লোকেরা নাকি শুনতে পেতেন, জিনের ঘর থেকে দুই ধরনের আওয়াজ ভেসে আসছে। জিন কোনো প্রশ্ন করলে তার উত্তর ভিন্ন স্বরে ভেসে আসত। সবাই ভাবতেন, জিন নিজেই গলার স্বর বদলে খেলা করছে। পাড়া-প্রতিবেশীরাও জানিয়েছিলেন, তারা নাকি মাঝেমধ্যেই দেখতে পেতেন বাড়ির উপরের তলার ঘরের জানালা থেকে রাস্তার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে রবার্ট। মনের ভুল ভেবে এ সব এড়িয়ে গিয়েছিলেন ওটো পরিবারের সদস্যরা। জিন পড়াশোনা শেষ করে চাকরিও পেয়ে যান। স্ত্রী অ্যানকে নিয়ে অন্য বাড়িতে নতুন সংসার পাতেন তিনি।

ম্যান্ডি
ম্যান্ডি নামের একটি চীনামাটির পুতুল পৃথিবীর সবচাইতে ভয়ংকর পুতুল গুলোর মধ্যে একটি। ধারণা করা হয়, ১৯১০ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে জার্মানি কিংবা ইংল্যান্ডে তৈরি করা হয়েছিল ম্যান্ডি নামের এই পুতুলটা। দীর্ঘদিন ধরে ম্যান্ডি সংরক্ষিত ছিল এক নারীর কাছে, যিনি দাবি করতেন, পুতুলটার কান্না শুনতে পেতেন তিনি। বাড়ির বেসমেন্টে থাকত পুতুলটা। সেখান থেকেই আসত কান্নার শব্দ। পরবর্তী সময়ে ম্যান্ডিকে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কুইনেল মিউজিয়ামে দান করে দেন সেই নারী। কিন্তু মিউজিয়ামেও নানা রকম ঘটনা ঘটায় ম্যান্ডি। নিয়মিতভাবে হারাতে শুরু করে অনেকের খাবার, অন্যান্য জিনিসপত্র। কোত্থেকে যেন ভেসে আসে পায়ের শব্দ! মিউজিয়ামের কর্মচারীরা দাবি করেন, অন্য পুতুলদের খোঁজখবরও নিত ম্যান্ডি। মিউজিয়ামের বিভিন্ন পুতুলের কাচের ঘরে নক করতে অনেকেই দেখেছে ম্যান্ডিকে। অনেকে বলেন, পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় চোখটা যেন জ্বলে ওঠে ম্যান্ডির।

এই ভৌতিক পুতুলগুলোর সঙ্গেও কিন্তু ব্যবসা জড়িত। হরর সিনেমা আর মুখরোচক গল্পে আকৃষ্ট হয়ে অনেকেই এই পুতুলগুলোর রেপ্লিকা সংগ্রহ করতে চায়। বিভিন্ন অনলাইন সাইটগুলোতে বিক্রিও হয় ব্যাপক। হরর সিনেমায় ঘুরেফিরে এই পুতুলগুলোর আগমন প্রভাব ফেলে ক্রেতাদের মনে। কে জানে, হয়তো এ কারণেই এখনো ‘ভৌতিক’ উপাধি পেয়ে টিকে আছে এই পুতুলগুলো।

পেগি
জেন হ্যারিস, একজন অতিপ্রাকৃতিক বিষয়ক তদন্তকারী, পেগি নামক এই ভৌতিক পুতুলটির ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেন। সবচাইতে অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে এই পুতুলটি অন্যান্য অভিশপ্ত পুতুলের মত নয়। অন্যান্য পুতুলগুলোর ক্ষেত্রে দেখা যায় যেই জায়গায় পুতুলটি আছে তার আশেপাশে ভৌতিক ঘটনা গুলো ঘটে থাকে। কিন্তু পেগির প্রভাব কারো ওপর পড়ার জন্য তার ছবি বা ভিডিওই যথেষ্ট। প্রথম পেগির ছবি ও ভিডিও বের হওয়ার পর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৮০ জন মাথাব্যথা, অস্থিরতা এবং হ্যালুসিনেশন এর কথা বলেছেন। এমনকি একজন নারী পুতুলের ভিডিও দেখে হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন বলে দাবি করা হয়।

আরও পড়ুন

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

কেএসকে/এমএস

আরও পড়ুন