ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

গণহত্যা দিবস আজ

ফিচার ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০:০২ এএম, ২৫ মার্চ ২০২৪

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত, বাঙালি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ও নির্মম এক রাত। সে রাতের বীভৎসতা এতটাই নির্মম যে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধ্বংসযজ্ঞের অতীত সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে এটি হয়ে উঠেছে বিশ্বের ভয়ালতম গণহত্যার রাত। মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী ২৫ মার্চ। একে কালরাত্রি হিসেবে অভিহিত করা হয়।

প্রতিবছর এদিন পালন করা হয় গণহত্যা দিবস। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের সেনা অভিযানের সাংকেতিক নাম দিয়েছিল ‘অপারেশন সার্চলাইট’। সেদিন মধ্যরাতে ঢাকার পিলখানা, রাজারবাগ পুলিশলাইন, নীলক্ষেত এলাকায় নিরস্ত্র বাঙালির উপর আক্রমণ চালায় বর্বর হানাদার বাহিনী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। অন্যদিকে জহুরুল হক হলের প্রায় ২০০ জন ছাত্র ও রোকেয়া হলের ৩০০ জন ছাত্রীকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করে পাকবাহিনী।

‘অপারেশন সার্চ লাইট’-এর নামে নিরস্ত্র বাঙালির উপর নির্বিচারে বিশ্ব ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি সেনারা। তবে এ অভিযানটির পরিকল্পনা করা হয়েছিল তারও এক সপ্তাহ আগে, ১৮ মার্চ। কালো রাতে শুরু হওয়া পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা চলতে থাকে মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় ধরে। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ ও ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা লাভ করে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।

২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে নারকীয় গণহত্যা শুরু করে, তার প্রথম টার্গেট ছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইন। কিন্তু পুলিশের অকুতোভয় সদস্যরা রক্ত দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। স্বাধীনতাকামী সর্বস্তরের বাঙালির মতো পুলিশের মধ্যেও ভেতরে ভেতরে মানসিক প্রস্তুতি ছিল পাকিস্তানি আক্রমণ প্রতিরোধের। ফলে তারা শহরজুড়ে নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করতেন এবং তা পাঠাতে থাকেন রাজারবাগে। পাকিস্তানি বাহিনী ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেরোনোর খবরে পুলিশ লাইনসের সদস্যরা তাৎক্ষণিক সংগঠিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেন প্রতিরোধের। প্রায় চার ঘণ্টার প্রতিরোধ যুদ্ধে পুলিশের অর্ধশতাধিক সদস্য শহীদ হন। বন্দি হন প্রায় দেড়শ জন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযান শুরু করার পূর্বে সকল বিদেশি সাংবাদিকদের পূর্ব পাকিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। বাঙালিদের ওপর আক্রমণের পর গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এর মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয় এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।

পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী কর্তৃক অপারেশন সার্চলাইটে নিহত ও আক্রান্তদের স্মরণে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে ২৫শে মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। অন্তর্জাতিক ভাবে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এরই মধ্যে এই অপরাধযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জেনোসাইড ওয়াচ এবং লেমকিন ইন্সটিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন। এছাড়া সংস্থা দুটি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যাকে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য আহ্বান জানায়।

আরও পড়ুন

কেএসকে/জেআইএম

আরও পড়ুন